আমার ৫০তম টিউনে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। অনেকটা পথ হেঁটেছি আপনাদের সাথে, আজকে আমি বিশাল খুশি 🙂 টেকটিউনস থেকে অনেক কিছু শিখেছি, আপনাদেরকে কিছু শিখাতে পেরেছি কিনা জানি না তবে চেষ্টা সবসময় করেছি আর করে যাব বলে আশা করছি।
আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে ১০ টি আশ্চর্য সত্য যা শুনলে হয়তো আপনি থমকে যাবেন। আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছিলাম কথা গুলো শুনে।
আমরা অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করি এবং জানি যে এটার গুরুত্ব অনেক। কিন্তু কেউ কি জানেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা কি হারে বাড়ছে?
ভবিষ্যতে কত হবে সেটা ভাবতে পারছেন? এমন একদিন হয়তো আসবে যখন ইন্টারনেট যে ব্যবহার না করবে তাকে পাগল বলবে মানুষ। 😛
আমরা সবাই ফেসবুকে ছবিতে, স্ট্যাটাসে লাইক দেই কিন্তু আমরা কি জানি প্রতিদিন কতটা লাইক হচ্ছে? বর্তমানে ফেসবুকের অ্যাক্টিভ ব্যবহারকারির সংখ্যা হচ্ছে ১.২১ বিলিয়ন। সবাই প্রতিনিয়ত ছবি ভিডিও আপলোড করছে। এখন চলুন সেই আশ্চর্য সত্যটা জানি,
১০২৪ গিগাবাইটে হয় ১ টেরাবাইট, প্রতিদিন ৫০০ টেরাবাইট ডাটা আদান প্রদান কি বাড়ির কাছে? আমি নিজেই প্রতিদিন অন্তত ১ এমবি আপলোড করি 😛 (Proud)
স্প্যামাররা অনেক সচেতন! 😀 সোশাল মিডিয়াতে আমরা যেসব লিঙ্ক দেখি তার অনেক গুলোই স্প্যাম যেখানে ক্লিক করলে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
আমি কয়েকদিন পর পর মেসেজ পাই, আফ্রিকান কোন মেয়ের ছবি দেওয়া প্রোফাইল থেকে পাঠায়, এমন সুন্দর করে কথা বলে যেন আমি তার হাজার বছরের পরিচিত। এদের একটা লক্ষন হল আপনার সাথে ফেসবুকে কথা বলবে না বরং মেইল চাইবে। এরকম দেখলেই সাবধান হয়ে যাবেন, অনেকেই আছেন এমনকি একসময় আমি নিজেও এমনটা করতাম, যেকোনো মেয়ে দেখলেই চ্যাট করতে ইচ্ছা করতো 😛 তবে এখন থেকে সতর্ক থাকবেন, বাংলাদেশি মেয়েদের (হয়তো আপনার ভাই-ব্রাদার :D) সাথে চ্যাট করেন কিন্তু আফ্রিকান মেয়েদের সাথে কইরেন না।
হেহেহেহে! মামার কথা আর কি বলবো, কদিন পর পর শুনি এই কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে ঐ কম্পানিকে গুগল কিনে নিয়েছে। সে শুধু বড় হচ্ছেই, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪৫ টার মতো কম্পানি গুগল কিনেছে/মার্জ করেছে। এই গুগল যে একদিন কত বড় হবে তা ভাবলেই আমার মাথা ঘুরে। 😀
যেদিন শুনেছিলাম যে পৃথিবীর প্রথম মোবাইল ফোন তৈরিকারী কম্পানি মটোরোলাকে কিনে নিয়েছে গুগল সেদিন আসলেই অবাক হয়েছিলাম। এত বড় একটা কম্পানি যেটা কিনতে গুগলকে গুনতে হয়েছে ১২.৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তাছাড়া ব্লগার, অ্যান্ড্রয়েড, ইউটিউব, প্লিঙ্ক, ওয়েয, পিকাসা এসব তো আছেই।
প্রযুক্তির যত সব নতুন নতুন আবিষ্কার দেখি তার সবগুলোই কোন না কোন প্রয়োজনবোধ থেকে এসেছে। ওয়েবকেম নিঃসন্দেহে একটি আশ্চর্য আবিষ্কার যদিও এখন আমাদের কাছে তেমন আশ্চর্য মনে হয় না।
Trojan Room coffee pot একটি কফি রাখার পাত্র ছিল কেমব্রীজ ইউনিভার্সিটিতে। ওয়েবকেমটা বানানো হয়েছিল যেন সেই পাত্রের কফি শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য যেন বার বার ঐ রোমে না যেতে হয়। ওদের মতো অলস হতে পারলেও ভালো 😛 অলসতার বহিঃপ্রকাশ হল আজকের নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় ব্যাবহৃত শক্তিশালী ক্যামেরা।
Dr. Quentin Stafford-Fraser এবং Paul Jardetzky এই দুজন হলেন প্রথম ওয়েবকেমের নির্মাতা।
স্যার টিম বার্নাস লী লন্ডনে জন্ম নেওয়া একজন পদার্থবিধ। তিনি চিন্তা করেছিলেন এমন একটি হাইপারলিঙ্কের কথা যার দ্বারা পৃথিবীর সবাই যুক্ত থাকবে। সেই মহৎ ব্যক্তির অসাধারন আবিষ্কারকে মানুষ উন্নতির চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
আপনারা ইচ্ছা করলে এখনি সেই ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন (নাহ এখন না, টিউনটা শেষ করে নিন :P) সাইটটা এখনো আগের মতোই আছে, সাদামাটা করে রেখে দেওয়া হয়েছে যেন ইতিহাসটা অক্ষুন্ন থাকে।
সহজ এবং সুন্দর নামের ডোমেইন সবার কাছেই পরিচিত। আমি নিজে Yahoo তেমন ব্যবহার না করলেও Yahoo নামের ডোমেইনটা আমার প্রিয়। এই সুন্দর এবং সহজে মনে রাখার মতো ডোমেইন গুলো বিক্রি হয় অনেক দামে। আসুন দেখি এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ডোমেইনের নাম গুলো।
অনেকেই ভাবছেন তাহলে গুগল বা ফেসবুকের ডোমেইনের দাম কত? এখানে যে নাম দুইটা দিলাম সেগুল কোন কম্পানি না, শুধু একটা ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস। দ্বিতীয় ডোমেইনটার দাম কেন যে এত বেশি হল সেটা হয়তো সবাই বুঝতে পেরেছেন। প্রথমটার কারন আমি নিজেও বুঝি নাই (insurance একটি ভালো বিজনেস এটা বুঝি :D)
অন্যান্য দেশের কথা জানার আগে আসুন দেখে নেই আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা কত।
ভারতে ২০১২ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারির হার ছিল ১২.৬% এবং একই সালে পাকিস্তানে ছিল ১০%।
আমি সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছিলাম এই তথ্যটা জেনে, Iceland ছোট একটা দেশ অনেকে হয়তো এই দেশের নাম শুনেননি অথচ তারাই ইন্টারনেট ব্যবহারে এগিয়ে আছে। সমস্যা নেই আমারাও এগিয়ে জাচ্ছি, আমি তো ফেসবুকের নাম শুনেছিলাম কলেজে এসে কিন্তু এখন ক্লাস সিক্সের পলাপাইনও জানে এবং ফেসবুক ব্যবহার করে। 😀
Philip M. Parker হলেন INSEAD নামের একটি বিজনেস স্কুলের একজন প্রফেসর। আমরা জানি বই লিখতে একটি টাইটেল লাগে, কি কি টপিক থাকবে তা লাগে, একটা একক ISBN (International Standard Book Number) লাগে, কভার পেজ লাগে, বেক কভার লাগে আর কি! সবচেয়ে বড় কথা হল বই লিখতে জ্ঞান লাগে।
এই বেক্তির এত কঠিন কাজকে সহজ করেছে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট। ভদ্রলোক গণিত, জীববিজ্ঞান এবং অর্থনীতিতে অনার্স করেছেন (আমারতো একটা নিয়েই টানাটানি :P) বই লিখা সহজ কোন কাজ না, বই হল মানুষের দিক নির্দেশনা আর সেটা যদি ভুল দিকে যায় তাহলে সব শেষ!
ইন্টারনেটেরও আবার ওজন আছে? শুনলে মাথা ঘুরবে না তো কি করবে? তবে কথাটা সত্যি, এই ইন্টারনেট জগতের একটা সত্যিকারের ওজন আছে। আর সেই ইন্টারনেটের ওজনের পরিমাণ শুনলে তো আপনার মাথা আরো ঘুরবে 😛
গনিতবিদ কোন ভাই থাকলে একটু সাড়া দেন, আমার মাথা লাঠিমের মতো ঘুরতাসে 😛 যাই হোক এই ওজনটা সম্পর্কে একটু ধারনা আমি দিয়ে দেই ১ আউন্স=২৮.৩৪৯৫ গ্রাম। আমার মতো এবারো অনেকেই ওজনের পরিমাণটা বুঝবেন না 😀 আমার মতো অংকে কাচা ব্যক্তিবর্গের জন্য বাংলা হিসাব দিলাম 😛
অনেকগুলো আশ্চর্য তথ্য দিলাম, এবার বোনাস হিসেবে আরেকটি আশ্চর্য এবং খুবী দুঃখের খবর জানাতে চাই।
তথ্যটা দিতে গিয়ে অনেক সংশয়ে পরেছি দেবো কি দেবো না। এই কর্কশ এবং তিতা সত্যটা শুনে খুবী কষ্ট পেলাম :(উপরের সবগুলো তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা, আমি শুধু একটু অলঙ্কার লাগানোর চেষ্টা করেছি। যদি মনে করেন কোন কিছু বাড়িয়ে লিখেছি তাহলে দয়া করে বকা না দিয়ে সুন্দরভাবে বলুন আমি ঠিক করে দেবো।
আমার ৫০তম টিউনের সমাপ্তি এখানেই! এই পর্যন্ত আপনাদের কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি আশাকরি আর পাবো। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন এরকম ভাবে চালিয়ে যেতে পারি। (আমি আবেগে কানতাসি! :'(আমার এত আবেগ কেরে? :P)
টিউনটি ভালো লাগলে নিচের লিঙ্ক থেকে আমার গাওয়া গানটা শুনে আসবেন। আর ভালো না লাগলে কি করতে হয় তা তো জানেনই 😀 (না জানলে আমার আগের পষ্টগুলো পড়ুন :P)
সময় পেলে ঘুরে আসবেন আমার ব্লগে।
আমার গান।
ফেসবুকে আমি।
আমি সোহাগ মিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 82 টি টিউন ও 694 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 32 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সোহাগ। টেকনোলজির প্রতি চরম আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও পড়েছি বিজনেস নিয়ে। একটু একটু গাইতেও পারি, মাঝে মাঝে গীটার বাজাই। এক কথায়, টেকনোলজির সাথে প্রেম করি আর গানকে বিয়ে করেছি :D । আমার ইউটিউব চ্যানেল। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমার ব্লগে। আমার গাওয়া গানগুলো শুনতে ভিসিট করুন: গানের ইউটিউব...
আর ইন্টারনেটে লক্ষ লক্ষ টেরাবাইট যত ডাটা আছে তার সমগ্র ওজন মাত্র ১টা মাঝারি সাইজের স্ট্রবেরির অজনের সমান । টিউন ভাল হয়েছে । চালিয়ে যান ।