HDMI Port কি? বিস্তারিত জানুন ।

কম্পিউটারের এক্সটারনাল ইন্টারফেস
হিসেবে ইউএসবি( USB) র নাম আমরা অনেকেই জানি। বেশ কয়েক বছর ধরে ইউএসবি খুব সাফল্যের সাথে এক্সটারনাল ইন্টারফেসের কাজ করে
আসছে। বর্তমানে কম্পিউটারের সাথে সম্পর্কিত যন্ত্রে ইউএসবি অপশন
থাকে। ইউএসবির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এর নতুন নতুন সংস্করণ তৈরি হচ্ছে। তারপরও হাই ডেফিনিশন ভিডিও, বেশি মেগাপিক্সেলের
ক্যামেরার ছবি, ক্যামকর্ডারে ধারণ
করা ভিডিও কিংবা ব্লুরে প্লেয়ারের
গেম ইউএসবি দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে নতুন ইন্টারফেস তৈরির প্রয়োজন দেখা দেয়। ২০০০ সালের শেষের দিকে হিটাচি, প্যানাসনিক, ফিলিপস, সনি র মতো বড় ছয়টি প্রতিষ্ঠান মিলে এইচডিএমআই (HDMI) নামের নতুন একটি ইন্টারফেস তৈরির উদ্যোগ নেয়। তখন মূলত এইচডিএমআই তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল অডিও/
ভিডিওকে কমপ্রেস না করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণ বা গ্রহণ করা। যেহেতু কম্পিউটারে VGA পোর্টে যে ভিডিও সিগন্যাল পাওয়া যেত, তা ছিল এনালগ। ফলে ডিভিডি, সিডিরম কিংবা গেমিং ডিভাইস থেকে পাওয়া অডিও/ভিডিও ডিজিটাল সিগন্যালকে ডিজিটাল টু এনালগ কনভার্টার দিয়ে এনালগ সিগন্যালে পরিণত করে মনিটর ও স্পিকারে দেয়া হতো। আর এ পরিবর্তনের ফলে আসল ভিডিও এবং অডিওর যে মান তা বজায় থাকত না। বিশেষ করে বেশি রেজ্যুলেশনের ভিডিও ও বেশি ব্যান্ডের অডিওর ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরও প্রবল আকার ধারণ করে। অন্যদিকে VGA-র রেজ্যুলেশন (৬৪০X৪৮০) কম থাকায় হাই রেজ্যুলেশনের (৩৮৪X২১৬০) ভিডিও
উপভোগ করা যেত না। অন্যদিকে এসব হাই রেজ্যুলেশনের ভিডিও ডি/এ (ডিজিটাল টু এনালগ) কনভার্টের সময় লেগে যেত বেশি। বাস্তবতা এমন ছিল মনিটরে যে ভিডিও দেখা যাচ্ছে, তার সাথে বলা কথা মিলছে না। মূলত এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তৈরি করা হয় HDMI.

HDMI-র পুরো অর্থ হাই ডেফিনিশন মাল্টিমিডিয়া ইন্টারফেস ( High Defination Multimedia Interface) ২০০২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এর মোট সাতটি সংস্করণ বের হয়েছে। তবে সর্বশেষ ১.৪ সংস্করণে বেশ কিছু বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে এটি আগের সংস্করণগুলো থেকে আরও অনেক দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে। HDMI-র যোগাযোগ স্থাপনের কাজ তিন ভাগে বিভক্ত :

☼ 1. ডিডিসি – DDC : ডিসপ্লে ডাটা
চ্যানেল

☼ 2. টিএমডিএম – TMDM :
ট্রান্সমিশন মিনিমাইজড
ডিফারেন্সিয়াল সিগন্যাল

☼ 3. সিইসি – CEC :
কনজিউমার
ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল।

যখন কোনো যন্ত্র এইচডিএমআই
পোর্টে যুক্ত করা হয়, তখন ডিডিসি সেই যন্ত্রের অডিও-ভিডিও স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে জেনে নেয়। এরপর ওই যন্ত্রের সর্বোচ্চ ভিডিও রেজ্যুলেশনে ভিডিও ডিসপ্লে করে। পাশাপাশি অডিও চ্যানেলের ও ব্যান্ডের ওপর ভিত্তি করে অডিও পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় , আপনার কমপিউটারে একটি এইচডি মুভি আছে সেটি হাই ডেফিনিশন টিভিতে দেখতে চাচ্ছেন। এখন যদি টিভির রেজ্যুলেশন ৩৮৪০X২১৬০ এবং ৪০৯৬X২১৬০ হয়, তবে ৪০৯৬X২১৬০ রেজ্যুলেশনে ছবিটি প্রদর্শিত হবে। উল্লেখ্য, হাই রেজ্যুলেশনের ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত তিনটি রেজ্যুলেশন নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার আপনার টিভিতে যদি অডিওর আটটি চ্যানেল থাকে তবে আট চ্যানেলেই অডিওটি চলবে।

ডিডিসির অপর একটি কাজ হলো এইচডিসিপি (হাই ব্যান্ডউইডথ
ডিজিটাল কনটেন্ট) চেক করা। কোনো
প্রোগ্রাম অবৈধভাবে কপি করা কি না,
তা নির্ধারণ করে এইচডিসিপি। টিএমডিএসের কাজ হলো অডিও- ভিডিও ডাটা পাঠানো ও গ্রহণ করা। এ ডাটা পাঠানো ও গ্রহণের সময় এইচডিসিপি ডাটাকে অ্যানক্রিপ্ট করে এ ডাটার সাথে মেটাডাটা যুক্ত করে। এ মেটাডাটার মধ্যে সব ভিডিওর কোডকে সংক্ষেপে রাখা ছাড়াও ভিডিওর রেজ্যুলেশন, ভিডিওর সাইজ ইত্যাদি রাখা থাকে। এর ভেতর এক ধরনের সিকিউরিটি কোডও বসানো থাকে। ফলে অবৈধভাবে ভিডিওটি কেউ কপি করলে তা ধরা পড়ে। টিএমডিএস প্রতি সেকেন্ডে ৪.৯ গি.বা. গতিতে ভিডিও ডাটা এবং একই সাথে আট চ্যানেলের অডিও ডাটা দেয়া-নেয়া করতে পারে। আর এটি আনকমপ্রেসড পিসিএম ফরমেটের অডিও সাপোর্ট করায় অডিও কমপ্রেশনের কোনো ঝামেলা থাকে না। পাশাপাশি অডিও কমপ্রেশনের জন্য কোনো প্লাগইন/প্রসেসরের প্রয়োজন হয় না। যেহেতু
অডিও ও ভিডিওর কম্প্রেস ও
ডিকম্প্রেস হয় না, তাই অডিও-ভিডিওর আসল মান অক্ষত থাকে। আর
১.৪ সংস্করণ একত্রে আটটি চ্যানেল সাপোর্ট করায় ১৬, ২০, ২৪ বিটরেটে ৩২, ৪৪.১, ৪৮, ৮৮.২, ৯৬ ও ১৭৬.৪ কিলোহার্টজে শব্দ ধারণ করা যায়। এ কারণেই থ্রিডি মুভি বা এইচডি মুভিতে আমরা এত শ্রুতিমধুর শব্দ শুনতে পাই। আর ইউএসবি ৩.০-এর ডাটা ট্রান্সফারেট বেশি বলে এটি ইউএসবির চেয়ে বেশি গতিতে কাজ করতে পারে।

এইচডিএমআই ১.৪ সংস্করণে নতুন করে যুক্ত হয়েছে 3D সাপোর্ট। ফলে ২টি ১০৮০ পিক্সেলের এইচডি কোয়ালিটির ভিডিও একই সাথে একটি পোর্ট ব্যবহার করে দেয়া-নেয়া করা যায়। এতে যুক্ত হয়েছে থ্রিডি স্ট্রাকচার ডিফাইন টেকনোলজি। আগে এক কোম্পানির তৈরি করা ব্লুরে প্লেয়ার দিয়ে অন্য কোম্পানির ব্লুরে ডিস্ক চালানো যেত না। কিন্তু থ্রিডি স্ট্রাকচার ডিফাইন প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় এখন এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। থ্রিডি স্ট্রাকচার
ডিফাইন ডিস্কে থাকা ভিডিওর মেটাডাটা থেকে ভিডিও সম্পর্কে সব তথ্য জেনে সেই অনুযায়ী রেজ্যুলেশন ও অডিওর সিগন্যাল নির্ধারণ করে টিএমডিএসের কাছে ভিডিও পাঠানো ও গ্রহণ করে। এর এডিআইডি (এক্সটেনডেড ডিসপ্লে আইডেন্টিফিকেশন) অত্যন্ত শক্তিশালী। যার কাজ হলো ডিসপ্লে ডিভাইসের থ্রিডি ধারণক্ষমতা নির্ণয় করা এবং ডিসপ্লের সাপোর্টেড রেজ্যুলেশন অনুযায়ী ভিডিও পাঠানো। ফলে ভিডিও প্রসেস করতে গ্রাফিক্স কার্ড/ডিসপ্লে ডিভাইসের কোনো সময় নষ্ট হয় না এবং ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন ম্যানুয়ালি
ঠিক করতে হয় না। ১.৪ সংস্করণ ৪০৯৬X২১৬০ রেজ্যুলেশনে ২৪ ফ্রেম/সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ১০.২ গি.বা./ সেকেন্ড গতিতে ভিডিও প্রদর্শন করতে পারে। আর এ সংস্করণে যুক্ত হয়েছে SYCC601, AdobeRGB, AdobeYCC601। ফলে ডিজিটাল ক্যামেরা/ক্যামকর্ডারে ধারণ করা এইচডি ভিডিও বা ছবি সরাসরি প্রদর্শন করা ও ডাটা ট্রান্সফার করা অনেক দ্রুত হয়। এতে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে ১০০ এমবিপিএস/সেকেন্ড ইথারনেট। এর মাধ্যমে যেকোনো ইথারনেটে সংযুক্ত হওয়া যায়। ১.৩ সংস্করণে এসব সুবিধা ছিল না। আর ১.৩ সংস্করণে ব্যবহার হওয়া ক্যাবল দিয়ে সব সুযোগ পাওয়া গেলেও ইথারনেট সুবিধা পাওয়া যাবে না।

এইচডিএমআই পোর্টে সর্বমোট ১৯টি পিন থাকে। আগের সংস্করণ পর্যন্ত পিনগুলো শিল্ডেড ছিল না। ফলে কিছু নয়েজের সমস্যা ছিল। কিন্তু ১.৪ সংস্করণে পিনগুলোকে অন্য পিন
থেকে শিল্ডেড করা হয়েছে। এইচডিএমআই পুরোপুরি DVI (ডিজিটাল ভিজ্যুয়াল ইন্টারফেস) পোর্ট কম্প্যাটিবল। ফলে কোনো সিগন্যাল কনভার্টের দরকার হয় না।

টিউনটি পূর্বে আমার ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত ।

Level 2

আমি জুবায়ের আহমদ শাকিল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 221 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

প্রিয় টিউনার,

আপনার টিউনটির লেখা গুলো হুবহু পূর্বে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত। লেখা গুলো নিজ থেকে নয় বরং এক বা একাধিক লেখকের নিজেস্ব লেখা অংশিক ও সম্পূর্ণ কপি করে টিউনটি করা হয়েছে বলে চিহ্নিত হয়েছে।

