ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী [পর্ব-০২] :: কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এর কিছু সাধারন বিষয়।

ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে

ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী।

ইদানিং কিছু নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সিং সেখানোর নাম করে মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের এসব আপক্রমের জবাব দিতে আমার এই ছোট্ট প্রয়াস, আশা করি আপনারা আমার সাথে থাকলে এই উদ্দেশ্য সফল হবে। ফ্রিল্যান্সিং এর সকল বিষয়ে সহজ ভাষায় বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। প্রয়োজনে চিত্র/ভিডিও ব্যবহার করা হবে। ফ্রীলেঞ্চিং শুরু করার আগে ভালো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার পসন্দের যেকোনো একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে ওই কাজে সম্পূর্ণ দক্ষ করে গড়ে তুলুন, তাহলে আপনাকে আর কখনই পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। আসুন তাহলে শুরু করা যাক।

ফ্রিল্যান্সিং কোর্স

আপনি যে কাজই করেন কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এর কিছু সাধারন বিষয় / টুলস সম্পর্কে জানতে হবে।

যেমনঃ ইমেইল (সব ফিচার), স্কাইপে, সোশ্যাল মিডিয়া, গুগল সার্চ (সব ধরনের ব্যবহার), গুগল ড্রাইভ, গুগল ডকস, ড্রপবক্স, ফটোশপ (বেসিক), স্ক্রিনসট, টিম ভিউআর।

ইমেইলঃ

ফ্রীলেঞ্চারদের জন্য সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ হচ্ছে ইমেইল; মার্কেটপ্লেচ গুলোর সব নোটিফিকেশন ইমেইলে সেন্ড করা হয়। আপনাকে দিনের বেশির ভাগ সময় ইমেইলে লগইন থাকতে হবে। মনে রাখবেন মাত্র এক মিনিটের দেরির কারনে আপনার একটি জব অন্য কারো হাতে চলে যেতে পারে।

আজকাল অনেক কম দামে স্মার্ট ফোন পাওয়া যায় এবং ইন্টারনেট অনেক সহজলভ্য। আপনি ফোনে ইমেইল চেক করতে পারেন যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে। ফোনের মাধ্যমে আপনার ক্লাইন্টের মেসেজের জবাব দিতে পারবেন যত দ্রুত সম্ভব। এতে ক্লাইন্ট আপনাকে অনেক রেস্পন্সিভ ভাববে এবং আপনার সম্পর্কে তার ইতিবাচক ধারনা তৈরি হবে।

যদি আপনি ইচ্ছা করে দেরি করেন এবং ভাবেন যাহোক একটা অজুহাত দেখালেই হবে, তবে আমি বলবো ফ্রীলেঞ্চিং আপনার জন্য না। এখানে স্বাধীনতা আছে সত্য কিন্তু তার মানে এই না যে আপনি যখন তখন আজুহাত দেখাবেন।

ইমেইলের কিছু দরকারি ফিচারঃ Cc, BCc, Attach files, Email alias, Categories, Create folder, Document share etc.

স্কাইপেঃ

জব পাবার জন্য যেটা সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ সেটা স্কাইপেতে যোগাযোগ। প্রায় ৯০% ক্লাইন্ট স্কাইপেতে ইন্টারভিউ নেয় এবং জব চলাকালীন যোগাযোগ করে।

আমার নিজস্ব সাজেসনঃ (ক্লাইন্ট আপনাকে প্রথম নক করার সাথে সাথে তাকে স্কাইপেতে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ক্লাইন্ট একই সাথে অনেক জনের সাথে চ্যাট করবে, সেক্ষেত্রে যত তারাতারি এবং সঠিক ভাবে তার প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন জবটি পাবার সম্ভাবনা ততই বাড়বে।

কিছু দরকারি ফিচারঃ add request, contact list, file share, video/voice chat, etc.

সোশ্যাল মিডিয়াঃ

অনেকেই মনে করতে পারেন এটা শুধুমাত্র যারা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবে তাদের জন্য দরকার। আমি দুইটা উদাহরন দেবো, আশা করি বুজতে পারবেন।

উদাহরন ১-আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ক্লাইন্ট আপনাকে ইউটিউব চানেলের ব্যানার ফটো বানাইতে বলছে। আপনি যদি স্মার্ট ফ্রীলেঞ্চার হন কখনই তাকে ফটোর সাইজ জিজ্ঞেস করবেন না। এটা ইউটিউব থেকে নিজেই জেনে নেয়া সম্ভব।

উদাহরন ২- আপনি ওয়েব রিসার্চ করেন, ক্লাইন্ট আপনাকে কম্পানির ইমেইল খুজতে বলল। আপনি যদি ওয়েবসাইট থেকে ইমেইল খুজে না পান তাহলে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট/পেজ থেকে তা পেতে পারেন।

বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়াঃ Facebook, twitter, YouTube, Google+, LinkedIn, Pinterest, etc.

ড্রপবক্সঃ

খুব জনপ্রিয় একটি ফাইল শেয়ার মাধ্যম এবং অনলাইন ফ্রী স্পেস। আপনি সাইন আপ করার সাথে সাথে ২ গিগাবাইট ফ্রী স্পেস পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের রেফার করে প্রতিবার ৫০০ মেগাবাইট এড করতে পারবেন। এটির এখন অনেক বিকল্প আছে কিন্তু বেশির ভাগ ক্লাইন্ট বড় সাইজের ফাইল সেয়ার করতে ড্রপবক্সকেই পছন্দ করে। https://db.tt/nsy2qskF লিঙ্কে গিয়ে দরকারি তথ্যগুলো দিয়ে সাইনআপ করুন। তারপর ড্রপবক্স অ্যাপটি আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড করে ইন্সটাল করুন।

গুগল ড্রাইভ/ডকসঃ

অনলাইন স্টোরেজ হিসেবে গুগল ড্রাইভের বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রতিটি গুগল একাউন্টের জন্য আপনি ১৫ গিগাবাইট  ফ্রী স্টোরেজ পাবেন। মাইক্রোসফট অফিস এর সব কাজ করতে পারবেন গুগল ডক্সস ব্যবহার করে। ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট সহ বাড়তি হিসেবে পাবেন অনলাইন ফর্ম তৈরি এবং সেয়ার করার সুযোগ। আপনার জিমেইলে লগইন করে ভিজিট করেন https://drive.google.com/

টিম ভিউআরঃ

ফ্রীলেঞ্চার দের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি সফটওয়ার। টিম ভিউআর এর কয়েকটি ব্যবহার। ১, দূরবর্তী কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, তবে সেটি অবশ্যই চালু থাকতে হবে এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। ২, দূরবর্তী শিক্ষা গ্রহনে, এর মাধ্যমে অন্য কেউ তার কম্পিউটারে কাজ করে আপনাকে দেখাতে পারবে। এতে আপনি খুব দ্রুত কাজটি শিখতে পারবেন। ৩, টাইম ট্রাকার হিসেবে, আপনি আপনার কম্পিউটারে কাজ করছেন তা প্রমান করতে পারবেন।

স্ক্রিনসটঃ

অনলাইনে কাজ করার সময় আপনি নানান ধরনের সমস্যায় পরতে পারেন, তখন সমস্যা ভালভাবে বোঝাবার জন্য (কারো কাছে সাহায্য পেতে) একটি স্ক্রিনসট সেয়ার করুন। স্ক্রিনসট নিতে আপনার সমস্যার পেজটি ওপেন করে কিবোর্ড থেকে “Print Screen” বোতাম চাপুন। এবার পেইন্ট ওপেন করুন এইভাবে Start menu – All programs – Accessories – Paint তারপর পেস্ট করুন (Crtl + v). এবার প্রয়োজনীয় এডিট/ রিসাইজ করে সেইভ করুন JPG ফরম্যাটে।

ছবি সহ আরও বিস্তারিত জানতে ভিসিট করুন এইখানে। এগুলোর বাইরে আরো কিছু জিনিস দরকার সেগুলো সময়ের প্রয়জনে নিজেরাই সিখে নিতে পারবেন।

ফ্রীলেঞ্চ মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ধারনা, কোন মার্কেটপ্লেসটি আপনার জন্য পারফেক্টঃ

পৃথিবী বিখ্যাত এবং জনপ্রিয়তার বিচারে শ্রেষ্ঠ ১০ টি ফ্রীলেঞ্চ মার্কেটপ্লেচ এর লিস্ট দেখুন। প্রথমেই বলে নিই আপনি যদি একজন ভালো ফ্রীলেঞ্চআর হতে চান এবং এই সেক্টরে ভবিষ্যৎ গড়ার সপ্ন দেখেন, তবে কখনই একটি মাত্র মার্কেটপ্লেস এর উপর নির্ভরশীল থাকবেন না। প্রথমে শুরু করতে পারেন ওডেস্ককে দিয়ে। আমার মতে একজন সম্পূর্ণ নতুন ফ্রীলেঞ্চারের জন্য আদর্শ হতে পারে এটি। এবার আসুন দেখি এদের মধ্যে ওডেস্ককে কেন এক নম্বরে রাখা হয়েছে সেটা বুঝার চেষ্টা করি।

ওডেস্ক

  • ওডেস্কে প্রফাইল তৈরি করা অত্যন্ত সহজ একটি কাজ, আপনি চাইলে মাত্র ৩০ মিনিটে একটি ভালো প্রফাইল দাড় করাতে পারেন। (আপনার পরিচিত দক্ষ কারো সাহায্য নিতে পারেন আর অনলাইনে সাহায্যের জন্য আমরা তো আছিই)
  • এখানে ওয়েবসাইট অপসন গুলো অনেক সহজে বোঝা যাবে। আপনি একটু খেয়াল করে কাজ করলে নিজে নিজেই অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
  • নিজের ইচ্ছা মত রেটে কাজ করতে পারবেন, নতুন ফ্রীলেঞ্চার হলে কম রেটে বিড করে কাজ পাবার সম্ভাবনা বারে এটা আমরা সবাই জানি। তবে কখনই এতো কম রেটে কাজ করবেন না যেটা অসম্মান জনক। আপনি নতুন হিসেবে এক্সপারতদের তুলনায় একটু কমে কাজ করতে পারেন। তবে সেটার যেন একটা মাত্রা থাকে।
  • ওডেস্কে সব সুবিধা পাবেন ফ্রী, শুধুমাত্র আপনি আয় করলেই সেখান থেকে অল্প একটি ফি কেটে রাখবে তারা। যেখানে অন্য কিছু কিছু মার্কেটপ্লেসে স্কিল টেস্ট এবং প্রফাইলে বাড়তি কিছু সুবিধা পেতে খরচ করতে হয়।
  • ওডেস্কএর ফ্রীলেঞ্চার দের জন্য আছে ফ্রেন্ডলি সাপোর্ট যেকোনো সময়। আপনার যেকোনো সমস্যায় সরাসরি যোগাযোগ করুন তাদের সাপোর্টে।

এই পর্ব এইখানেই শেষ করছি। আপনাদের যেকোনো প্রশ্ন করতে যোগ দিন আমাদের ফেচবুক গ্রুপে। এই টিউটরিয়াল প্রথম প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজিতে এইখানে। এই পর্বের পিডিএফ ডাউনলোড করুন। এই টিউটরিয়ালের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়েছে এইখানে।

আর আগামি পর্ব গুলোতে থাকবেঃ

  • মার্কেটপ্লেসএ একাউন্ট করতে আপনার কি কি থাকতে হবেঃ
  • একই কম্পিউটার থেকে অনেকের একাউন্টে কাজ করা উচিত কিনা? এই সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
  • ওডেস্কে একটি ভালো প্রফাইল কিভাবে তৈরি করবেন?

