গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ৪টি বিষয়ে নজর দিন (শেষ পর্ব)

গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন, স্বপ্ন অনলাইনে ভাল ক্যারিয়ার গড়বেন। অনেক আয় করবেন। যেহেতু ইনকাম হবে অনেক, সেজন্য শিখতে গিয়ে ইনভেস্টও করলেন প্রচুর। কারন ভাল কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখতে হলে খরচটাও বড় পরিমানে করতে হয়। কাজ শিখলেই কি আপনার জন্য আয় নিশ্চিত হয়ে গেল?

Graphic-Designer2

 গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ৪টি বিষয়ে নজর দিতে হবে।

১। অভিজ্ঞ কোন ব্যাক্তি কিংবা অভিজ্ঞ কোন প্রতিষ্ঠান হতে গ্রাফিকস প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

২। আপনার কাজের মানের (ক্রিয়েটিভিটি) উন্নতি

৩। ডিজাইনার হিসেবে ভাল মানের পোর্টফলিও।

৪। ডিজাইনার হিসেবে নিজের পরিচিতি (ব্রান্ড) তৈরি।

প্রথম পর্বের পোস্টে ‍উপরের ৩টি বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি।

১ম পর্বের লিংকঃ

গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ৪টি বিষয়ে নজর দিন (১ম পর্ব)

৪নং বিষয়টি এবং মার্কেটপ্লেস ছাড়া কাজ পাওয়ার এক সিক্রেট ও এক্সক্লুসিভ টিপস শেয়ার করার চেষ্টা করেছি আজকের পর্বটিতে। আশা করি কাজে লাগবে।

ডিজাইনার হিসেবে নিজের পরিচিতি (ব্রান্ড) তৈরিঃ

মনে রাখবেন, দীর্ঘসময় যদি সফলতার সাথে কাজ চালিয়ে যেতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিজের  ব্রান্ডিংয়ের কাজে নজর দিতে হবে। এ ব্রান্ডিংয়ের কাজটি ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই করা উচিত। কিভাবে করবেন সেটা জানতে পারবেন এখন।

Personal_Branding_Artwork

নিজের ব্রান্ডিংয়ের জন্য অনেক উপায় আছে। একদম সহজ কিছু পদ্ধতি বলব।

১। সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেকে ব্রান্ডিং:

বিশ্বের সবচাইতে বেশি মানুষের বিচরণ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে। সেজন্য ব্রান্ডিংয়ের কাজে এ রিলেটেড সাইটগুলোকে ব্যবহার করুন।

কয়েকটি সোশ্যালমিডিয়া সাইটগুলোতে নিজেদের উপস্থিত থাকতে হবে।

ফেসবুক

টুইটার

লিংকডিন

পিন্টারেস্ট

বিহেন্স

-   ড্রিবল

Personal-Branding

উপরের সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে আপনার উপস্থিতি থাকতে হবে। আর সেটা করার জন্য প্রোফাইলে গ্রাফিকস ডিজাইন হিসেবেই সকল তথ্য যোগ করবেন। টাইমলাইন ফটো দেখেও যাতে ডিজাইনার বোঝা যায়, আর নিয়মিত নিজের করা ডিজাইনগুলো এসব সাইটের নিজের ওয়্যালে এবং বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করবেন।

চেষ্টা করবেন নিয়মিত গ্রাফিকস সম্পর্কিত টিপস কিংবা নিজের করা ডিজাইন সবার সাথে শেয়ার করার জন্য। ডিজাইন সম্পর্কিত আলোচনা হয়, এ ধরনের কমপক্ষে ৫টি গ্রুপে নিজেকে যুক্ত রাখুন এবং সক্রিয় থাকুন। সেইসব গ্রুপে টিপস, ডিজাইন শেয়ার করেন, বিভিন্ন জনের প্রশ্নের উত্তরগুলো দেওয়া চেষ্টা করতে থাকেন। প্রতিদিনই কাজগুলো করেন। তাহলে দেখবেন ১মাস পরেই ডিজাইনার হিসেবে নিজের ব্রান্ডিং তৈরি হয়ে গেছে।

২। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ব্রান্ডিং:

সবার জন্য হয়ত বিষয়টি সহজনা। তারা হতাশ হওয়া কিছুইনাই। সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্রান্ডিং করার যে টিপস দিয়েছি শুধুমাত্র সেগুলো অনুসরণ করলেই নিজেদের ভাল ব্রান্ডিং হবে। আরও ভাল ফলাফল পেতে ব্লগিং করতে পারেন। জনপ্রিয় ৩টি ব্লগ সাইট বাছাই করুন। সেই সব ব্লগে মাসে অন্তত একটি ডিজাইন সম্পর্কিত আর্টিকেল পোস্ট করুন। এসব গেস্ট ব্লগিং সাইটে পোস্ট করার পাশাপাশি নিজের একটি পার্সোনাল ব্লগ তৈরি করুন এবং নিয়মিত সেখানে পোস্ট করুন। সেই পোস্টকে আবার সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে শেয়ার করুন। খুব দ্রুত ব্রান্ডিং হয়ে যাবে।

৩। ভিডিও মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ব্রান্ডিং:

ইউটিউবের সার্চকারীর সংখ্যাও কিন্তু কম না। প্রচুর সংখ্যক মানুষ নিয়মিত ভিডিও সার্চ করে। সেজন্য ইউটিউবে নিজের একটি চ্যানেল প্রস্তুত করে সেখানে বিভিন্ন সময় নিজের তৈরি করা ডিজাইন সম্পর্কিত ভিডিও, টিউটোরিয়াল আপলোড করুন। আবার সেই ভিডিওকে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে শেয়ার করুন।

উপরের তিনটি কাজ সঠিকভাবে করলে ১-২ মাসে নিজেকে ডিজাইনার হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি তৈরি করতে পারবেন। তবে এটি সবসময় চালিয়ে যেতে হবে। কখনই থামা যাবেনা।

এখন আপনার নিজের মধ্যে ডিজাইন আইডিয়া (ক্রিয়েটিভিটি) ভাল আছে, নিজের একটি পোর্টফলিও প্রস্তুত আছে, ডিজাইনার হিসেবে প্রচুর মানুষের কাছে নিজের একটি পরিচিতিও তৈরি হয়ে গেছে। ডিজাইনার হিসেবে ভালভাবে ইনকামও শুরু হওয়ার কথা। সুতরাং এবার আপনাকে রুখবে কে? সামনের দিকে এবার এগিয়ে যাওয়ার সময়।

এখন আপনি যদি ইচ্ছা করেন ওডেস্ক-ইল্যান্স থেকে বিড করে কাজ পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। ভয় নেই, এখন আর বিড করলে কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকবে। চেষ্টা করতে পারেন, fiverr , peopleperhour হতে কাজ পেতে। সেখানেও অবশ্যই সফল হবেন। যদি মনে হয়, এসব মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করবেননা, আগের ধাপগুলোতেই ভাল আয় আসা শুরু হয়েছে। আমার পরামর্শ হচ্ছে আগের ধাপগুলোতে যে কাজ পাবেন সেগুলোর পেমেন্ট সেসব ক্লায়েন্টকে অবশ্যই অবশ্যই ওডেস্ক কিংবা ইল্যান্সে এসে করতে বলবেন। এতে লংটাইম বেনিফিটেড হবেন আপনি নিজেই।

কাজ পাওয়ার জন্য সর্বশেষ এক্সক্লুসিভ টিপসঃ

আগে বলে নেই এ টিপসটি আমার না। এটা বাংলাদেশের সেরা এসইও এক্সপার্ট আসিফ আনোয়ার পথিক ভাইয়ের কাছ থেকে জেনেছি। অনেক সময়তো আমরা দেখি ফেসবুক কিংবা অন্য সোশ্যালসাইটগুলোতে, অনেকে ডিজাইনার চেয়ে স্ট্যাটাস দেয়। নিজের বন্ধুরা দিলে হয়ত চোখে পড়ে, তখন হয়ত গিয়ে নক করে কাজ চান। কেমন হবে, যদি এমন কোন টিপস দেই, যা দিয়ে যতজন এইটাইপ যে যত স্ট্যাটাস দিয়েছে সব আপনি খুব সহজে দেখতে পারবেন। দিচ্ছি দেখে নিন।

9

https://twitter.com/search?q=%22looking%20for%22%20OR%20%22searching%20for%22%20OR%20%22are%20seeking%22%20OR%20%22am%20seeking%22%20OR%20%22is%20seeking%22%20OR%20%22I%20need%22%20OR%20%22we%20need%22%20OR%20%22they%20need%22%20OR%20%22%20needs%22%20OR%20%22I%20want%22%20OR%20%22we%20want%22%20OR%20%22they%20want%22%20OR%20%22%20wants%22%20%22logo%20designer%22%20OR%20%22logo%20designed%22%20OR%20%22logo%20design%22&src=typd

শুধুমাত্র লিংকটিতে ক্লিক করুন। দেখা যাচ্ছে, টুইটার ব্যবহার করে যারা লোগো ডিজাইনার চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে, সব এখন আপনার চোখের সামনে।

এটা শুধু লোগো ডিজাইনের জন্য না, আপনি চাইলে “logo designer” OR “logo designed” OR “logo design” এর জায়গায় “wordpress developer” OR “wordpress guy” OR “wordpress expert” ও ব্যাবহার করে পিএইচপি ডেভেলপমেন্টের কাজ পেতে পারেন।

দীর্ঘ পোস্টটিতে চেষ্টা করেছি গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে সফল ক্যারিয়ার গড়ার টিপস বিস্তারিত ভাবে দেওয়ার জন্য্। কাজগুলো পালন করা খুব কষ্টকর না। শুধু দরকার সঠিক পরিকল্পনা। ৩মাসের পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ ঘন্টা সময় ব্যয় করুন। ক্যারিয়ারের ভাল একটি পযায়ে যাওয়ার জন্য এইটুকু কষ্ট করতেই হবে। শেষ করার আগে আবারও বলি ভাল ভাল ডিজাইনারদের ডিজাইনকে অনুসরণ করে নিজের ভিতর ক্রিয়েটিভিটি তৈরি করুন, অন্যের ভাল ভাল কাজে অ্যাপ্রিসিয়েট করুন, ভাল ডিজাইনার হিসেবে যত বেশি মানুষের কাছে সম্ভব নিজের একটি পরিচিতি তৈরি করুন।

ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে সহযোগিতার জন্য ক্রিয়েটিভ আইটির অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে এসে প্রশ্ন করতে পারেন।

ফেসবুক গ্রুপঃ facebook.com/groups/creativeit/

Level 0

আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 103 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস