ফ্রিল্যান্সার হতে চান? নিজেকে সমৃদ্ধ করুন সাতটি উপায়ে।

সময়ের জনপ্রিয় পেশা ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং। তবে দক্ষতা ছাড়া প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়া কঠিন। যখন কোনো ক্লায়েন্ট নতুন প্রজেক্ট সাবমিট করেন তখন এতে সারা বিশ্বের ফ্রিল্যান্সাররা বিড করেন। তাই এই বিশাল সংখ্যক ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ পেতে হলে ঐ কাজে দক্ষতার পাশাপাশি আরও বাড়তি কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন।

প্রশ্ন জাগতে পারে ঐ দক্ষতাগুলো কি? এটি মূলত বিভিন্ন বিষয়ের উপর বা কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে। এখানে বেসিক ৭টি বিষয় সম্পর্কে জানানো হলো।

মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রাম জানাঃ
১৯৮৮ সালের ১ আগস্ট লাস ভেগাসে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সর্বপ্রথম ডেস্কটপের জন্য মাইক্রোসফট অফিস স্যুট উন্মুক্ত করেন। এরপর থেকে এই অফিস প্রোগ্রামের অন্তর্ভূক্ত ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট ইত্যাদি কম্পিউটিং ডিভাইস ব্যবহারকারীদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। আরও অনেক অফিস প্রোগ্রাম থাকলেও মাইক্রোসফট অফিস একটি কমন প্রোগ্রাম। আপনি রিপোর্ট লিখতে চাইলে, প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে চাইলে অথবা হিসাব সংরক্ষণ করতে চাইলে অফিস স্যুট ব্যবহার করেই পারবেন। তাই আপনার কাজের দক্ষতা বাড়াতে মাইক্রোসফট অফিস পরিচালনায় আরও দক্ষ হন।

গুগল ডকস সম্পর্কে জানুনঃ
ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের বিনামূল্যের ওয়েব নির্ভর অফিস স্যুট হলো গুগল ডকস। এতে মাইক্রোসফট অফিসের মতোই বিভিন্ন টুলস রয়েছে। ওয়ার্ড প্রসেসিং, স্প্রেডশিট এবং প্রেজেন্টেশন এর পাশাপাশি ক্লাউডে ফাইল সংরক্ষণের সুবিধা দেয় গুগল। সেবাটি ডক, ডকএক্স, পিডিএফ, পিএসডিসহ বিভিন্ন ধরণের ফাইল সমর্থণ করে।

তবে অনলাইনে এই কাজটি করতে না চাইলে ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেই গুগল ডকস ব্যবহার করা যাবে। এজন্য প্রয়োজন শুধুমাত্র একটি গুগল অ্যাকাউন্ট। তবে অনলাইনে গুগল ডক ব্যবহারের সুবিধা হলো এতে একাধিক ব্যক্তি একই সময়ে একই ডকুমেন্ট দেখতে কিংবা সম্পাদনা (এডিট) করতে পারে।

অনলাইনে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোঃ
মোবাইল ফোন, টেলিফোনে কথা বলা কিংবা সরাসরি দেখা করার বিপরীতে এখন জিমেইল, স্কাইপ, গুগল প্লাস হ্যাংআউট, গুগল ভয়েসসহ নানা জনপ্রিয় ওয়েব কমিউনিকেশন টুলস রয়েছে। এগুলো বিনামূল্যে সহজেই ব্যবহার করা যায়, যা ভিডিও চ্যাট, ভয়েস চ্যাট অথবা ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সুবিধা দেয়।
আপনি যদি ওয়েবিনার বা ওয়েব কনফারেন্স করতে চান তারজন্য রয়েছে গোটুওয়েবিনার, অ্যাডোবি কানেক্ট, এনিমিটিংসহ নানা জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। এগুলো আপনার ফ্রিল্যান্সিং কাজেও সহায়তা করবে। কমিউনিটি তৈরি হলে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ ও দক্ষতা বিনিময়ের ক্ষেত্র তৈরি হবে।

সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সক্রিয়া থাকাঃ
আজকের দিনে ফেইসবুক, টুইটার, লিংকডইন, গুগল প্লাস, পিন্টারেস্ট ছাড়া যেনো জীবন অচল। অভিজ্ঞ না হলেও এসব সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ফ্রিল্যান্সারদের সক্রিয় থাকা উচিত। আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও), মার্কেটিং, কাস্টমার সার্ভিসসহ অনলাইন মার্কেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকেন তবে এসব সাইটে আপনার নিয়মিত হওয়া আবশ্যক।
এগুলো পুরোপুরিভাবে আপনার কাজের অংশ না হলেও এসব টুলের মাধ্যমে আপনি আপনার সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট পাওয়া, গবেষনা, কিংবা এই ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। এছাড়া পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং, ইন্টারনেটে আপনার সক্রিয়তা কিংবা সাইটে ট্রাফিক পাওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার জুড়ি নেই।

বেসিক কোডিং জানুনঃ
প্রোগ্রামার কিংবা ডেভেলপার না হলেও বেসিক কোডিং জানা প্রয়োজন, এমন বিতর্ক প্রায়ই শোনা যায়। সংশ্লিষ্ঠরা মনে করেন, বেসিক কোডিং জানলেও আপনার প্রজেক্টে অনেক সহায়তা করতে পারে। বিশেষ করে এসইও, ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার কিংবা অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজের সংশ্লিষ্ঠতায় অবশ্যই কোডিং জানা প্রয়োজন।
উদাহরণস্বরুপ, একজন ডিজাইনারের যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে ধারণা থাকে, তাহলে সে জানতে পারবে ডেভেলপারের কি প্রয়োজন বা ডেভেলপারের ক্ষেত্রে কোন ডিজাইনটি করলে সহজ হবে। আপনি যদি একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট পরিচালনা করেন সেক্ষেত্রে নিজে বেসিক কিছু কাজ জানলে ছোটখাটো কাজের জন্য বারবার ডেভেলপারের কাছে ধর্না দিতে হবে না। আর এসব বেসিক কোডিং জানার অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে।

ডিজিটাল ফাইল কিভাবে এডিট করতে হয় জেনে নিনঃ
অনেক সময় নিজের কিংবা আপনি যে প্রতিষ্ঠানের কাজ করছেন তার জন্য ছোটখাটো কিছু বিষয় যেমন ওয়েব পেইজের জন্য লোগো, আর্টিকেলের জন্য ছবি কিংবা ব্লগের জন্য ভিডিও প্রয়োজন হয়। এগুলো সার্চ করলেই হয়তো ওয়েবে পেতে পারেন। তবে হুবহু অন্যের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করলে কপিরাইটের ঝামেলায় পড়তে পারেন। কিন্তু নিজে কাজ জানলে এই ভোগান্তি থেকেই রেহাই পেতে পারেন। এছাড়া এটি আপনার সময় ও টাকা বাঁচাবে। আর ছবি সম্পাদনার জন্য ফটোশপ, পিকাসা, গিম্পের মতো আরও অনেক সফটওয়্যার রয়েছে। নিজে নিজে চেষ্টা করেই এগুলোর ব্যবহার জানতে পারেন।

অনলাইন থেকেই শেখার চেষ্টা করুনঃ
আপনি ওয়েব ডেভেলপার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, অনলাইন মার্কেটার অথবা ফ্রিল্যান্স রাইটার, যে পেশারই হন না কেনো আপনাকে এই বিষয়ের সঙ্গে আপডেটেড থাকতে হবে। আর এই বিষয়ে আপডেটেড থাকতে ও কাজ জানতে অনলাইনেই অনেক রিসোর্স রয়েছে। কোরসেরা, খান একাডেমি, ইউডাসিটিসহ বিভিন্ন অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্ম রয়েছে, যেখান থেকে আপনি আপনার দক্ষতা বাড়াতে পারবেন। আর হ্যাঁ, কোনো বিষয়ে বুঝতে বা জানতে না পারলে গুগলে সার্চ করুন। গুগলই আপনার উত্তর দিয়ে দিবে। এতে অন্যের কাছ থেকে শেখার চেয়ে নিজে নিজে শিখলে আরও বেশি উপকৃত হওয়া যাবে।

আজ এ পর্যন্তই, দেখা হবে আগামী কোন টিউন এ। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন, এই কামনাই করি।

প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাজানো আমার নিজস্ব ব্লগ tanveerrazwan.com আপনাদের সবাইকে আমার ব্লগে ঘুরতে আসার আমন্ত্রন রইলো।

Level 0

আমি তানভীর রেজোয়ান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 51 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

I am a professional web designer and developer. Experience with HTML, CSS, JS, PHP and MySQL. Very familiar with WordPress and OpenCart. I have experience in designing what works, traffic conversion, email campaigns, landing pages, social media marketing and digital branding.


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস