আজ আর জিজ্ঞেস করবো না সবাই কেমন আছেন। সবাইকে ভালো রাখার একটা ছোট প্রয়াস নিয়ে লিখছি একটি জনসচেতনতা মূলক টিউন।
ছোট মুখে অনেক গুলো বড় কথা বলব তাই আপনারা দয়া করে কেউ মনে কিছু নেবেন না। আজেক আমি যেই বিষয়টি নিয়ে লিখবো সেটা হল, কিভাবে আধুনিক প্রযুক্তির খারাপ দিক বন্ধ করা যায় এবং শুধু ভালো দিকগুলা ব্যবহার করা যায়। কেউ ভুল বুঝবেন না যে আমি প্রযুক্তি ছেড়ে দিতে বলছি, আসলে আমি শুধু খারাপ দিকগুলো ছেড়ে দিতে বলছি। আমি প্রযুক্তি ছাড়া এখন এক কদমও যাওয়া যাবে না।
"Albert Einstein" এতো বড় একজন বিজ্ঞানী তার জন্ম ১৮৭৯ এবং মৃত্যু ১৯৫৫ সাল এর মধ্যে কোন এক সময় তিনি বলেছিলেন যে,
It has become appallingly obvious that our technology has exceeded our humanity.
১৮৭৯–১৯৫৫ সালের প্রযুক্তি দেখে "Albert Einstein" মর্মাহত হয়ে বলেছিলেন যে প্রযুক্তি আমাদের মানবতাকে অতিক্রম করেছে! তিনি যদি আজকের প্রযুক্তির ব্যবহার দেখতে পেতেন তাহলে ভালো দিক গুলো দেখে খুবই খুশি হতেন আর খারাপ দিক গুলো দেখে যে কি বলতেন তা আমার চিন্তার বাইরে।
১৯৫৫ সাল,
এখন বলুন ১৯৫৫ সালে কি এমন আহামরি প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল যা দেখে "Albert Einstein" ভাই মর্মাহত হয়েছিলেন? ১৯৫৫ সালে ENIAK নামের কম্পিউটারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো কিছু সমস্যার কারনে। তখনকার কম্পিউটার গরম হলে নাকি পানি ঢেলে ঠাণ্ডা করা হতো এবং এক ঘরে একটা কম্পিউটারের জায়গা হতো না। যোগ বিয়োগ এর মতো সহজ অংক করতেও নাকি অনেক সময় লাগত। কম্পিউটারের বাইরে আরও কয়েকটা জিনিষ যা তখন আবিষ্কৃত হয়েছিলো সেগুলোকে খারাপ কাজে ব্যবহার করার রাস্তা খুবই কম ছিল। এখন আমি বলছি "Albert Einstein" ভাই কেন মর্মাহত হয়েছিলেন, তিনি আরেকটা সুন্দর এবং কার্যকারী কথা বলে গেছেন,
Logic can take you from A to B, Imagination can take you to everywhere!
এর থেকে বুঝা যায় যে "Albert Einstein" ভাই Imagination কে খুব পছন্দ করতেন, তিনি হয়তো তখনকার প্রযুক্তি দেখে যতটুকু মর্মাহত হয়েছিলেন তার চাইতে বেশি ভেবেছিলেন ভবিষ্যতের কথা। এখন যারা Imagination বিশ্বাস করেন না তাদের জন্য একটা উদাহরণ,
এই ছবিটি এঁকেছেন জনাব "Leonardo da Vinci", যাকে আমরা সবাই মনালিসার পিতা হিসেবে চিনি, অনেকেই হয়তো চিন্তা করছেন যে এটা একটা নৌকা, আসলে এই ছবিটা হল একটা উড়ন্ত মেশিনের। তিনি শুধু চিন্তা করেছেন এমন একটা কিছু হবে এক সময়, কখন চিন্তা করেছেন?
মানুষের তৈরি কোন জিনিষ আকাশে উড়ার ৪০০ বছর আগে তিনি এই ছবিটি একেছিলেন!
এখন আপনি চিন্তা করেন এখন থেকে ৪০০ বছর পরে কি হবে, কোন Hollywood মুভির কাহিনি বললে হবে না 😀
অনেক ইতিহাস জানলাম, এবার আসুন মূল আলোচনায়।
ভাই, সব জিনিষের কিছু না কিছু খারাপ দিক আছে। কিছুদিন আগে শুনেছিলাম ডিমের কুসুম খেলে নাকি সমস্যা 😀 সত্যি হতে পারে কারন আমি তো জানি না, যারা জানেন তারাই বলেছে। তাই বলে কি ডিম খাওয়া ছাড়বো নাকি, কখনই না! 😀
আমাদের আজকের এই প্রযুক্তিটাকে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি খারাপ দিকে ব্যবহার করছে তরুন প্রজন্ম (বাপরে, খুব জ্ঞানী কথা বললাম মনে হয় :-D) আমাকে দেখেই আমি বলছি যে অনেক গুলো খারাপ কাজে আমি এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করি। আমি শুধু তরুনদের বলছি না, বড়রাও যে করে তার একটা নমুনা দেখাই।
আমি বিজনেসে পড়ি, এখনো সত্যিকারের ব্যাবসা করিনি তাই জানি না এটা কেমন হয় কিন্তু বইয়ে পরেছি যে ব্যাবসাতে "Ethics" বা সততা বলে একটা কথা আছে আবার সমাজ সেবা, দেশের সেবা করার মতোও কিছু জিনিষ আছে। আমার স্যারের মুখে শুনেছি একটা সফটওয়্যারের কথা যার নাম "SAP" প্রায় এক কোঠি টাকা নাকি তার দাম। এই ERP (Enterprise Resource Planning) সফটওয়্যারটা যেই কোম্পানি ব্যবহার করবে সে কোম্পানি তে ৬০০-৭০০ মানুষ কম লাগবে! বাংলাদেশের কোন এক কোম্পানি নাকি এই সফটওয়্যারটা আনার পর সে কোম্পানি থেকে ৬০০-৭০০ লোকের চাকরি ছাড়তে হয়েছে। মানছি সফটওয়্যারটি খুবই উপকারি কিন্তু যাদেরকে চাকরিচ্ছুত করা হয়েছে তাদের কথাও তো ভাবতে হবে নইলে Ethics, সমাজ সেবা, দেশের সেবা এসব কি করে হবে? একতো আমাদের মতো হাজার হাজার বেকার চাকরির জন্য ঘুরছে তার উপর যদি এভাবে Experienced লোক চাকরি ছাড়ে তাহলে অন্যদের কি হবে?
বিষয়টা হেলায় উড়িয়ে দেবেন না, এখন হয়তো বুঝতে পারছেন না কিন্তু ৪০০ বছর না শুধু এখন থেকে ২০ বছর পরের কথা চিন্তা করে দেখুন দেশের মানুষের কি অবস্তা হবে।
প্রযুক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে আমি নই, এর একটা সমাধান আছে। যেই কোম্পানি সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানুষকে চাকরি থেকে তাড়ায় তাদের উচিৎ আরেকটা ফার্ম খুলে সেখানে তাদের চাকরি দিয়ে দেওয়া। এটা সাধারনত হয় না, আপনি নিজে চিন্তা করে দেখুন আপনি ব্যেবসা করলে কি Profit বাদ দিয়ে দেশের চিন্তা করবেন? কিন্তু এমন না করলে ভবিষ্যৎ হয়তো Hollywood মুভির মতই হবে, মানুষ পৃথিবীতে থাকতে পারবে না!
এখন দেখি তরুণরা কি করে,
আধুনিক প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের সবচেয়ে ক্ষতিকর জিনিষ হল কিছু খারাপ ভিডিও। এই বিষয় নিয়ে বেশি লেকচার দেওয়া লাগবে না, আশাকরি সবাই জানেন এটা ভালো না খারাপ। এখন হয়তো অনেকে চিন্তা করছে এই ফাউল পোস্টটা না করে কয়েকটা ভালো কয়েকটা সাইটের লিংক দিয়ে দিলেও হতো 😀
এটা থেকে নিজে নিজে মুক্তি পাওয়ার ভালো কোন পথ এখনো আবিষ্কার হয়নি অথবা আমার জানা নেই। একমাত্র অন্যকেউ সেক্ষেত্রে মা-বাবা অথবা বন্ধু হতে পারে যে এটা বন্ধ করতে পারে। আমি একটা সফটওয়্যার দিচ্ছি যা এসব সাইট বন্ধ করতে সাহায্য করে। অনেকেই চেনেন সফটওয়্যারটা যা বাজে সাইট বন্ধ করতে সাহায্য করে। সফটওয়্যারটির ফুল ভার্সন দিলাম।
Pass: 513462
যারা লজ্জায় কিছু বলতে পারেন না তারা শুধু সফটওয়্যার টি আপনার বন্ধুর কম্পিউটারে ইন্সটল করে দিবেন।
আরেকটা পদ্ধতি আছে। এই পদ্ধতিতে কোন সফটওয়্যার লাগে না। DNS Server এড্রেসে কিছু কাজ করতে হয়। খুবি সহজ। এই ভিডিও টা দেখলেই বুঝবেন।
http://www.youtube.com/watch?v=1LF_0kDkFVg
কতো মানুষকে হয়রানি করিয়েছি এই ফেসবুক! বাংলাদেশের অর্ধেক মেয়েদের ফেসবুক আইডি ফেইক। তাছাড়া কতো সময় যে এই ফেসবুকে দিচ্ছি তার কোন হিসাব নেই। অনেককে দেখেছি ফেসবুক ছাড়া চোখে দেখে না।
ফেসবুক ব্যবহার করুন খুব ভালো জিনিষ কিন্তু বেশি করলে সমস্যা, আমি যখন এই পোস্টটা করছি তখনও ফেসবুকে লগিন করা ছিল। আমি চেষ্টা করি ফেসবুকের সঠিক ব্যবহার করার, আপনিও করুন।
ঐশী নাকি টিভিশো দেখে তার বাবা মাকে খুন করার পদ্ধতি শিখেছে। এটা অনেক বড় ক্রাইম যা সচরাচর হয় না কিন্তু ছোট ছোট কিছু অপরাধ যেমন কিডন্যাপ, ছিন্তায় এসব অহরহ হচ্ছে। এসবের সাথে প্রযুক্তির লিংক আছে। আমি অনেক অনেক ঘটনা শুনেছি যে পুরাতন জিনিষ বিক্রির অনলাইন অ্যাড দেখে সে জিনিষ কিনতে গিয়ে লুটপাট হয়েছে। মোবাইলেও এই ক্রাইমটা হয়।
যাই হউক, এইসব বিষয় এড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার সচেতনতা। একটু সচেতন হলেই এসব থেকে বাচতে পারবেন।
দেখিতো কিভাবে যে রাতের পর রাত গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে, এটাও দেখি যে কিভাবে এক নজরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গেম খেলি (এটা আমি নিজে করি)। আমি এগুলো করতে মানা করছি না, একটু কম করে পড়াশুনা একটু বেশি করলে কি ভালো হয় না! (বাপ-মায়ের মতো কথা বললাম :-D)
কম্পিউটার এবং মোবাইল গেমস আমাদের মনুরঞ্জন করে। কিন্তু কিছু ছেলে মেয়ে আছে যারা গেমস ছাড়া চোখে আর কিছু দেখে না। না দেখতে দেখতে একদিন সত্যি চোখে চশমা দিতে হয়। গেমস চোখের অনেক ক্ষতি করে। দেখেন গেম পাগলারা লাঠি নিয়া দারাইসে 😀 গেম তো আমিও খেলি, তাই বলে কি সারাদিন গেম খেলতে হবে।
কেউ কেউ বলবেন যে "আমি তো কাউকে সারাদিন গেম খেলতে দেখিনি"। ভাই আমি দেখেছি তাই বলছি। বাবা মায়ের একটু সচেতন হওয়া দরকার, আমাদের শরীর মন ভালো রাখতে খেলাধুলা অনেক দরকার (কম্পিউটারে না, মাঠে :D) বাইরের বাতাস শরিরের জন্য উপকারি। যারা ঘরে বসে থাকে তারা আমার কথা খুব সহজেই বুঝেছে। তাই অন্যরা 10Son করবেন না।
যারা আমার উপর রেগে আছে এই মনে করে যে আমি অনেক ফালতু কথা বলেছি তাদেরকে বলছি। ডাক্তার বলে বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাবে, ডাক্তারের আদেশ মানার কিছুদিন পর একই ডাক্তার আবার বলে যে সকালের নাস্তা বন্ধ, মানে বেশি মোটা হয়ে গিয়েছেন। প্রযুক্তির ব্যবহার অনস্বীকার্য কিন্তু কিছু কিছু কাজ আছে যা প্রযুক্তি দিয়ে করা যায়। এক বড় ভাইয়ের মুখে শোনা ঘটনা,
"এক লোকের দাতে ব্যাথা সে গুগলে সার্চ দিলো এবং বলল তার মাড়ি ফুলে গেছে, গুগল তার লক্ষন দেখে একটা রোগের নাম বলল যে রোগ হলে নাকি ব্রাইনের অনেক ক্ষতি হয়। ভদ্রলোক তো ভয়ে মরছে, তারপর তিনি এক ডাক্তারের কাছে গেলেন ডাক্তার বললেন এটা কিছু না আপনার আক্কেল দাত উঠতেছে 😀 " দেখুন এবার গুগলকে বুঝিয়ে না বলতে পারলে এমন সমস্যাই হয়। তাই কিছু কিছু বিষয়ে এতো বেশি প্রযুক্তির দিকে যাবেন না।
বলতে গেলে অনেক গুলা কমন কথা বলা যায়রে ভাই মোবাইলে কথা বলা আর গাড়ি চালানো, ক্লাসে বসে মোবাইলে কথা বলা ইন্টারনেট ব্যবহার করা আরও অনেক কিছু। এতো কথা বললাম না।
প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে আর অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে, কিছুই নিতে পারত না যদি আমরা ভালো করে ব্যবহার করতে পারতাম। খারাপ দিক না থাকলে ভালোর মর্যাদা আমরা বুঝতাম না। তাই সব জিনিষেরই কিছু খারাপ দিক আছে আর শুধু ভালো দিকটা ব্যবহার করলে সব সমস্যা সমাধান। বিজ্ঞানে কোন রস নেই, আমরা চাইলেই এই কথাটি মিথ্যা বানাতে পারি।
ছোট মুখে অনেকগুলো বড় কথা বললাম, ভুল হলে দয়া অরে মাফ করবেন, প্রযুক্তির খারাপ দিক এবং তা থেকে উত্তরনের কোন পথ জানা থাকেল মন্তব্যে বলুন। আপনার ক্রেডিট দিয়ে আমি তা টিউনে অ্যাড করবো।
দয়া করে খারাপ মন্তব্য করবেন না!
সময় পেলে ঘুরে আসবেন আমার ব্লগে।
আমার আরেকটা টিউন, দেখে আসুন ভালো লাগবে।
আমি সোহাগ মিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 82 টি টিউন ও 694 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 32 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সোহাগ। টেকনোলজির প্রতি চরম আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও পড়েছি বিজনেস নিয়ে। একটু একটু গাইতেও পারি, মাঝে মাঝে গীটার বাজাই। এক কথায়, টেকনোলজির সাথে প্রেম করি আর গানকে বিয়ে করেছি :D । আমার ইউটিউব চ্যানেল। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমার ব্লগে। আমার গাওয়া গানগুলো শুনতে ভিসিট করুন: গানের ইউটিউব...
ri8