ফাইভারে একটি ভালো মানের গিগ কিভাবে বানানো যায়? [নতুনদের জন্য]

টিউন বিভাগ ফ্রিল্যান্সিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

আসসালামু আলাইকুম ওয়া-রাহমাতুল্লাহি ওয়া-বারাকাতু

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আরো আর্টিকেল পড়তে চাইলে ভিজিট করতে পারেন আমার পারসোনাল ব্লগ। ভিজিট করতে এখানে ক্লিক করুন। 

ফাইভার কি?

ফাইভার হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। যেখানে আপনি নুন্যতম ৫ ডলার থেকে শুরু করে হাজার ডলারের কাজ পাবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি অন্যতম একটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। শুধু বাংলাদেশে জনপ্রিয় এমন না বিষয়টি, সারাবিশ্বে ফাইভারের বেশ ভালো জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফাইভারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে সবচেয়ে কম রেটে কাজ পাওয়া এবং কাজ দেওয়া যায়। তাছাড়া প্রপোজালও সাবমিট করা যায় ফ্রিতে। এসকল দিক বিবেচনা করে ফাইভারের গ্রহনযোগ্যতা সবার নিকট রয়েছে।

ফাইভার কিভাবে কাজ করে?

ফাইভারের কাজ অন্যান্য মার্কেটপ্লেস এর মত একই। এখানে সেলার তার সার্ভিসটি সকলের নিকট গিগের মাধ্যমে প্রকাশ করে। এরপর বায়ার অথবা ক্লায়েন্ট যেমন ইন্টারেস্ট তেমন অনুযায়ী তাদের গিগ দেখে পছন্দ করে কাজের জন্য জিজ্ঞেস করতে পারে। বায়াররা চাইলে খুব সহজে যে কোন সার্ভিস কিনতে পারে।

ফাইভার মূলত মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। ইংরেজিতে যাকে বলে ব্রোকার আর বাংলায় হলো দালাল :p। প্রতিটি অর্ডারে ফাইভার প্রায় ২০% টাকা কেটে রেখে দেয়। একবার যদি কোন সেলার কাজ কমপ্লিট করে, তারপর বায়ার যদি অর্ডারটি গ্রহন করে, তখন সেলারের একাউন্টে ২০% বাদে বাকি অংশ এড হয়ে যায়। সাধারন ইউজারদের ক্ষেত্রে ফাইভার ২ সপ্তাহের মত সময় নিয়ে থাকে টাকা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে যদি স্পেশাল সেলার হয়ে থাকে, তাহলে আরো খুব শীগ্রই পেমেন্ট এর ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকে।

একটি ভালো মানের গিগ কিভাবে বানানো যায়?

গিগ তৈরি করার সময় আমাদের কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আসলে আমরা অনেকেই জানি যে টাইটেল হচ্ছে গিগের মুল অংশ। আর এটা একজন বায়ারের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি টাইটেল না ব্যবহার করেন তাহলে বায়ার আপনার গিগ খুঁজে পাবেনা। আর আপনাকে এমন একটি টাইটেল ব্যবহার করতে হবে যেন টাইটেলটা দেখেই ভিজিটর বা ক্লায়েন্ট আপনার গিগ ভিজিট করার ইচ্ছা পোষণ করে।

এরপরের বিষয় হলো, গিগে আপনি আপনার সেরা ৮-১০টি ডিজাইন দিয়ে গিগ তৈরী করবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ভালো মানের গিগ তৈরি করা শিখতে হবে। সেজন্য আপনি ভালো রকমের ডিজাইনারের প্রোফাইল ঘুরে দেখতে পারেন। মনে রাখবেন, একটা ভালো গিগ আপনার ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে। ফাইভারের অফিসিয়াল ডকুমেন্টেশন ফলো করুন
Creating a Gig – Fiverr।

উদাহরণের জন্য যেই ক্যাট্যাগরিতে গিগ দিবেন সেই ক্যাটাগরির ভালো সেল হওয়া / টপ রেটেড সেলারদের গিগগুলোর উপর রিসার্চ করে গিগ বানান।

কীভাবে আমার গিগগুলো উপরে নিয়ে আসবো?

আপনি যদি আপনার গিগ র‍্যাংকিং করে প্রথম পাতায় নিয়ে আসতে চান তাহলে আপনাকে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আপনি সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন গিগ তৈরি করুন। একটা গিগ সম্পর্কিত সুন্দর টাইটেল দিন। গিগ তৈরির পর গিগ সম্পর্কে একটা নিজের তৈরি করা ভিডিও যুক্ত করুন। ভিডিও সংযুক্ত গিগ গুলো বেশি বেশি ভিউ হয়। এতে করে আপনার গিগ র‍্যাংকিং এ প্রথম পাতায় আসতে সাহায্য করবে। গিগ এর ইমেইজ গুলো এস ই ও করে নিন, যদি না পারেন তাহলে ইউটিউব থেকে টিউটোরিয়াল দেখে নিন।

সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং শুরু করতে পারেন তাতে আপনার গিগ এর ভিজিটর বাড়বে। প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে টুইটার মার্কেটিং, লিংকডইন মার্কেটিং, পিনটারেস্ট মার্কেটিং। এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, টুইটারে প্রোফাইল খুলেই শুধু গিগের লিংক দিলেন, কাজ হবে? আপনাকে সেখানে কয়জন চিনে? আপনার লিংকে মানুষ কেনো ঢুকবে? কোন লাভে? আগে নিজেকে সেখানে স্থান করে নিতে হবে। তারপর আস্তে আস্তে মার্কেটিং শুরু করতে হবে। সর্বোপরি আপনাকে ভালো কাজ জানতে হবে।

ফাইভারে গিগ মার্কেটিং

প্রথমেই গিগ এর নিচে কি ওয়ার্ড সেকশন টিতে আপনার গিগের সাথে প্রাসংগিক কিছু কি ওয়ার্ড সেলেক্ট করুন। আর গিগ ডেসক্রিপশনে বিস্তারিত ভাবে আপনি কি সার্ভিস দিচ্ছেন? কেন আপনার সার্ভিস ক্লায়েন্ট নিবেন? কি কি সুবিধা দিচ্ছেন সব কিছু বিস্তারিত জানিয়ে দিবেন। কিছু কী ওয়ার্ড ব্যবহার করবেন এবং এগুলোকে হাইলাইট করবেন।

ব্যস, এরপর আপনার যত সোশ্যাল একাউন্ট আছে সব গুলোতে শেয়ার করে দিন আপনার গিগ। লিঙ্কেডিন, টুইটার, ফেসবুক, টাম্বলার, মিক্স সবখানেই শেয়ার করতে পারেন। যত বেশি শেয়ার করবেন, আপনার গিগের ইম্প্রেশান তত বাড়বে, ইম্প্রেশন এর ভিত্তিতে ফাইভারে গিগ এর র‍্যাংক বাড়ে। এছাড়া বিভিন্ন ব্লগে খুঁজে দেখতে পারেন কে আপনার ক্যাটাগরির সার্ভিস চাচ্ছে, তাদের সাথেও ফাইভার গিগ লিঙ্ক শেয়ার করতে পারেন। এ ছাড়াও ফাইভারে পেইড প্রমোশন আছে, যদিও এটা এখনই আপনার দরকার নেই। আগে অরগ্যানিক উপায়ে চেস্টা করেন, আপনার সার্ভিস ভাল হলে ক্লায়েন্ট আপনাকে খুঁজে নিয়ে কাজ দেবে সাথে রিটার্ন ক্লায়েন্ট ত আছেই।

আজকের মত আলোচনা এখানেই শেষ করছি। যদি ভালো লাগে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

দেখা হবে আগামীতে নতুন কোনো আর্টিকেল নিয়ে আবার হাজির হবো ইনশাহ আল্লাহ্‌। সে পর্যন্ত সবাই ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন, মাস্ক ব্যবহার করুন। আল্লাহ্‌ হাফেজ।

রিসার্চ এবং লেখাঃ এম এইচ মামুন।

প্রথম প্রকাশিতঃ https://mamunsblog.com

Level 8

আমি এম এইচ মামুন। Manager, Tasa'ad Private Limited, Pabna। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 122 টি টিউন ও 134 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 50 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

{জানিয়ে দাও} (,) {না হয় জেনে নাও}


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস