ভিডিও এডিটিং একটি সৃজনশীল এবং সম্মানজনক ক্যারিয়ার

আইটিতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সবসময় গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন কিংবা এসইওর কথাটাই বলি। কিন্তু আরও অনেক সেক্টর রয়েছে যেগুলোতেও খুব ভাল ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। যেকোন ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পূর্বে সেই সেক্টরের কাজের ক্ষেত্রগুলো সবার প্রথমে জেনে নিতে হয়। যেটা নিয়ে কাজ করলে ১বছর কিংবা ২বছর পর আর কাজ করা সম্ভব হবেনা, সেগুলোকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া কখনই বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।

ACM_banner_video

আজকে এমন একটি সেক্টর নিয়ে বলব, আর সেটি হলো ভিডিও অ্যাডিটিং। ভিডিও অ্যাডিটিং জানার জন্য যে যে সফটওয়্যারগুলো শিখতে হবে, সেগুলো বলে দিচ্ছি।

সফটওয়্যারঃ  Adobe Premiere, After effects, Final cut pro (FCP), Sound Forge

অনেকের মত আপনার কাছেও হয়ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ার মনে হচ্ছেনা। চলুন, এ পোস্টটিতে জেনে নিব, ভিডিও এডিটিংয়ের ক্যারিয়ার বিষয়ে।

প্রথমত : লোকাল/ দেশী চাকুরীর ক্ষেত্রে সম্বাবনাঃ

টেলিভিশন চ্যানেলে চাকুরীঃ

ভিডিও এডিটিংয়ের প্রধান কাজের ক্ষেত্র হচ্ছে, টিভি মিডিয়া। বাংলাদেশে এ মুহুর্তে রয়েছে ৪০টির ও অধিক বেসরকারী টিভি চ্যানেল। আরও চ্যানেল আসবে খুব শীঘ্রই। প্রতিটা চ্যানেলেই প্রয়োজন দক্ষ ভিডিও এডিটর। চিত্রগ্রাহক (ক্যামেরাম্যান) দের ধারন করা ভিডিও গুলো কেটেছেটেদৃশ্যের পর দৃশ্য সাজিয়ে অনুষ্ঠান ও সংবাদকে দর্শকদের দেখার উপযোগী করেতোলাই ভিডিও এডিটরের কাজ আর এসব অনুষ্ঠান ও সংবাদ ২৪ ঘন্টা প্রচার করে টিভিচ্যানেল।

প্রতিটা টিভি চ্যানেলে কতজন ভিডিও অ্যাডিটর রয়েছে সেটি জানলে হয়ত চাকুরী পাওয়ার সম্ভাবনাটা অনুধাবন করা সহজ হবে।

একটা চ্যানেলে তিন ধরনের ক্যাটাগরিতে ভিডিও এডিটর নেওয়া হয়

১.সিনিয়র ভিডিও এডিটর

২.ভিডিও এডিটর

৩.নতুন যারা আসতে চাই ফ্রেশার বা শিক্ষানবীশ সেখানে শিক্ষানবীশ নিয়োগ দেওয়া হয় ২০ জনের মত।

টেলিভিশন চ্যানেলের নতুন ভিডিও এডিটরদের বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হয়। কিন্তু যারা বহুদিনের অভিজ্ঞ তাদের বেতন ৫০ হাজার - ১লাখ টাকা পযন্ত হয়ে থাকে।

Videowisconsinstudio

  মিডিয়া হাউজঃ

যেসব অনুষ্ঠান, বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারিত হয়  সেগুলো তৈরি হয় বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ কিংবা অ্যাডফার্মে। টেলিভিশন চ্যানেল বৃদ্ধির সাথে সাথে এধরনের প্রতিষ্ঠান ও গড়ে  উঠছে প্রচুর পরিমানে।  এজন্য এডিটিং জানা ছেলে মেয়েরা টেলিভিশন ছাড়াও এসবপ্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। টিভিতে সংবাদ, টকশো বাদে বেশিরভাগ অনুষ্ঠানএসব মিডিয়া হাউজ থেকে তৈরি হয়।  কতটা টিভি চ্যানেল আছে, সেগুলোতে নিয়মিত কত অনুষ্ঠান চলে, সেগুলোকে মনের গভীরে ক্যালকুলেশন করলেই খুব সহজে বোঝা যায়, ভিডিও এডিটরদের চাহিদা কেমন? এসব জায়গাগুলোতেও সম্মানজনক বেতনে চাকুরীর সুযোগ রয়েছে।

ভিডিও সাপোর্ট সেন্টারঃ

আমাদের দেশে বিভিন্ন বিয়ে, জন্মদিন কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিডিও সাপোর্ট দেওয়ার জন্য কিছু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের আয়ও খারাপ না। ভিডিও এডিটিং কাজ জানা থাকলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেও আয় করা সম্ভব।  এর জন্য কোন অফিস প্রয়োজন হয়না। ঘরে বসেই করা সম্ভব সবকিছু।

