
বন্ধু, তুমি কি কখনও ভেবেছো— প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, টেস্ট, প্রেজেন্টেশন… সব মিলিয়ে দিন শেষে মাথায় শুধু একটা চিন্তা— “জীবনে কিছু করতেই পারবো না হয়তো!” 😅 চিন্তা করো না, আমি তোমাকে এমন একটা পথ দেখাবো যেটা শুধু তোমাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীনই করবে না, বরং তোমার নিজের ভেতরের লুকিয়ে থাকা ট্যালেন্টটাকে জাগিয়ে তুলবে! হ্যাঁ, আমি বলছি — ফ্রিল্যান্সিং এর কথা।
সহজভাবে বললে — তুমি নিজের স্কিল দিয়ে অনলাইনে কাজ করবে, কারও অফিসে গিয়ে নয়, নিজের রুম থেকে, নিজের সময় অনুযায়ী। তুমি ডিজাইন করতে পারো, লিখতে পারো, ভিডিও এডিট করতে পারো, মার্কেটিং জানো, ওয়েবসাইট বানাতে পারো — এসব যেকোনো কাজই হতে পারে তোমার ইনকামের রাস্তা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো —
👉 “আমি তো এখনো পড়াশোনা করি, তাহলে কিভাবে শিখবো আর সময় বের করবো?”
চলো, এবার একদম বাস্তবভাবে দেখে নেই, কিভাবে তুমি পড়ালেখার পাশাপাশি ধীরে ধীরে ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে যেতে পারো。
সবকিছুর শুরু মন থেকে হয়। অনেকে শুরুই করতে পারে না কারণ তারা ভাবে, “আমার পক্ষে সম্ভব না”, “আমার সময় নেই”, “আমি পড়ালেখায় ব্যস্ত” — এইসব কারণগুলোই তোমাকে পিছিয়ে রাখে। ভাই/বোন, মনে রাখো —
“যে শুরু করতে জানে, সে সফলতার অর্ধেক পথ পেরিয়ে গেছে। ”
তুমি যদি প্রতিদিন এক ঘণ্টা নিয়মিত শেখার জন্য দাও, দেখবে কয়েক মাসের মধ্যেই তুমি এমন কিছু জানবে, যেটা অনেকেই জানে না।
ফ্রিল্যান্সিং মানে শুধু Upwork বা Fiverr না। এটা এক বিশাল সমুদ্র। তুমি এখান থেকে নিজের পছন্দের জায়গা বেছে নিতে পারো —
আরো অনেক কিছু আছে! ভাবো, তোমার কোন কাজটা করতে ভালো লাগে। শুরুতে স্কিল না জানলেও সমস্যা নেই — আগ্রহ থাকলেই শেখা সম্ভব।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখানেই — “সময় কিভাবে ম্যানেজ করবো?” সত্যি বলি, এটা কঠিন নয়, বরং একটা অভ্যাসের ব্যাপার।
👉 পড়াশোনার জন্য যতটা সময় দরকার, সেটা দিয়েই করো।
কিন্তু প্রতিদিন অন্তত ১ ঘণ্টা শুধু নিজের স্কিল ডেভেলপ করার জন্য রাখো।
চাইলে তোমার রুটিন এমন হতে পারে —
এক ঘণ্টা শুনতে কম মনে হলেও, Consistency থাকলে সেই এক ঘণ্টাই তোমাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।
শুরুতেই টাকা খরচ করতে হবে না। YouTube, Google, Facebook Group — সব জায়গাতেই ফ্রিল্যান্সিং শেখার দারুণ সুযোগ আছে। তুমি চাইলে “FreeCodeCamp”, “Traversy Media”, “Jhankar Mahbub”, “Shikhbe Shobai”, “CodersTrust” এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকেও শিখতে পারো।
আর একটা কথা মনে রাখবে —
“তুমি যত বেশি শিখবে, তত বেশি উপার্জন করবে। ”
শুধু শেখলে হবে না। শেখা জিনিসটা প্রয়োগ করতে হবে। যেমন, যদি তুমি গ্রাফিক ডিজাইন শিখছো, তাহলে বন্ধুদের জন্য একটা টিউনার বা লোগো বানাও। যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখছো, নিজের জন্য একটা ওয়েবসাইট বানাও। এই ছোট ছোট প্রজেক্টগুলোই তোমার পোর্টফোলিও হয়ে যাবে — যেটা ভবিষ্যতে ক্লায়েন্টকে দেখাতে পারবে।
তুমি যতই ভালো কাজ জানো না কেন, কেউ যদি না জানে তুমি কী পারো — তাহলে ইনকাম আসবে না। তাই নিজের নামেই একটা পরিচয় তৈরি করো —
ধীরে ধীরে তোমার কাজ মানুষের চোখে পড়বে। একদিন দেখবে, কেউ নিজে থেকেই এসে বলবে — “ভাই, এই কাজটা করে দিতে পারবেন?” 😎
ফ্রিল্যান্সিং কোনো ‘One Night Success’ নয়। এখানে প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নতি করতে হয়। প্রথম ক্লায়েন্ট পেতে সময় লাগতে পারে, কিন্তু হতাশ হয়ো না। যেদিন প্রথম ইনকাম করবে, মনে হবে— “এই পরিশ্রম সার্থক!” 💰 মনে রেখো, তুমি এখন যেটা শিখছো, সেটা তোমার ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট।
অনেকে ভাবে, “ফ্রিল্যান্সিং করলে পড়াশোনা নষ্ট হবে। ” একদম ভুল! বরং তুমি সময় ম্যানেজ করা, দায়িত্ব নেওয়া, যোগাযোগ করা — এইসব রিয়েল লাইফ স্কিল শেখো, যা পড়াশোনার বাইরেও তোমাকে সফল মানুষ বানায়। তুমি শিখবে কিভাবে নিজের সময়ের মূল্য বুঝতে হয়, ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলতে হয়, নিজের কাজের জন্য দায় নিতে হয়। এই অভিজ্ঞতাগুলো তোমাকে আগামী জীবনে অনেক এগিয়ে রাখবে।
বন্ধু, তুমি এখনো তরুণ, তোমার সময় এখনই সবচেয়ে মূল্যবান। পড়ালেখা করো — সেটা তোমার ভিত্তি। কিন্তু পাশাপাশি একটা স্কিল শিখে নাও — সেটা তোমার ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।
আজ থেকে শুরু করো, এক ঘণ্টা সময় দাও। তিন মাস পর আয় নয়, তোমার উন্নত হওয়া নিজেকেই দেখে গর্ব অনুভব করবে।
“আজ শেখার জন্য যে সময় দিচ্ছো, কাল সেই সময় তোমার জন্য কাজ করবে। ”
তুমি পারবে — শুধু শুরুটা করতে হবে। 💪 একদিন দেখবে, তুমি নিজেই তোমার গল্পের নায়ক হয়ে গেছো।
আমি মো আব্দুল আলিম। , রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 মাস 4 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।