“মনোবিজ্ঞান কি ও এর প্রয়োজনীয়তা কি?”

আসস্লামুয়ালাইকুম সবাই কেমন আছেন? আশা করি প্রবিএ রমজান মাসে সবাই আল্লহর রহমতে ভাল আছেন। এটা আমার  প্রথম টিউন, ব্লগিং জগতে আমি সম্পূর্ণ নতুন যাত্রি অতএব ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

 

আজকে আমি “মনোবিজ্ঞান কি ও এর প্রয়োজনীয়তা” কি তার প্রাথমিক দিক গুলো আলোচনা করব, যেহেতু মন নিয়ে আলচনা সেহেতু মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ লিখা পরবেন আশা করি উপকৃত হবেন।

  • মনোবিজ্ঞান কি তা জানার আগে  আমরা চলুন মন সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেই।

 

১।মন (mind) : দর্শনশাস্ত্রের একটি অন্যতম কেন্দ্রীয় ধারণা। মন বলতে সাধারণভাবে বোঝায় যে, বুদ্ধি এবং বিবেকবোধের এক সমষ্টিগত রূপ যা চিন্তা,অনুভূতি,আবেগ,ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মন কি এবং কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে অনেক রকম তত্ত্ব প্রচলিত আছে। এসব তত্ত্ব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে মূলতঃ প্লেটো,অ্যারিস্টটল এবং অন্যান্য প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকদের সময়কাল থেকে।

জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন যে,মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোন কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে।

মন এর সঠিক সংজ্ঞা সম্ভব নয়। তবে এই ভাবে বলা যেতে পারে, মন হলো এমন কিছু যা নিজের অবস্থা এবং ক্রিয়াগুলি সম্পর্কে সচেতন। মনের সরুপ লক্ষণ হলো চেতনা যার থেকে মনকে জড়ো থেকে আলাদা করা হয় (আমরা মানুষ, একমাত্র আমাদেরই মন রয়েছে। এই মনের রয়েছে কিছু বৈশিষ্ট্য, রয়েছে মনের রোগ এই নিয়ে পরবর্তী টিউনে আলোচনা করব_)

 

২।মনোবিজ্ঞান(Psychology) : হল মন,চিন্তা,আবেগ ও আচরণ সম্পর্কিত বিদ্যা ও অধ্যয়ন।মনোবিজ্ঞান মূলত মানুষের সাথে সম্পর্কিত তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। মনোবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণভাবে অধ্যয়ন করা কঠিন হওয়ার কারণে, মনোবিজ্ঞানীগণ প্রায়শই বিভিন্ন সময়ে এর বিভিন্ন অংশের দিকে নজর দেন। বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে মনোবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগসূত্র রয়েছে। এর কিছু ক্ষেত্র হল মেডিসিন, আচরণবিজ্ঞান,কম্পিউটার বিজ্ঞান, এবং ভাষাবিজ্ঞান।

 

৩। মনোবিজ্ঞান এর প্রয়োজনীয়তা :
মনোবিজ্ঞান, Psychology হচ্ছে মন, চিন্তা, আবেগ ও আচরণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞান প্রাচীনতম ও জীববিজ্ঞান। ফলিত বা ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক উভয় বিষয়েই মানসিক কর্মপ্রক্রিয়া এবং আচরণসমূহের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান বা গবেষণা সংক্রান্ত কাজ করে থাকে। যেমনঃ একজন অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানীর কাজ হল; ব্যক্তি কি ভাবে জীবনে দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে উঠবে বা ব্যক্তির নিজস্ব প্রকৃতির বিকাশ সাধনের জন্য কি কি বৈজ্ঞানিক পন্থা অবলম্বন বা অনুশীলন করে উন্নত জীবনযাপনের যোগ্য হয়ে উঠবে এই সব বিষয়ে সেবা দিতে সক্ষম, অথবা একজন শিক্ষা মনোবিজ্ঞানী একজন ভাল ছাত্র হয়ে উঠার যথাযথ পরামর্শ, অস্বাভাবিক মনোবিজ্ঞানী, অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়ার কৌশল ইত্যাদি।
মনোবিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্রে একজন প্রশিক্ষনার্থী বা গবেষককে একাধারে মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, চেতনা বিজ্ঞানী ও আচরণিক বিজ্ঞানী বলে অভিহিত করা যায়। মনোবিজ্ঞানী ব্যক্তির ব্যক্তিগত এবং সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে তাঁর মানসিক কর্মপ্রক্রিয়ার ভূমিকাকে বোঝার চেষ্টা করেন এবং এর পশ্চাতে যে চেতনাগত প্রক্রিয়া ও আচরণের মনস্তাত্ত্বিক, স্নায়ূবিক প্রক্রিয়ার অনুসন্ধান করে; সমস্যার সমাধান, প্রতিরোধ ও বিকাশ সাধনের দক্ষ কারিগর। অর্থাৎ মনোবিদ্যার কাজ হল; ব্যক্তি কি হতে চায় এই দৃষ্টকোন থেকে অনুসন্ধান না করে ব্যক্তি কি হতে পারে সে বিষয়ে সম্ভাব্য অনুশীলন, সম্ভাব্য বিকাশ বা বিবর্তন প্রক্রিয়ার দৃষ্টিকোন থেকে নির্ভর যুক্তিযুক্ত, বিকাশ সংক্রান্ত সমগ্র বিষয়াবলীর ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে একটি বৈজ্ঞানিক সমাধানে আসা।
তাই ব্যক্তি যখনই মনোবিদ্যার অর্থ ও গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হবে তখনই বুঝতে পারবে; মনোবিদ্যা হল; মানুষের প্রকৃত সম্ভাব্য বিবর্তন বা বিকাশের নিয়মাবলী এবং অনুশীলন।
প্রকৃতপক্ষে আমরা মানুষকে যেভাবে জানি; সেটি তার পরিপূর্ণ অবস্থা বা রূপ। কেননা সেটা একটা নির্ধারিত বয়স পর্যন্ত ব্যক্তিকে বিকশিত হতে সাহায্য করে অতঃপর তাকে আরো বিকাশের জন্য ছেড়ে দেয়, এরপর ব্যক্তি নিজের প্রচেষ্টা এবং কৌশল শেখার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার উন্নয়নের অনুশীলন করে হয় উন্নত জীবনযাপন করে অথবা অধঃপতিত(অপরপক্ক) হয়। এক্ষত্রে ব্যক্তির উন্নয়ন বলতে; ব্যক্তির মধ্যে অবস্থিত গুণাবলীর ও বিশিষ্টের বিকাশ বা উন্নয়নকে বোঝানো হয়েছে আর অধঃপতন হল; অপরিপক্ক, অনুন্নত ব্যক্তিত্ব, যারা নিজে থেকে বিকশিত হতে পারে না। অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষনের ভিত্তিতে বলা যায় ব্যক্তি জীবনের, তথা সমাজ জীবনের যে কোন সমস্যার বাস্তব সমাধান এবং অবস্থার উন্নয়ন সাধন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য;
১। নিয়মিত এবং নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বিষয় ভিত্তিক জ্ঞানার্জন করতে হয়। এর কিছু অংশ হল; ব্যক্তির নিজের প্রচেষ্টা এবং এধরণের কাজ যারা শুরু করেছেন বা ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট মাত্রায় উন্নয়ন করেছেন অথবা যারা এই পদ্ধতি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন তাঁদের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা ব্যতিক্রম ব্যক্তিত্ব ব্যতিত সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া অসম্ভব।
২। ব্যক্তি যে জ্ঞানার্জন করল অর্থাৎ ব্যক্তির অনুধাবন বা উপলব্ধি করতে হবে কি অর্থে, কোন পথে উন্নত মানুষ হওয়া সম্ভব? উন্নয়নের পথে কাজ করতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই কাজের প্রকৃতি ও উন্নয়নের কৌশলগুলো কোন উপায়ে বা কোন পথে পরিচালনা করতে হবে তা জানার পাশাপাশি অনুভব জরুরী। মানুষকে বুঝতে হবে; উন্নত মানুষ বা সফল ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্য অতীত জ্ঞানের উপলব্ধি অপরিহার্য।
৩। ব্যক্তিকে উপলব্ধি করতে হবে; সকল মানুষ উন্নতি করতে পারে না বা উন্নত ব্যক্তিত্ব হতে পারে না। অর্থাৎ ব্যক্তি উন্নয়নের জন্য ব্যক্তিকে সম্ভাব্য প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে টিকেথাকার জন্য মনোবিজ্ঞান অধ্যায়নের বিকল্প সত্যি নেই। কেননা বিকাশের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা এবং মানুষের গণবিবর্তন বা বিকাশ, উন্নত পরিবেশগত সামাজিক জীবনের ছোঁয়া ব্যতিত প্রায় অসম্ভব ঘটনা।
উপরোক্ত বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে এখন মনে প্রশ্ন আসা খুবই স্বাভাবিক যে; উন্নত মানুষ হওয়ার উপায় কি”?
প্রকৃতপক্ষে মানুষ নিজেই উন্নত ব্যক্তিত্ব হতে চায় না(ব্যক্তিক্রম ব্যতিত)। কেননা তাঁরা এ সম্পর্কে কিছুই জানে না, উন্নয়ন বলতে কি বোঝায়? ফলে উন্নয় ব্যক্তিত্ব হওয়ার ইচ্ছা বা প্রয়োজন এবং সুযোগগুলো গ্রহণ করার আগ্রহ বোধ করে না। উন্নত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা না থাকলে ব্যক্তি থাকে কর্ম উদ্দিপনাহীন। ব্যক্তি জীবনে আকাঙ্ক্ষার বীজ বপনের দায়িত্বের মধ্যে ব্যক্তি সচেতনতা, সমাজ ও রাষ্ট্রগত সমর্থন, সহযোগিতা ও প্রচারনার অপরিহার্য। পরিবেশগত সহযোগিতা না থাকলে উন্নত ব্যক্তিত্ব হয়ে গড়ে উঠার স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষা, দক্ষ হওয়ার, পরিপক্ক হওয়ার স্বপ্ন সৃষ্টি হতে পারে না। মনে রাখতে হবে ব্যক্তির জ্ঞান বা শিক্ষনের ধারণা ব্যতিত সুন্দর ও সৃষ্টিশীল কাজের প্রেরণা ব্যতিত উন্নত ব্যক্তিত্ব হওয়ার মত শক্তি সৃষ্টি হবে না। উন্নত ব্যক্তিত্ব হওয়ার পাশ্চাতে অনেক মানবিক গুণাবলী ও ধারাবাহিক অনুশীলনের শক্তি আর্জনের জন্য ইতিবাচক সামাজিক সচেতনতা এবং রাষ্ট্রের সার্বিক সহযোগিতা থাকা জরুরী। তাই বিবর্তন বা বিকাশের প্রকৃত শিক্ষক পরিবেশের জন্য ফলিত ও তাত্ত্বিক মনোবিজ্ঞানের চর্চা বা অনুশীলন বা পাঠ গ্রহণ অপরিহার্য।

……………………………………….ফেসবুকে আমি

 

 

 

Level 1

আমি সৈকত রাজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

প্রিয় সৈকত রাজ,

আমি টেকটিউনস কমিউনিটি ম্যানেজার, শোয়াইব,

টেকটিউনস থেকে আপনার সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করতে চাচ্ছি। টেকটিউনস থেকে আপনার সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করার জন্য http://techtun.es/2obSQxE লিংকটিতে ক্লিক করে আপনার সাথে যোগাযোগের প্রয়োজনীয় তথ্য সাবমিট করে আমাদের সাহায্য করবেন আশা করছি।

ছদ্ম ছবি, নাম, ইমেইল, ফোন, ঠিকানা ও সৌশল Contact পরিহার করে আপনার প্রকৃত/আসল ছবি, নাম, ইমেইল, ফোন, ঠিকানা ও সৌশল Contact দিন। যেহেতু টেকটিউনস থেকে আপনার সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করা হবে।

সাবমিট করার পর আমাদের এই ম্যাসেজের রিপ্লাই আপনার কাছ থেকে আশা করছি।

বিশেষ নোট: আপনি যদি পূর্বে আমাদের এই ম্যাসেজ পেয়ে ফর্মটি সাবমিট করে থাকেন তবে আর পুনরায় সাবমিট করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি আপনি এখনও আমাদের এই ফর্মটি পেয়ে সাবমিট করে না থাকেন তবে অবশ্যই এখনই সাবমিট করুন এবং সাবমিট করার পর অবশ্যই আমাদের এই ম্যাসেজের রিপ্লাই দিন।

ধন্যবাদ আপনাকে।