আশাকরি সবাই ভাল আছেন। ভাল থাকুন সব সময় এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আর ভাল রাখার জন্যই আমি চেষ্টা করি সব সময় ভাল কিছু টিউন উপহার দেয়ার। জানিনা আপনাদের ভাল লাগে কি না। যদি ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই জানাবেন। আর খারাপ লাগলে সেটাও জানাবেন। কারণ আপনার একটি ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে।
আজ আপনাদের সাথে জনপ্রিয় কিবোর্ডগুলোর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরবো যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আসলে আপনার জন্য কোন কিবোর্ড ব্যবহার করা সুবিধাজনক। আসলে এত ধরনের কিবোর্ড তৈরি করার কোনো দরকারই ছিল না যদি আমাদের এগুলো প্রয়োজন না হত বা কাজে না লাগতো। আজ বুঝতে পারবেন কোন কিবোর্ড কোন কাজের জন্য ভাল। অনেক ধরনের কীবোর্ড আছে। আর কীবোর্ডের শ্রেনী বিভাগ হয়ে থাকে মূলত কিবোর্ডের কি আর সার্ফেজ এর উপর ভিত্তি করে। চলুন আগে বিভিন্ন প্রকার কীবোর্ডের নাম জেনে নিই।
সব ধরনের কীবোর্ড নিয়ে তো আর এই অল্প সময়ে কথা বলা সম্ভব না। তাই যেই কীবোর্ডগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ঐগুলি নিয়েই একটু আলোচনা করবো। আর কাদের জন্য কোন কীবোর্ড প্রযোজ্য সেটা নিয়েও একটু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তো চলুন বিভিন্ন প্রকার জনপ্রিয় কীবোর্ড এর গঠন বা কিভাবে কাজ করে তা একটু জেনে নিই
এটি প্লাস্টিক অথবা রাবারের স্যান্ডউইচ আকৃতিত তিনটি স্তর দারা গঠিত। উপরের স্তরে কন্ডাকটিং শীট থাকে যা প্রতিটি সুচের জন্য একটি সারি বহন করে। মাঝখানের স্তরে একটা গর্ত থাকে যা সুইচটিকেউপরে নিচে উঠা নামা করতে সহযোগিতা করে। নিচের স্তরের কন্ডাকটিং লাইনটি প্রতিটি সুইচের জন্য একটি কলাম বহন করে। প্রতিটি লাইনের সিলভার ধাতুর প্রলেপ থাকে। যখন একটি কী চাপ দেয়া হয়, তখন কনডাক্টিং সারি লাইনটি গর্তের ভিতর দিয়ে কন্ডাক্টিং কলাম লাইনের সাথে সংযুক্ত হয়। ফলে কি প্রসেসিং সিগন্যাল উৎপন্ন হয়।
আর এই সিগ্ন্যাল থেকেই কী ডিটেক্ট করে কম্পিউটার এ টেক্সট উৎপন্ন হয়। মেমব্রেন কীবোর্ড বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে ফ্লাট প্যানেল আরেকটি হচ্ছে ফুল ট্রাভেল। ফ্ল্যাট প্যানেল মেমব্রেন কীবোর্ডগুলো ব্যবহার করা হয় মূলত মাইক্রোওয়েভ, ফটোকপিয়ার মেশিন এবং ছোট কাজে যেমন কফি ম্যাকার এর কাজে। এর আরেকটি প্রযুক্তি হচ্ছে ডোম সুইচ। এই সুইচ মূলত মেম্ব্রেন আর মেকানিক্যাল এর সমন্বয়ে গঠিত। এটা রাবার ডোম সুইচ ব্যবহার করে এটাকে বলা হয় পলিডোম।