টিউনটির বিভিন্ন অংশের লেখা গুলো উৎস থেকে হুবহু আংশিক ও সম্পূর্ণ কপি কপি করে টিউনটি তৈরি করা হয়েছে বলে বলে চিহ্নিত হয়েছে।

টেকটিউনস নীতিমালা ১.০৮ অনুযায়ী – নিজের লেখা নয় এরকম, অন্য কোন ব্লগ থেকে বা অন্য ব্লগারের বা অন্যের লেখা বা অন্য কোন উৎস থেকে হুবহু বা আংশিক কপি পেস্ট করে বা নিজের নামে টিউন করা যাবে না। প্লেইজারিজম থেকে সর্বদা বিরত থাকুন।

টেকটিউনসের মান, ধারা ও নিজেস্বতার জন্য প্লেইজারিজম ও কপি টিউন সম্পূর্ণ টেকটিউনসের নীতিমালাবিরোধী। নিজের লেখা নয় এরকম, এক বা একাধিক অন্য কোন ব্লগ থেকে বা অন্য ব্লগারের বা অন্যের লেখা বা অন্য কোন উৎস থেকে লেখা সংগ্রহ করে বা কপি পেস্ট করে নিজের নামে টিউন করা আপনার মৌলিক ও সৃজনশিলতা কে ব্যহত করে এবং টেকটিউসে তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

টেকটিউনসে শুধুমাত্র মৌলিক টিউন স্থায়ী হয়। অন্য যে কোন অনলাইন বা অফলাইন মাধ্যম থেকে টিউনে কোন প্রকার কপিপেস্ট কন্টেন্ট যুক্ত করলে বা পুরো টিউনে কপিপেস্ট করলে তা টেকটিউনসে স্থায়ী হয় না এবং বারংবার একই আচরনের জন্য টিউনারশীপ বাতিল করা হয়।

উল্লেখিত টিউনটির সমস্ত লেখা যদি আপনার নিজেস্ব হয়ে থাকে শুধু মাত্র সেক্ষেত্রে প্রকৃত লেখার লেখক হিসেবে আপনি টেকটিউনসে তা প্রকাশ করতে পারবেন। আপনি যে উৎস থেকে লেখা কপি করছেন সে উৎসের প্রকৃত ও মূল লেখক যদি আপনি হোন তবে আমাদের এই টিউমেন্টের রিপ্লাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করুন।

মূল উৎসের প্রকৃত লেখক না হলে এবং এই টিউমেন্টের রিপ্লাইয়ের মাধ্যমে আমাদের নিশ্চিত না করলে প্লেইজারিজম এর দায়ে কপি করা আপনার সমস্ত টিউন স্থগিত করা হবে এবং প্রয়োজনে টিউনারশীপ বাতিল করা হবে।

পরবর্তিতে যে কোন ধরনের কপি পেস্ট ও প্লেইজারিজম টিউন করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।

টেকটিউনস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার একটি উন্মুক্ত কমিউনিটি। তাই কমিউনিটির সদস্য হিসেবে টেকটিউনস কমিউনিটিতে আপনার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চিন্তার মৌলিক প্রয়োগ ঘটান। সৃজনশীল বিষয় ও আপনার প্রযুক্তি অভিজ্ঞার প্রকাশ ঘটান। আপনার বাস্তব জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভিন্ন প্রয়োগ যা আপনি নিজে অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন তা কমিউনিটির সদস্যদের সাথে নিজের ভাষায় শেয়ার করুন।

টেকটিউনস সবসময় মান সম্মত ও মৌলিক টিউন করতে টিউনারদের প্রণোদণা দেয়।

    @টেকটিউনস
    টিউনারের নাম ও পোষ্ট লিংক যুক্ত করা হয়েছে । ধন্যবাদ এ ব্যাপারে সতর্ক করার জন্য ।