দ্বিতীয়ত : অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ

vidproded

এসইও প্রজেক্টে প্রয়োজনঃ

গুগল সার্চের পাশাপাশি ইউটিউবের সার্চ দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে। সবাই তাদের চাহিদার বিষয়গুলো এখন ভিডিও আকারে পেতে চায়, কারণ পড়ে কিছু বুঝার চাইতে ভিডিও দেখে যেকোন কিছু বুঝা যায় অনেক সহজে। ভিডিও সার্চ যেভাবে বাড়ছে, তাতে বড় বড় এসইও এক্সপার্টরা ভবিষ্যৎ বানী দিয়ে রেখেছেন, আগামী ২০১৬সালের শেষের দিক থেকে সবাই এসইওতে র‌্যাংকিং পাওয়ার জন্য ভিডিও এডিটিংকেই (বর্তমানে আর্টিকেল মার্কেটিংকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়) বেশি অগ্রাধীকার দিবে। বর্তমানেও সবাই এসইও তে র‌্যাংকিং পেতে ভিডিও মার্কেটিংকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। আর সেজন্য ভিডিও অ্যাডিটরদের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে অবশ্য এসইও এক্সপার্টরাই নতুনভাবে তাদের কাজের সুবিধার্থে ভিডিও অ্যাডিটিং শিখে নিচ্ছে। সুতরাং আপনিও এসইও তে কাজ করে থাকলে শিখে নিতে পারেন ভিডিও এডিটিং।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজঃ

উপরের কয়েকটি পয়েন্ট পড়ে আশাকরি ইতিমধ্যে সবার কাছে ভিডিও এডিটিংয়ের কাজের ক্ষেত্রগুলো সবার কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। যেকোন কাজের ক্ষেত্রগুলো যদি পযাপ্ত পরিমানে থাকে, তাহলে অনলাইনে মার্কেটপ্লেসগুলোতেও সেই কাজটির চাহিদা থাকবেই। সবচাইতে বড় মার্কেটপ্লেস ইল্যান্সে এ ধরনের কাজের চাহিদাগুলো জেনে নিতে পারেন, তাদের তৈরি গ্রাফ হতে। এ তথ্য গ্রাফ পাওয়ার লিংকঃ https://www.elance.com/trends/skills_central

video

আমি এখানে সবার সুবিধার্থে গ্রাফটির ছবি দিলাম।

এই গ্রাপটি তে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে টোটাল ৪৬,৫৫৪ টি জব রয়েছে এখানে আর ওপেন জব রয়েছে ৭২৭ টি । একেকটি জবের বাজেট ছিল ১,০৩৮ ডলার করে । ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য এই মার্কেটপ্লেস গুলুতে ঘণ্টায় ১৯ ডলার পে করা হয় তার মানে বাংলাদেশি টাকায় ১৪২৫ টাকা প্রতি ঘণ্টায় । আর ভিডিও এডিটিং এর কাজ প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে । সকল মার্কেটপ্লেসেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

উপরের সবগুলো আলোচনা থেকে বুঝতে পারা গেল কাজের চাহিদা সম্পর্কে। তারপর যেকোন কিছু শেখা শুরুর আগে জেনে নেওয়া দরকার, কোর্সটি শিখতে কতটুকু কষ্ট করতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, সেটি হচ্ছে, গ্রাফিক ডিজাইন কিংবা ওয়েবডিজাইন কিংবা এসইও সম্পর্কিত কাজের চাইতে অনেক সহজ এবং অনেক মজাদার। সেই সাথে শিখতে সময়ও লাগে অনেক কম।

পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পযন্ত পড়ার পরও কি, আরও প্রশ্ন রয়ে গেছে? সমস্যা নাই। বাকি কোন প্রশ্ন থাকলে সেগুলো উত্তর জানানোর জন্য আয়োজন করেছি বিশেষ ফ্রি সেমিনারের (১৪ জানুয়ারি, সন্ধ্যা ৬টা)।কোন প্রকার নিবন্ধন ছাড়া চলে আসুন,  ঠিকানা: মমতাজপ্লাজা (৫মতলা )(ল্যাবএইডহাসপাতালেরবিপরীতপাশে), বাড়ি# ৭, রোড# ৪, ধানমন্ডি, ঢাকা। ফেসবুক গ্রুপেও যোগাযোগ করতে পারেনঃ https://www.facebook.com/groups/creativeit/

Level 0

আমি মোঃ ইকরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 103 টি টিউন ও 130 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

নিজেকে অনলাইন ব্রান্ড এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করলেও গ্রাফিকস, ওয়েবডিজাইন এবং অ্যানিমেশন বিষয়েও প্রচুর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। ব্লগিংটা নেশার কারনে করি। নিজের ব্লগের লিংকঃ http://genesisblogs.com/


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

সরাসরি প্রিয়তে 🙂

ভিডিও এডিটিং টিউটোরিয়াল নিয়ে কিছু লিখলে ভাল হয় । থ্যাংকস ।