ফ্রিল্যান্সিং থেকে কি আদৌও টাকা ইনকাম করা সম্ভব?

Level 4
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম, টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম। আশা করছি আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। হঠাৎ মনে হলো ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনাদের মাঝে কিছু বলা দরকার কারণ এই মুহূর্তে অনেক মানুষ ফেসবুকে এসে ফ্রিল্যান্সিং এর নামে ধোঁকা দেয়। আমি চাই আপনারা আপনাদের মতো করে শিখুন, এজন্যই আপনাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে। ওয়েট, ফ্রিল্যান্সিং করে কি আসলেই মাসে হাজার বা লক্ষ টাকা আয় করা যায়? আমরা প্রায়শই ফেসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করতে গিয়ে এমন সব বিজ্ঞাপণ দেখে থাকি “৩০ দিনে ফ্রিল্যান্সিং শিখে হয়ে যান লাখপতি!” এসব নিউজ দেখা আর বাস্তবের রূপান্তর করা কি আদতে সম্ভব? এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে আমি আপনাদের সম্পূর্ণ গাইড লাইনটাই দিতে চাই।

উত্তর হলো, হ্যাঁ অথবা না। আসলে এই উত্তরটা আপনার উপর নির্ভরশীল। আপনি যদি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং কি (Freelancing কি) ও এর সকল কল্প কাহিনি জানতে হবে। আর সেসব নিয়েই আজকের এই আর্টিকেল! এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের বলবো ফিল্যান্সিং কী, ফ্রিল্যান্সার কী, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কী কিংবা ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যাটাগরি, ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায়? ও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। তো চলুন ফ্রিল্যান্সিং কী? দিয়েই শুরু করি।

ফ্রিল্যান্সিং কী?

ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থই হচ্ছে মুক্ত পেশা। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির আদেশ অনুযায়ী কারো কাজ না করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। মূলত যারা এ ধরনের কাজ করে থাকে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। সারমর্ম হলো ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি কারো অধীনে কাজ করতে হবে না, ব্যক্তিস্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখে নিজের স্কিল সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে, আপনার সার্ভিস  বিক্রি করা। আছা একটু জটিল হয়ে গেলো তাই না? একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরো সহজ করে দেই।

ফ্রিল্যান্সিং হলো কোন প্রতিষ্ঠানে পার্মানেন্ট চুক্তিবদ্ধ না হয়ে বরং প্রজেক্ট বেসিসে কাজ করা। ফ্রিল্যান্সিং করে আসছে মানুষ শত বছর ধরে। যেমন একজন রিকশাওয়ালাও ফ্রিল্যান্সার, কারণ সে অন্যের রিকশা চালায়, ইচ্ছা হলে প্যাসেঞ্জার নেয়, নাহলে নেয় না। তার স্বাধীনতা আছে। ইদানীং ফটোগ্রাফাররাও ফ্রিল্যান্সার, কারণ তারা কোথাও ফটোগ্রাফার হিসাবে চাকরি না করে বরং অনুষ্ঠান বেসিসে শুট করে আর পারিশ্রমিক নেয়। ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ খুব একটা খারাপ অবস্থানে নেই। পেশাদার, দক্ষ মানুষদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে কোটি কোটি টাকার। ওয়ার্ল্ড ওয়ার্ল্ডে একটি পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সার আছে ৭ লক্ষাধিক। কিন্তু অনেক অসাধু মানুষ আছে যারা মানুষকে ধোঁকা দেয় ফ্রিল্যান্সিং এর নামে তাই অনেকেই বলে ওঠে, "এ দেখি কোর্স বেচার নামে তাবিজ বিক্রি "। শুনতে খারাপ লাগলেও আপনি ফেসবুকের ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে টিউনের কমেন্টগুলো দেখবেন তাহলে বুঝতে পারবেন।

তো এবার মনে করুন আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটার, এখন আপনি একজন ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইট গুগল সার্চ এ ১ নম্বরটি তুলে দিলেন। এই কাজটি করে দেওয়ার বিনিময়ে আপনি তাকে অর্থ দিলেন। এই কাজগুলো মোটেও সহজ কোনো কাজ নয় এর জন্য অবশ্যই আপনাকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। রাত জাগতে হবে। তাই কাজগুলোকে কেউ সহজ ভাববেন না। কাজ তো কাজই সহজ হলে সে নিজেই করতো। সহজ নয় জন্যই সে ওই কাজটি আপনাকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। তো এখানে ডিজিটাল মার্কেটার হলেন ফ্রিল্যান্সার, আপনি ক্লায়েন্ট এবং বিজ্ঞাপনটি হলো কাজ পাওয়ার জায়গা। এবার আসি ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে যে জিনিসগুলি অবশ্যই জানা লাগবে।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে আপনার যে যে জিনিসগুলি জানা লাগবে

আমি শুরুতেই বলেছিলাম ফ্রিল্যান্সিং মোটেও কোনো সহজ কাজ নয়। অনলাইনে ক্লায়েন্টের দেওয়ার প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার জন্য একটি ফ্রিল্যান্সারের রাত-দিন এক করে পরিশ্রম করতে হয়। তবে নিদিষ্ট বিষয়গুলোর উপর অভিজ্ঞতা ভালো থাকলে পরিশ্রম কম হতে পারে। অনেকেই ভাবেন ফ্রিল্যান্সিং সহজ কাজ, তাই তারা কিছু বিবেচবা না করেই শুধুমাত্র অনলাইনে একটি ফ্রিল্যান্সিং টিউন পড়েই মার্কেট প্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে নেয়। দিন শেষে কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে ভাবে তাকে দ্বারা বুজি সম্ভব নয়। না ভাই! আপনি ভুল বুজছেন, আপনাকে দিয়েই সম্ভব। আপনি যদি মার্কেট প্লেসে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় কিছু দক্ষতা অর্জন করে নে তাহলে আপনাকে দিয়েও সম্ভব বলে আমি মনে করি।

প্রয়োজনীয় দক্ষতা:

  1. কম্পিউটার জ্ঞান: ফ্রিল্যান্সিং এর বেশিরভাগ কাজই কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়। তাই কম্পিউটার ব্যবহারের প্রাথমিক জ্ঞান থাকাটা জরুরি।
  2. ইন্টারনেট সংযোগ: ইন্টারনেট ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং করা অসম্ভব। তাই আপনার একটি ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
  3. কমিউনিকেশন দক্ষতা: সাধারণত বিদেশি ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে হয় ইংরেজিতে, তাই ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ভালোভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে এবং লিখতে পারা জরুরি।
  4. সময় : ফ্রিল্যান্সিং এ আপনার নিজের সময়ানুবর্তিতা মেইনটেইন করতে হবে। কথা দেওয়া তারিখের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। নয়তো ক্লাইন্ট আপনার প্রোফাইলে রিপোর্ট সহ নেগেটিভ রিভিউ দিতে পারে। এতে আপনার পরবর্তী ক্লাইন্ট পেতে অনেক সমস্যা হবে এমনকি আপনার ফ্রিল্যান্সিং অ্যাকাউন্ট ব্লোক ও হয়ে যেতে পারে।

এতক্ষণ এসব পড়ে যদি আপনি নিজেকে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার বানাবেন চান, তাহলে প্রথমেই আপনাকে আপনার মনকে স্থির করতে হবে৷ কারণ এখন আপনি আসলে কি বিষয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে ভাবতে হবে। কারণ যে কাজগুলো আপনি পারেন না সেগুলো নিয়ে মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে না যাওয়াটাই ভালো। কারণ এতে দিন শেষে আপনি হতাশ হয়ে ফিরে আসবেন। কারণ অনাভিজ্ঞ লোকদের সহজে কেউ প্রাধান্য দিতে চায় না। নিজেকে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে চাইলে অবশ্যই আপনি যে বিষয়ে অনেক বেশি অভিজ্ঞ সেই বিষয় নিয়েই কাজ করাটা জরুরি। এছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কাজ করতে চাইলে আপনার প্রথমেই সেই বিষয় নিয়ে জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। বর্তমানে মার্কেটপ্লেসে অনেক ক্যাটাগরি অথবা বিষয়ে কাজ করতে পারবেন৷ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে জনপ্রিয় কিছু ক্যাটাগরি নিম্নে আলোচনা করা হলো।

জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরি

ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলি বিভাগ রয়েছে, তবে এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরি রয়েছে। তো চলুন সেগুলো সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া যাক।

  1. কন্টেন্ট রাইটিং: এই বিভাগে কন্টেন্ট লেখা, প্রতিবেদন লেখা, বই লেখা, অনুবাদ করার মাধ্যমে টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
  2. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং প্রোগ্রামিং: এই বিভাগে ওয়েবসাইট ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবং সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO), গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ডিজিটাল মার্কেটিং রয়েছে এ ক্যাটাগরির মাধ্যমে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

এইগুলা কীভাবে শিখবো?

এই স্কিলগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি স্কিলে পারদর্শী হয়ে টাকা উপার্জন করা সম্ভব। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, কীভাবে স্কিল গুলো শিখতে পারবো। স্কিলগুলি আয়ত্ত করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম গুলির মধ্যে আমার আপনার সবার জানা আর সেই সাথে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুইটি মাধ্যম হলো ইউটিউব এবং গুগল। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাইলে অথবা ফ্রিতে অনেক সহজে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাইলে আমার জানামতে ইউটিউব আর গুগলের থেকে সহজ কোনো মাধ্যম হতে পারেই না।

ইউটিউব এবং গুগল এ অনেক ভালো ভালো ফ্রি রিসোর্স আছে, এর মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত স্কিল গুলো শিখতে পারবেন। কিন্তু অনেকেই কোর্স আকারে বিক্রি করে আপনাকে স্কিল গুলো শিখাতে চাইবে। আপনার সাধ্যে থাকলে কোর্স কিনেও সুন্দর ভাবে সেই বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং স্কিল অর্জন করতে পারবেন। তবে কোন কোর্স কিনার আগে ভালোভাবে দেখে কিনবেন কারণ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর নামে টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে সেই মানুষটি ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তাই কোন কোর্স কেনার আগে সাবধানতা অবলম্বন করুন। অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠান, চ্যানেল, পেজ অথবা ফেসবুক আইডির বিষয়ে ভালো করে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে তবেই পেমেন্ট প্রদান করবেন।

টেকটিউনস এ ফ্রিল্যান্সিং করে কীভাবে আয় করবেন?

টেকটিউনস দেশের সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ওয়েবসাইট। এখানে আপনি প্রতিদিন নিত্যনতুন ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের বাংলা আর্টিকেল পড়তে পারবেন। সেই সমস্ত আর্টিকেল পরে ইন্টারনেট বিষয়ে নিজের জ্ঞানকে আরো বৃদ্ধি করতে পারবেন। টেকটিউনস ওয়েবসাইটে আমার আপনার মত প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার ভিজিটর ভিজিট করে থাকে ইন্টারনেট এবং টেকনোলজি সম্পর্কে নতুন কিছু জানার উদ্দেশ্যে। টেকটিউনসে আপনি ইন্টারনেট এবং টেকনোলজি সম্পর্কে কয়েক লাখেরও বেশি বাংলায় লিখিত আর্টিকেল পাবেন। এবার তাহলে আপনিও ভাবতে থাকুন, এত আর্টিকেল কে লিখেছেন? তাহলে কারা লেখেন এতসব আর্টিকেল?

আপনি জানলে অবাক হবেন যে, টেকটিউনস ওয়েবসাইট আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও নিতে পারেন। টেকটিউনস ওয়েবসাইটে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। হ্যাঁ, তবে অন্য কোন বিষয়ের না হলেও কন্টেন্ট রাইটিং নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। টেকটিউনস ওয়েবসাইটে বাংলা ইন্টারনেট এবং টেকনোলজি বিষয়ে কন্টেন্ট রাইটিং করার জন্য টেকটিউনস টিম প্রতিটি কন্টেন্ট এর জন্য ভালো পরিমাণ অর্থ প্রদান করে থাকে। টেকটিউনস ওয়েবসাইটকে আপনি চাইলে পার্ট টাইম রাইটিং চাকরি হিসেবেও নিতে পারেন। এখানে আপনি প্রতি মাসে যত বেশি আর্টিকেল লিখবেন তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। তাই আমি মনে করি, টেকটিউনস ওয়েবসাইট স্টুডেন্টদের জন্য লেখালেখি করে ইনকাম করার সবচেয়ে ভালো একটি উপায়।

এবার আপনি হয়ত ভাবছেন কীভাবে টেকটিউনসে লেখালেখি করব অর্থাৎ কীভাবে টেকটিউনস ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করব। চিন্তার কোন কারণ নাই এই সমস্ত বিষয় টেকটিউনস গাইডলাইন পেজে খুব সুন্দরভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা রয়েছে। আপনি টেকটিউনস এর সেই আর্নিং গাইডলাইন দেখলে আশাকরি সমস্ত বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। তবুও আমি একটু বলি, টেকটিউনস ইনকাম করতে চাইলে সর্বপ্রথম আপনাকে কপিরাইট মুক্ত এবং টেকটিউনস গাইডলাইন অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে দশটি টিউন পাবলিশ করে টেকটিউনস ব্যাজের জন্য আবেদন করতে হয়। তারপর তারা আপনার পাবলিশ করা দশটি টিউন রিভিউ করে আপনাকে টেকটিউনস ট্রাস্টেড টিউনার ব্যাজ প্রদান করবেন। তারপর থেকেই আপনি টেকটিউনস থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব তা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপর। ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা নিদিষ্ট পরিমাণ নয়। মাসে মাসে আপনাকে অর্থ প্রদানেও কেউ বাধ্য নয়। আপনি যেমন কাজ করবেন অথবা যতগুলো কাজ করবেন ততো বেশি অর্থ পাবেন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনি যত বেশি কাজ করবেন ততো বেশি ইনকাম করতে পারবেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং শুরুতে আপনার ইনকাম একটু কম হবেই সেই বিষয়টি মেনে নিয়েই ফ্রিল্যান্সিং নিয়মিত ভাবেই চালিয়ে যেতে হবে। পরে আস্তে আস্তে আপনার জনপ্রিয়তা যত বেশি হবে আপনার ইনকামও ততো বেশি হবে। যে কারণে ফ্রিল্যান্সিং করায় আপনার ইনকাম বেশি হবে এমন কয়েকটি প্রধান বিষয়গুলো হলঃ

  • আপনার দক্ষতা: আপনার দক্ষতা যত বেশি হবে,  তত বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব
  • অভিজ্ঞতা: ফ্রিল্যান্সিংয়ে অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
  • কাজের ধরন: কিছু কাজের ধরনের জন্য অন্যদের তুলনায় বেশি টাকা দেওয়া হয়।
  • কাজের সময়: আপনি যত বেশি সময় কাজ করবেন,  তত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি যে মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন তার উপরও আপনার ইনকাম নির্ভর করবে। তাই টেকটিউনস এর পক্ষ থেকে পরামর্শ হলো অনেক বেশি টাকা ইনকাম এর চিন্তা না করে স্কিলে মনোযোগ দেওয়া দরকার। কারণ স্কিলে মনোযোগ দিলে অটোমেটিক আপনার কাছে টাকা ধরা দিবে। ক্লাইন্ট খুশি তো আপনার ফিউচার ভালো। তো আমরা আজকে অনেক কথাই বললাম। শুরু থেকে আমরা জানতে পারলাম ফ্রিল্যান্সিং কাজটি সহজ নয় আবার কঠিনও নয়। ইচ্ছা থাকলে আপনাকে দিয়েই সম্ভব। যেহেতু আমরা আজকের আলোচনায় প্রায় শেষ পথে চলে এসেছি সেহেতু ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস না দিলে আজকের টিউন তো অসম্পূর্ণ থেকেই যায়। তো চলুন ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু টিপস এন্ড ট্রিকস জেনে নেওয়া যাক।

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু টিপস এন্ড ট্রিকসঃ

  1. স্কিল নির্ধারণ: আপনার দক্ষতা ও আগ্রহের উপর ভিত্তি করে কাজের ধরন নির্বাচন করুন।
  2. প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা: জ্ঞান আহরণ করুন এবং সেই থেকে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা গ্রহণ করুন।
  3. পোর্টফোলিও তৈরি: আপনি নিজে যে যে স্কিলে দক্ষ। শুধুমাত্র সেসব স্কিল গুলো মানুষের সামনে তুলে ধরন।
  4. প্রোফাইল তৈরি: ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করুন।
  5. কাজের সন্ধান: বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস যেমন: ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি প্লাটফর্মে নিয়মিত কাজের সন্ধান করুন।

পৃথিবীর যেকোনো স্থানে আপনার কাছে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে আপনার স্কেলকে পাশাপাশি রেখে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। কারণ এটি একটি রিমোট জব। তাই আপনারা যাদের ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি আগ্রহ আছে, তারা নিজের স্কিলে বাড়ানোতে মনোযোগ দিন।

শেষ কথা

আজকের টিউনে আলোচনা করা বিষয় ফ্রিল্যান্সিং থেকে কী আদৌও টাকা ইনকাম করা সম্ভব? আমি আমার নিকের থেকে অনেক বেশি তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজকের টিউন পড়লে হয়ত অনেকেই তাদের মনের মাঝে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে একটু হতাশ সৃষ্টি হতে পারে। অনেকেই ভাবতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং তাহলে এতো কঠিন? উত্তরে আমি বলবো না! ফ্রিল্যান্সিং কঠিন নয়। শুরুটা যাতে আপনারা স্ট্রোং মনোভাব নিয়েই করতে পারেন তার উদ্দেশ্যই একটু জটিলভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আমি আবারো বলছি, কোনো কাজই সহজ নয়, যদি কাজটি সহজ হতো তাহলে সে নিজেই কাজটা করতো অনেক অর্থ খরচ করে কাজটি আপনাকে দিয়ে করাতো না। ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে অবশ্যই আগে নিদিষ্ট কিছু বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। তারপর ফ্রিল্যান্সিং করতে আসুন। নয়তো দিনশেষে হতাশায় সব স্বপ্ন ঝাপসা হয়ে যাবে।

তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, ফ্রিল্যান্সিং থেকে কী আদৌও টাকা ইনকাম করা সম্ভব? আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।

Level 4

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 67 টি টিউন ও 28 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস