
ভাবো তো — তোমার একটা প্রিয় বিষয় আছে। ধরো ভ্রমণ, রান্না, প্রযুক্তি, বা নিজের জীবনের ছোট ছোট অভিজ্ঞতা। তুমি প্রতিদিন এগুলো নিয়ে লিখছো, মানুষ পড়ছে, ভালোবাসছে, মন্তব্য করছে, আবার তুমি সেই লেখার মাধ্যমেই টাকা আয় করছো!
চমৎকার না?
এই জাদুকরী কাজটাকেই বলে — ব্লগিং।
চলো, গল্পের মতো করে আজ জেনে নেই ব্লগিং কী, কিভাবে শুরু করতে হয়, আর কিভাবে এই মাধ্যম থেকেই অনলাইনে উপার্জন সম্ভব।
সহজভাবে বললে,
ব্লগিং মানে হলো নিজের চিন্তা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা তথ্যকে ইন্টারনেটে লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা।
যে ওয়েবসাইটে তুমি নিয়মিত লেখো, সেটাই তোমার “ব্লগ”। আর যে ব্যক্তি লেখে, সে হলো “ব্লগার”।
তুমি চাইলে নিজের নামে ব্লগ খুলতে পারো।
অথবা ব্লগস্পট, মিডিয়াম বা ওয়ার্ডপ্রেসে ফ্রি ব্লগও তৈরি করা যায়।
ব্লগিং এখন কেবল শখ নয়, এটা একধরনের ক্যারিয়ার। হাজার হাজার মানুষ আজ ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই পুরো সময়ের ইনকাম করছে।
কারণ ব্লগিং মানেই স্বাধীনতা + প্যাশন + ইনকাম!
চলো দেখি, ব্লগিংয়ের কিছু অসাধারণ দিক 👇
চলো এবার একদম শুরু থেকে জানি কিভাবে তুমি আজ থেকেই নিজের ব্লগিং যাত্রা শুরু করতে পারো 👇
তুমি কী নিয়ে লিখতে চাও? সেটাই তোমার “নিস”।
এটা হতে পারে —
👉 নিয়ম হলো, যে বিষয়ে তুমি আগ্রহী, সেটাই বেছে নাও। কারণ প্যাশন ছাড়া ব্লগিং টেকে না।
ব্লগ বানানোর দুটো উপায় আছে:
(ক) ফ্রি প্ল্যাটফর্মে (যেমন Blogger, Medium, WordPress.com)
(খ) নিজস্ব ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়ে (যেমন WordPress.org, Wix, Squarespace ইত্যাদি)
👉 প্রফেশনালভাবে ইনকাম করতে চাইলে দ্বিতীয়টা (নিজস্ব ডোমেইন) বেছে নাও। একটা সুন্দর নাম দাও।
ব্লগের প্রাণ হলো কনটেন্ট।
ভালো কন্টেন্ট মানে শুধু তথ্য নয়, এমন লেখা যা পাঠককে ধরে রাখে, অনুপ্রাণিত করে, এবং সমস্যার সমাধান দেয়।
লেখার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখো:
যেমন এখন আমি যেভাবে তোমার সঙ্গে গল্পের মতো কথা বলছি — তেমনি!
SEO মানে হলো তোমার লেখা যেন গুগলে সহজে পাওয়া যায়।
কিছু মূল পয়েন্ট:
👉 ভালো SEO মানে বেশি ভিজিটর, আর বেশি ভিজিটর মানে বেশি ইনকাম।
তুমি লিখেছো, কিন্তু কেউ পড়ছে না — তাহলে ইনকামও হবে না।
তাই প্রচারণা জরুরি।
কিছু উপায়:
তুমি যত বেশি প্রচার করবে, পাঠক তত বাড়বে।
তুমি নিয়মিত ভালোভাবে ব্লগ চালালে ইনকামের অনেক রাস্তা খুলে যাবে। নিচে কয়েকটা জনপ্রিয় উপায় দিলাম 👇
এটা সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়।
তুমি ব্লগে বিজ্ঞাপণ দেখাবে, কেউ ক্লিক করলে বা ভিউ দিলে গুগল তোমাকে টাকা দেবে।
(শুরুতে কম হবে, কিন্তু ভিজিটর বাড়লে ইনকামও আকাশ ছোঁবে!)
তুমি অন্যের পণ্য প্রচার করবে, কেউ কিনলে কমিশন পাবে।
উদাহরণ: তুমি টেক ব্লগ চালাও — ল্যাপটপ রিভিউ লিখলে অ্যাফিলিয়েট লিংক দিতে পারো।
যখন তোমার ব্লগে অনেক ট্রাফিক থাকবে, তখন কোম্পানিগুলো নিজের পণ্য প্রচারের জন্য তোমাকে টাকা দেবে।
তুমি চাইলে নিজের ই-বুক, কোর্স, বা টেমপ্লেট বিক্রি করতে পারো।
এটা খুব লাভজনক এবং টেকসই ইনকাম সোর্স।
অনেকে তোমার লেখা দেখে তোমাকে লেখার অফার দেবে।
এভাবে তুমি লেখার মাধ্যমেই আয় করতে পারবে।
সত্যি কথা হলো —
ব্লগিং কোনো “একদিনে ধনী হওয়ার” পথ নয়। প্রথমে সময় দিতে হবে, ধৈর্য রাখতে হবে। প্রথম ৩-৬ মাসে ট্রাফিক কম থাকতে পারে, কিন্তু তুমি যদি নিয়মিত লেখো ও শেখো, এক বছর পরই দেখতে পাবে তোমার ব্লগ তোমার জন্য ইনকাম মেশিন হয়ে গেছে।
👉 “Consistency is the key.”
অর্থাৎ, নিয়মিত থাকাই সাফল্যের রহস্য।
ধরা যাক, তোমার নাম রাহাত। রাহাত খুব টেকনোলজি ভালোবাসে। সে ভাবলো, “আমি একটা ব্লগ খুলব, যেখানে মোবাইল টিপস লিখব। ” প্রথমে কেউ তেমন ভিজিট করত না, কিন্তু সে নিয়মিত ছিল। ৬ মাস পর গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ হলো। এক বছর পরে মাসে ৩০, ০০০ টাকা ইনকাম! এখন সে নিজের চাকরির পাশাপাশি ব্লগিং করে ফ্রিডম পাচ্ছে, নতুন গ্যাজেট কিনছে, পরিবারকে সময় দিচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা — সে নিজের স্বপ্নের পথে হাঁটছে।
তুমি কি রাহাত হতে চাও না?
ব্লগিং শুধু ইনকামের উপায় নয়, এটা তোমার চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও কণ্ঠস্বরকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার মাধ্যম। তুমি যদি সত্যি মন থেকে লিখো, মানুষ তোমাকে চিনবে, ভালোবাসবে, আর সেই ভালোবাসাই একসময় টাকায় রূপ নেবে। তাই আজই শুরু করো — তোমার প্রথম ব্লগ, তোমার প্রথম লেখা, তোমার প্রথম পদক্ষেপ।
💬 হয়তো এক বছর পর তুমি বলবে —
“হ্যাঁ, আমি ব্লগিং করেই আমার জীবন বদলে দিয়েছি। ”
✨ স্মরণে রাখো:
“তুমি যখন নিজের প্যাশনকে কাজে পরিণত করো, তখন কাজ আর কাজ থাকে না — সেটা হয়ে যায় আনন্দ। ”
আমি মো আব্দুল আলিম। , রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 মাস 4 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।