Level New

আমি Tuner's Hat। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 15 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ধন্যবাদ ।

Level New

ভাল লাগল।

প্রিয় টিউনার,

আপনি ভুল ভাবে আপনার চেইন টিউনের শিরোনাম গুলো দিচ্ছেন। আপনি পর্ব হিসেবে টিউনের শিরোনাম গুলো –

চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০১] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু …

চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০২] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু ….

চেইন টিউনের নাম [পর্ব-০৩] :: চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু

এর অর্থ প্রথমে চেইন টিউনের নাম, এরপর (স্পেস দিয়ে) স্কয়ার ব্রাকেটের ( [ ] ) মধ্যে পর্ব হাইফেন (-) দিয়ে দুই সংখ্যায় পর্বের নম্বর। স্কয়ার ব্রাকেটের ( [ ] ) ভিতরে কোন স্পেস দিবেন না। এরপর (স্পেস দিয়ে) ডাবল কোলন (::) এর পরে (স্পেস দিয়ে) চেইন টিউনের ভিতরের বিষয়বস্তু॥ এই ফরমেটে চেইন টিউনের শিরোনাম গুলো লিখুন।

এই চেইনের পূর্বের পর্ব গুলোর শিরোনাম গুলোও যদি ‘টেকটিউনস চেইন টিউনের’ শিরোনাম মোতাবেক করা না থাকে তবে সব গুলো এখনই সংশোধন করুন ও পরবর্তী সকল চেইন টিউনে সঠিক ভাবে চেইন টিউনের শিরোনাম দিন।

টিউনের শিরোনাম গুলো ‘টেকটিউনস চেইন টিউনের’ শিরোনাম মোতাবেক সঠিক ভাবে সংশোধন করে আপডেট করে এই টিউমেন্টটির প্রতুত্তর (রিপ্লাই) দিন। টেকটিউনস থেকে আপনার টিউন গুলো চেইন করে দেওয়া হবে।

চেইন টিউন কীভাবে প্রক্রিয়া হয় তা জানতে ‘টেকটিউনস সজিপ্র’ https://www.techtunes.io/faq এর ‘চেইন টিউন’ অংশ দেখুন। ধন্যবাদ।

প্রিয় টিউনার,

আপনার টিউনটি টেকটিউনস চেইন টিউন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিনন্দন আপনাকে!

টেকটিউনসে চেইন টিউন কীভাবে প্রক্রিয়া হয় তা জানতে টেকটিউনস সজিপ্র এর https://www.techtunes.io/faq “চেইন টিউন” অংশ দেখুন।

নিয়মিত চেইন টিউন করুন। এখন থেকে আপনার নতুন করা চেইন টিউন গুলো টেকটিউনস থেকে চেইন এ যুক্ত করা হবে। চেইন টিউনে যুক্ত হবার ফলে চেইনের প্রতিটি পর্ব একসাথে থাকবে।

চেইনে নতুন পর্ব যুক্ত হলে তা টেকটিউনসের প্রথম পাতায় দেখা যাবে এবং “সকল চেইন টিউনস” https://www.techtunes.io/chain-tunes/ পাতায় চেইন টিউনটি যুক্ত হবে।

নিয়মিত চেইন টিউন করে নতুন নতুন টিউন আপনার চেইনে যুক্ত করুন এবং অসম্পূর্ণ না রেখে আপনার চেইন টিউনে নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ রূপ দিন। ধন্যবাদ আপনাকে।

মেতে থাকুন প্রযুক্তির সুরে আর নিয়মিত করুন চেইন টিউন!