মেকানিক্যাল কীবোর্ড এর ক্ষেত্রে যখন কি সুইচে চাপ দেয়া হয় তখন দুটি টুকরা একত্রে জোড়া লেগে যায়। প্রকৃত পক্ষে সুইচ এলিমেন্ট গুলো ফসফর ব্রোঞ্জ সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি এবং কনটাক্ট এরিয়াতে স্বর্ণের পাত সংযুক্ত এবং কী বাউন্সের প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য কী এর সাথে এক টুকরা ফোম লাগানো থাকে। বর্তমানে কিছু মেকানিক্যাল কীবোর্ড তৈরি করা হচ্ছে যার কীগুলো মোলডেড সিলিকন ডোম আকৃতির এবং ভেতরের দিকে ছোট একটি কন্ডাক্টিভ রাবার লাগানো থাকে। এটি মূলত বেস, স্প্রিং আর স্টেম এই তিনটি অংশের সমন্বয়ে গঠিত।
যখন কী প্রেস করা হয় তখন রাবার ফোমটি প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড এর উপর তৈরিকৃত দুটি ট্রেসিং লাইনকে শর্ট করে দেয়া হয়। ফলে কী প্রেসিং সিগন্যাল উৎপন্ন হয়। হাইয়ার কোয়ালিটি মেকানিক্যাল কী-সুইচের লাইফটাইম প্রায় এক মিলিয়ন কী স্ট্রোক এবং মোলডেড কী সুইচের লাইফটাইম প্রায় পঁচিশ মিলিয়ন কী স্ট্রোক। বুঝেন নি? মানে অতবার কী চাপার পর আপনার কীবোর্ড নষ্ট হতে পারে।
যদিও এর বিভিন্ন টেকনোলজি রয়েছে তবে আমরা এখানে মাত্র দুটি জনপ্রিয় টেকনোলজি নিয়ে কথা বলবো।
লেজার প্রজেকটশনঃ লেজার প্রজেকশন প্রিন্টারগুলো যেকোনো সমতল জায়গার উপর একটি পূর্ণ কীবোর্ডের রুপরেখা অংকন করে। এই কীবোর্ড লাইটের রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করে সিগ্ন্যাল প্রদান করে যখন কোনো কী তে প্রেস করা হয়। যদিও এটি অনেক আকর্ষনীয় কিন্তু এর স্পর্শকাতর প্রতিক্রিয়া এবং দূর্ঘটনাজনীত কি চাপের উচ্চহারের কারণে এটি তেমন কার্যকর না।
অপটিক্যালঃ প্রজেকশন কীবোর্ডের কিছু ব্যর্থতার কারণে পরবর্তীতে অপটিক্যাল প্রযুক্তি উজ্জ্বল লাইট ইমিটিং ডিভাইস নিয়ে আসে যা লেজারের মতই কাজ করে। কীপ্যাডের প্রতিটি পাশে ফটো সেন্সর সংযুক্ত ঠাকে যা সঠিক কী উৎপন্ন করে যা কোন লাইট টি ব্লক হল তার উপর ভিত্তি করে x, y অক্ষ আকারে পরিমাপ করে।
এই কীবোর্ড এ কোনো মেকানিক্যাল কন্টাক্ট থাকে না। এখানে সেমিকন্ডাক্টর ক্রিস্টালের মাধ্যমে বিপরীত দুই পার্শে একটি রেফারেন্স কারেন্ট প্রবাহিত হয়। যখন কি চাপা হয় তখন ম্যাগনেটিক ফিল্ড ফ্লাক্স লাইনগুলো লম্ব বরাবর অবস্থান করে। এই সামান্য ভোল্টেজকে amplify করে কী প্রেসিং সিগনাল উৎপন্ন করা হয়।
এর লাইফ টাইম প্রায় একশত মিলিয়ন কী সূত্রকের সমান.। যখন কি চাপা হয় তখন ম্যাগনেটিক ফিল্ড ফ্লাক্স লাইনগুলো লম্ব বরাবর অবস্থান করে। এই সামান্য ভোল্টেজকে অ্যামপ্লিফাই করে কী প্রেসিং সিগনাল উৎপন্ন করা হয়। এর লাইফ টাইম প্রায় একশত মিলিয়ন কী সূত্রকের সমান।
গেমারদের জন্য পরিষ্কারভাবে বলতে পারি আপনার মেকানিকেল কিবোর্ড চয়েজ করা উচিত। কারণ এর রয়েছে উচ্চমানের কাস্টমাইজেশন। আপনি যখন গেমস খেলবেন তখন এর বাটনগুলো আপনাকে আরও বেশি আনন্দ দিবে। এই কীবোর্ড আপনাকে ভুল করে অন্য কি তে চাপ দেয়া থেকে বিরত রাখবে। কারণ এর কী এর শক্ত অংশ আপনাকে সহজে আপনাকে ভুল করতে দিবে না। আপনি হাতে আংগুল ভুল বসত অন্য কি এর উপর সহজে যাবে না। তাই এই কিবোর্ড গেমারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আরও ভালভাবে গেমস খেলার জন্য অনেক টুলস আছে ঐগুলিও ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি অনিয়মিত ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনি মেমব্রেন কীবোর্ডই ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটা দামে সস্তা, ওজনে হাল্কা, অনেক টেকসই, আর যে কোনো পরিবেশেই ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি এই কিবোর্ড ব্যবহার করেন তাহলে কখনই ভাববেন না যে আপনার সিদ্ধান্তটি ভুল হয়েছে। কারণ বর্তমানে অধিকাংশ ব্যবহারকারীই এই কিবোর্ড ব্যবহার করছে। তাই ভাল মানের একটি মেম্ব্রেন কিবোর্ড কিনে নিন।
লেজার কীবোর্ড সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সহজে বহনীয়। যদি আপনি অনেক টাইপ করতে চান তবে এটি আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়। রোল আপ মেম্ব্রন কীবোর্ড তাদের পানি প্রতিরোধক প্রকৃতির হওয়ার কারণে অপেক্ষাকৃত বেশি জনপ্রিয়. কারণ এটা আপনার ব্যাগের কোনো কোণে গোল এবং ভাঁজ করে রাখতে পারেন। লেজার প্রজেকশন কীবোর্ডের তুলনায় এটি টাইপিংয়ের জন্য অনেক ভালো। এখন, আপনি যেটা বর্তমানে ব্যবহার করছেন এটি সেটার বিকল্প হতে পারে।
ভ্রমণকারীদের জন্য সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত হচ্ছে ল্যাপটপের কিবোর্ড ব্যবহার করা। তবে যদি কেউ চায় যে সে আলাদা কিবোর্ড ব্যবহার করবে তাহলে আমি বলবো মেমব্রেন কিবোর্ড ব্যবহার করুন। এটাই ভাল হবে আপনার জন্য। এটা মেকানিক্যাল কিবোর্ডের থেকে অনেক বেশি টেকসই যার ওজন মাত্র ৩পাউন্ড এর কাছাকাছি।
যে কেউ একদিনে হাজার হাজার কীস্ট্রোক ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু একজন রাইটার এর ক্ষেত্রে পরিস্কার করে কোনো উত্তর দেওয়া যাবে না। পরিশেষে সিদ্ধান্ত নিতে হলে আপনাকে বিষয়টি নিজেকে অনুভব করতে হবে। অনেকে বলে থাকে, মেকানিক্যাল কী-বোর্ড ব্যবহার ভালো, যদিও গেমিং এর ক্ষেত্রে শক্ত ব্যবহার করতে, নরম কী-বোর্ডের স্পর্শ প্রায়ই আঙুলের স্ট্রেইন কমিয়ে আনে। তাই লেখার গতি একটূ কমে যেতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনি মেকানিক্যাল কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন যদিও এটা একটু ব্যয়বহুল।
যার যদি আপনি মেমব্রেন কিবোর্ড ই ব্যবহার করতে চান। তাহলে আমি আপনাকে ডোম অথবা scissor সুইচ ভার্সনের কী-বোর্ড নিতে পারেন। আজকের মত এই পর্যন্তই থেমে গেলাম। ইনশাআল্লাহ, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন।
আল্লাহ হাফিজ।
আমি মোঃ আশিকুর রহমান সরল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 83 টি টিউন ও 102 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন প্রযুক্তি প্রেমী।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি।পৃথিবীকে নতুন কিছু করে দেখাতে চাই। My Website