“আমার চোখে বিজ্ঞান হলো অনিন্দ্যসুন্দর। গবেষণায় মগ্ন বিজ্ঞানী শুধু যন্ত্রপাতির কারিগর নন, প্রকৃতির রহস্যমালার বিমুগ্ধ তিনি এক শিশু”। এই কথাটি আমার নয় কিন্তু আমার খুব খুব প্রিয় একজন বিখ্যাত নারী ব্যক্তিত্বের। যাকে আমি পছন্দ করি তার অসাধারণ মেধার জন্য, মানুষের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য, তার কথা ভাবলেই আমার মন শ্রদ্ধায় ভরে উঠে। কে তিনি? নিশ্চয়ই আপনাদের শুনতে ইচ্ছা করছে। তিনি আর কেউ নন, দারিদ্রের সাথে বেড়ে উঠা এক অপরিসীম সাহসী মহিলা মারি স্ক্লোদভ্স্কা-কুরি….যিনি ইচ্ছা করলেই তার অভাবনীয় মেধাকে কাজে লাগিয়ে ছিনিয়ে নিতে পারতেন দুনিয়ার সকল সুখ, হতে পারতেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিত্ত্বশালী মানুষগুলোর মাঝে অন্যতম, কিন্তু তিনি তা করেননি বরং মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের সকল সুখ, মেধা, শ্রম। আর ফলশ্রুতিতে তিনি কি পেয়েছেন? তিনি পেয়েছেন মানুষের একরাশ ভালোবাসা, যা তাকে মানুষের মাঝে আজও স্বরণীয় করে রেখেছে। তার প্রমাণ চান! আমাকেই দেখুন না কেন! তিনি যদি বিখ্যাতই না হবেন, মানুষের ভালোবাসাই না পাবেন….তবে আমি কি তার মৃত্যুর এতোদিন পর (তার মৃত্যু হয় ১৯৩৪ সালের ৪ঠা জুলাই) তাকে নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতাম, নিশ্চয়ই না! আমার মতো ক্ষুদ্র সাধারণ মানুষই যদি তাকে মনে রাখে….তার মৃত্যুর এতোদিন পর যদি তিনি আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব হতে পারেন….তাহলে বাকি বিশ্বের কাছে তিনি কেমন জনপ্রিয় বুঝে নিন। যাই হোক তার সম্পর্কে এতোকিছু বললাম কিন্তু তিনি কি জন্য এতো বিখ্যাত….দেখুন, তাই এখনো বলিনি। হ্যাঁ, তিনি বিখ্যাত ছিলেন ‘পোলোনিয়াম’ ও ‘রেডিয়াম’ আবিষ্কারের জন্য। শুধু তাই না তিনি রেডিয়াম বিকিরণ সম্পর্কে সারাজীবন গবেষণা করেছেন, যার মধ্যেই পাওয়া গিয়েছিলো পারমানবিক শক্তির সূত্র। তিনি দেখিয়ে ছিলেন রেডিয়ামের বিকিরণ ইউরেনিয়ামের চেয়ে বহু লক্ষ গুণ শক্তিশালী। পরবর্তিতে দেখা গেল তার আবিস্কৃত রেডিয়াম রশ্মি দুরারোগ্য ক্যান্সারের চিকিৎসায় খুব কার্যকরী। দুনিয়ার সকল হাসপাতালে দেখা দিল রেডিয়ামের চাহিদা। ১৯০৩ সালে তিনি ইউরেনিয়াম বিকিরণ সম্পর্কে গবেষণার জন্য তার স্বামী পিয়ের কুরির সাথে যৌথভাবে পেলেন নোবেল পুরস্কার। ১৯১১ সালে তিনি আবার পেলেন নোবেল পুরস্কার, আর এবারের কারণ পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম আবিষ্কার। সারা পৃথিবীতে এরকম মানুষের সংখ্যা খুব কম যারা দুই দুইবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে তো এরকম ব্যক্তিত্ব বিরল। তিনি ইচ্ছা করলেই তার এ আবিষ্কার প্যাটেন্ট করে বহু টাকা আয় করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং তার আবিষ্কার মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু তিনি কি তখন ঘূর্ণাক্ষরেও কল্পনা করেছিলেন তার গবেষণালব্ধ ইউরেনিয়ামই ভবিষ্যতে মানুষের সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রূ হিসেবে দেখা দিবে, পারমানবিক বোমার রূপে! ভবিষ্যত, হুম্ এ ভবিষ্যত আসলেই অনিশ্চিত। ভবিষ্যতে কি হবে তা কেউ বলতে পারে না। কিন্তু ধারণা করতে দোষ কোথায়! অন্তত আমরা ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তৈরি তো করতে পারবো। আর আজকে আমার এ দীর্ঘ ভূমিকার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ভবিষ্যত প্রযুক্তি। হ্যাঁ, আজ আমি আপনাদের ভবিষ্যতের ও নিকট ভবিষ্যতের কতোগুলো প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো, যা খুব নিকট ভবিষ্যতেই হয়তো আমাদের দেখার সৌভাগ্য বা দূর্ভাগ্য হতে পারে। সৌভাগ্য বলছি এ অর্থে যে, আজ আমি যে ভবিষ্যত বা নিকট ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগুলো নিয়ে লিখবো তার কিছু কিছু মানব সভ্যতার জন্য কল্যাণকর হলেও এখানে এমন কিছু প্রযুক্তি নিয়েও কথা বলবো যেগু্লো মানব সভ্যতার জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর হিসেবেও পরিগণিত হতে পারে….আর এখানেই দুর্ভাগ্যের অবতারণা। অনেক কথা বলে ফেললাম, চলুন এবার মূল টিউনে যাই।
উড়ন্ত গাড়ি! হ্যাঁ, এই উড়ন্ত গাড়িই হতে যাচ্ছে আপনার ভবিষ্যতের বাহন। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন। আজকাল হলিউডের মুভিগুলোতে যে ধরনের উড়ন্ত গাড়ি আমরা হরহামেশাই দেখি, তার একটির মালিক হতে পারেন আপনি। না, ভাই, আমি ঘুমিয়ে নেই! জেগেই আছি। তবে হ্যাঁ, এই উড়ন্ত গাড়ির বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মখীন হওয়ার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র ৩০-৩৫ বছর! লগি অ্যারোস্পেস (Logi AeroSpace) নামের একটি প্রতিষ্ঠান, আরো কয়েকটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে পরিকল্পনা করেছে এমন একটি গাড়ি বানানোর জন্য যা আকাশে উড়তে পারবে। আর এই গাড়িটির নাম রাখা হয়েছে “টাইরানোস”। এই গাড়িটি হবে ৪-হুইলার গাড়ি, যার ছোট ছোট ৪টি ঘূর্ণায়মান পাখা থাকবে। আর এই পাখাগুলোই গাড়িটিকে বাতাসে ভেসে থাকতে সাহায্য করবে। ৪ সিটের এ গাড়িটি হবে অত্যন্ত দ্রুত গতি সম্পন্ন এবং খুব সহজেই এটি তার পথের বাঁধাগুলোকে দূর করে সাবলীলভাবে আকাশে উড়তে পারবে। সবচেয়ে মজার কথা, “টাইরানোস”-কে আকাশের উড়ানোর জন্য আপনাকে পাইলট হওয়ার প্রয়োজন হবে না বা বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণও নিতে হবে না। এটি অন্য যেকোন সাধারণ গাড়ির মতোই চালানো যাবে এবং এর চেহারা হবে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
এরা কি মানুষ? নাকি অ্যানড্রয়েড! আমি প্রায় নিশ্চিত করে বলে দিতে পারি, উপরে যদি “অ্যানড্রয়েড” কথা আমি উল্লেখ করে না দিতাম, তবে অনেকেই এটি বুঝতেই পারতো না উপরের ছবিগুলো দুজন অ্যানড্রয়েড মহিলার। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন হতে পারে এই “অ্যানড্রয়েড” জিনিসটা আবার কি! অ্যানড্রয়েড (Android) হচ্ছে, মানুষের মতো হুবুহু দেখতে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রমানব। যা যন্ত্র হলেও এদের আচার-আচরণে সাধারণত মানুষের ব্যক্তিত্বই প্রতিফলিত হয়। জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু করেছে, কে কার চেয়ে ভাল অ্যানড্রয়েড বানাতে পারে। উপরের যে ছবিগুলো দেখছেন, এগুলো কিন্তু কল্পনার ছবি নয় বরং নিখাদ বাস্তবতা। এই রোবট রূপী অ্যানড্রয়েডগুলো মুখে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে, এমনকি বেশ সাবলীলভাবে হাঁটা-চলাও করতে পারে। কিন্তু মানুষের মন কি এতো সহজেই খুশি হয়। না, কখনই না। বরং মানুষ এখন চাইছে, এমন একটা রোবট বানাতে যা মানুষের মতো নয়, প্রায় মানুষই হবে। কিন্তু এটাও কি সম্ভব! বিজ্ঞানীরা তো বলছে, হ্যাঁ, এটা সম্ভব। আর তারা যে শুধু বলছে তাই নয়, এ নিয়ে বিস্তর গবেষণাও শুরু করে দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা কোন সময় বেঁধে দিতে চাচ্ছে না। তারা শুধু বলছে, অপেক্ষা করুন, নিকট ভবিষ্যতেই হয়তো আমরা হাজির হবো অবাক করা সে প্রযুক্তি নিয়ে, যা আপনাদের সব কিছু আবার নতুন করে ভাবার রসদ যোগাবে। চলুন না, তবে আমরা অপেক্ষা করি, আর নিজেদের প্রস্তুত করি সেই সময়ের জন্য। আর তাছাড়া, আমাদের সবারই তো জানা আছে সেই ছোট বেলায় পড়া প্রবাদটি-“সবুরে মেওয়া (এক ধরনের ফল) ফলে”।
(অ্যাসিমো) ASIMO রোবটের নাম আমরা কম বেশি সবাই শুনেছি। এ রোবটগুলো দেখতে অনেকটাই মানুষের মতো। তবে, বর্তমানের (অ্যাসিমো) ASIMO রোবটগুলো শুধু দেখতেই মানুষের মতো, কাজে-কর্মে এরা মানুষের ধারে কাছেও নেই। কিন্তু, কল্পনা করা হচ্ছে, এই রোবটগুলোর ৮ম জেনারেশন হবে প্রায়ই মানুষের মতো। যারা সব কাজই মানুষের মতো করে করার চেষ্টা করবে। তবে, এ রোবটগুলোর প্রধান কাজ হবে মানুষকে গাড়ি চালনায় সহায়তা করা। এরা অনেকটা প্রফেশনাল ড্রাইভারের মতো কাজ করবে। সামনের কোনো বিপদের ব্যাপারে আপনাকে সাবধান করে দিবে। এটি হবে আপনার নিরাপদ ভ্রমণের সঙ্গী। প্রয়োজনে এরা ভ্রমণের সময় আপনার কার সিকনেস দূর করার জন্য আপনার সাথে আপন বন্ধুর মতোই কথা-বার্তা চালাতে পারবে। এদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে, আকস্কিক বিপদের সময় এরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ির দায়িত্ব আপনার কাছ থেকে নিয়ে নিবে। তবে, এই রোবটগুলোকে খুব সহসাই বাস্তবে দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। বাস্তবে এদের পাওয়ার জন্য মনে হয় আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষাই করতে হবে (তবে এটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়, আমরা পারি আর না পারি, আমাদের সন্তান ঠিকই এদের দেখতে পারবে J)
চার্জার! এটা আবার লেখার মতো কোন জিনিস হলো নাকি? হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন, অবাক করা ভবিষ্যত প্রযুক্তির ব্যাপারটির সাথে চার্জার জিনিসটা মোটেও মানানসই না। তবে এটা যদি হয় বিশেষ ধরনের চার্জার, তবে এটাও অবশ্যই উল্লেখ করার মতো একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। কিভাবে? তবে শুনুন। আমরা এখন প্রায়ই অনেক গাড়ির কথা শুনি যেগুলো বিদ্যুত শক্তিতে চলে। কিন্তু এই গাড়িগুলোর সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল যে, এরা যেহেতু চার্জে চলে….সেহেতু বেশি দূর যেতে পারতো না। কিছুদূর চলার পর চার্জ শেষ হয়ে যেত, ফলে আবার ব্যাটারী চার্জ করার প্রয়োজন দেখা দিত। এতে করে অধিক দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে, এমন জায়গায় এই গাড়িগুলো ব্যবহার করা যেত না। এতে করে গাড়িগুলোর উপযোগিতা আমরা ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারছিলাম না। কিন্তু এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য এমন একটি চার্জার তৈরি করা হয়েছে যা দিয়ে মাত্র সাড়ে ৩ মিনিটে পুরো ব্যাটারীর ৫০% চার্জ করা সম্ভব হবে, আর যদি ৮ মিনিট চার্জ দেওয়া হয়….তবে পুরো ৮০% ব্যাটারী চার্জ করা সম্ভব হবে। বুঝুন তাহলে অবস্থা, আপনি কোথাও যাচ্ছেন, এমন সময় গাড়ির ব্যাটারীর চার্জ শেষ হয়ে গেলো অর্ধেক পথে, তখন আর আপনাকে ভয় পেতে হবে না। মাত্র ৩ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং আপনার গাড়ির ব্যাটারীকে চলার উপযোগী করে নিন। মাঝখান দিয়ে আপনি একটু বিশ্রামের সুযোগও পেলেন। এ বছর মার্চেই এই গাড়ি বাজারে আসার কথা ছিল, এতোদিনে মনে হয় অনেকেই এর সুবিধা ভোগ করাও শুরু করে দিয়েছে। তবে আরেকটু অপেক্ষা করুন, নিকট ভবিষ্যতেই এর আরো উন্নত রূপ আসার কথা রয়েছে।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী অ্যাটাক ড্রন বানাতে পারবে। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে অ্যাটাক ড্রন কি? অ্যাটাক ড্রন হচ্ছে পাইলট বিহীন একধরণের এয়ারক্রাফট, যারা শত্রু এলাকায় আক্রমন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে। যা রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা যায়। সম্প্রতি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, তারা ২০৪৭ সালের মধ্যে এমন একটি অ্যাটাক ড্রন বানাতে সক্ষম হবে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারবে এবং হামলা চালানোর আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যেখানে সে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে যাচ্ছে, সেখানে তার হামলা করা উচিত হবে, নাকি হবে না। এর পরিচালনায় কোনরূপ রিমোট কন্ট্রোল বা মানুষের প্রয়োজন হবে না। এটি হবে এক কথায় স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি অ্যাটাক ড্রন বিশেষ। যা আমাদের জন্য ভয়ংকর একটি পৃথিবীর ইঙ্গিতই বহন করছে।
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করুন, সূক্ষভাবে লক্ষ্য করুন। হুম্, ঠিকই ধরেছেন, এটি একটি ট্যাংক। আপনাকে এখানে বলে দেওয়া হয়েছে এবং আপনি বেশ কিছু সময় পেয়েছেন ভাবার জন্য। কিন্তু প্রথমেই যদি আপনাকে বলা না হতো, আর আপনার অবস্থান যদি এখন হতো কোনো ভয়ংকর যুদ্ধক্ষেত্র….তবে বলেন দেখি হঠাৎ করে আপনি কি বুঝতে পারতেন যে এটি ট্যাংক। মনে হয়, উত্তরটি হবে না। আসলে এটি হলো নিকট ভবিষ্যতের ট্যাংক, যা খুব তাড়াতাড়ি বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই ধরনের ট্যাংকগুলো ক্যামোফ্লেজ অবস্থায় থাকায়, এর অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে থেকে বুঝতে পারাটা খুব কঠিন ব্যাপার। এই ট্যাংকগুলো হবে প্রচন্ড ভয়ংকর এবং শক্তিশালী। আর কে এটি তৈরি করছে? উত্তরঃ বিট্রিশ সামরিক বাহিনী।
এবার আসি এই ছবিতে। আরে আরে এটা আবার কি? কাগজের বানানো প্লেন নাকি? হ্যাঁ, উত্তর পুরোপুরি ঠিক। তবে এটি সাধারণ বিমান নয়। এটি খুব কাছের ভবিষ্যতের যুদ্ধ বিমান। এটিও বিট্রিশ সামরিক বাহিনীর জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এই যুদ্ধ বিমানগুলো একই সাথে প্রচুর ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারবে এবং যুদ্ধ ক্ষেত্রে কোনো রাডারের পক্ষে সম্ভব হবে না, এদের খুঁজে বের করার। তাহলেই ভেবে দেখুন, কি ভয়ংকর একটা নিষ্ঠুর পৃথিবীর সম্মুখীন আমরা হতে যাচ্ছি।
নাহ্, অনেক তো মন খারাপ করা খবর দিলাম। এবার আপনাদের একটা ভাল খবর দিয়ে শেষ করি।
আপনারা অবশ্য খবরটা জানেন। আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন বাংলাদেশের জেনেটিক্স বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম ঢাকাতেই পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছেন। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানেন না ভবিষ্যতে এ প্রযুক্তি আমাদের কি কাজে লাগবে। তাদের জন্য বলছি, এটি সারা দেশের পাট চাষীদের জন্য দারুণ একটা সংবাদ। কেননা, এর ফলে আমরা আমাদের পাটকে করতে পারবো আরো লাভজনক এবং দেশের শিল্পকে করতে পারবো আরো উন্নত। তাহলে, স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে, কি আছে এ পাটের জিনোমে? পাটের জিনোম আবিষ্কারের ফলে সম্ভব হয়েছে এর জন্ম রহস্য সম্পর্কে জানার। এখন আমরা পাটকে আমাদের মতো করে জিনেটিক্যালি ডিজাইন করে নিতে পারবো। ফলে সম্ভব হবে আরো উন্নত মানের পাটের চাষ করার, রোগসহিষ্ণু পাট আবিষ্কার করার। শুধু তাই নয়, পাটের জিনোম সম্পর্কে জানার ফলে এর জাগ দেওয়া (পানিতে পাট ফেলে রেখে পঁচানোর প্রক্রিয়া) এবং সেচের খরচকেও প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। আর এ প্রযুক্তির ফলে অচিরেই আমাদের দেশের পক্ষে সম্ভব হবে পাট শিল্পের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার।
আসলে, এ থেকেই প্রমাণিত হয় আমরা বাঙ্গালিরা সব পারি। আমাদেরও আছে মেধা, আমরাও দিতে পারি শ্রম, শুধু একটু সুযোগের অপেক্ষা। আর তাহলেই ভবিষ্যতের পৃথিবীকে আমরা বদলে দিতে পারবো, পারবো নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে, আর বিশ্বকে উপহার দিতে পারবো একটি সুন্দর প্রযুক্তিময় পৃথিবী।
আমি ফাহিম আহ্মেদ। Manager, Transcom Electronics Ltd., Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 480 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ফাহিম আহ্মেদ। ভাল লাগে বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে, গান শুনতে আর প্রচুর বই পড়তে। আমি মুক্ত মনের স্বাধীন মানুষ হতে চাই, চাই লেখার স্বাধীনতা। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্নের মাঝেই আমি বাস্তবতার খোঁজ করি। স্বপ্নের রঙ্গিন ভেলায় ভেসে, আমি সত্য জগতে পাড়ি জমাতে চাই। চাই স্বপ্নীল আলোতে নিজেকে উদ্ভাসিত করতে।...
আপনার টিউন মানেই exclusive কিছু । এই টিউনটি ও এর ব্যতিক্রম নয় ।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে অজানা তথ্যগুলো এত সুন্দরভাবে উপস্হাপন করার জন্য ।