সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নের একটিঃ আপনার প্রত্যাশিত বেতন কত?

আপনি লিখিত পরীক্ষায় টিকেছেন, সামনে আপনাকে মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে; এক্ষেত্রে যে প্রশ্নগুলোর উওর নিয়ে আপনি সব চেয়ে বেশি চিন্তিত তার মধ্যে একটি হল “ আপনার প্রত্যাশিত বেতন কত?”। এখন অবশ্য দেখা যায় অনলাইন আবেদনের ক্ষেতে ‘প্রত্যাশিত বেতন’ এই ঘরটি থাকে। বেসরকারি প্রায় প্রতিটি চাকরিতেই এখন এই প্রশ্নটি করা হয়। এটি কঠিন কারণ এর উত্তর অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে দিতে হয়। যদি বেতনের পরিমাণ খুব কম বলেন তাহলে একদিকে আপনার কম টাকা পাবার সম্ভাবনা থাকে আবার ভাল চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগ দাতা হয়ত আপনার সম্পর্কে নিচু ধারণা পোষণ করতে পারে। আবার বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি বললে নিয়োগ দাতা যাকে কমে পাবে তাকে নিয়ে নিবেন অর্থাৎ আপনি বাদ পরে যাবেন। তাই এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর দানের জন্য আপনাকে পূর্বে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে?

বিভিন্ন ক্যারিয়ার কোচদের মতে এই প্রশ্নটির উত্তর দানের ক্ষেত্রে নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত-
কোন ভাবেই প্রশ্নটি শুনে ঘাবড়ে যাবেন না। আগে থেকেই মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। প্রথমে আপনার যোগ্যতার দিকে নজর দিন। আপনার যোগ্যতার একজন কত টাকা বেতন পাচ্ছে সেই সম্পর্কে খুঁজ খবর নিন। প্রত্যাশিত চাকরিটির ব্যাপারে কিছু গবেষণা করুন। প্রয়োজনে আপনার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, ও সিনিয়র ভাইদের সাথে বেতনের ব্যাপারে আলোচনা করুন। আপনি কত চাচ্ছেন সেটার উপর গুরুত্ব না দিয়ে বরং আপনার সম পরিমান যোগ্যতায় মার্কেট কত টাকা বেতন দেয় সেটার উপর গুরুত্ব দিন। আপনি যে পরিমাণ বলবেন তা যেন ঐ সময়ের মার্কেট রেট থেকে বেশি পার্থক্য না হয়। প্রত্যাশিত চাকরিটি কোন ইন্ডাস্ট্রির, এটি কোথায় অবস্থিত এই বিষয় গুলো খুজ নিন। কেননা ঝুঁকি পূর্ণ ও কম ঝুঁকি পূর্ণ এই বিষয়টি যেমন বেতন নির্ধারণে ভূমিকা রাখে তেমনি লোকেশনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একই পজিশনে ঢাকায় হলে এক বেতন আবার রাঙামাটিতে আর একরকম বেতন। আর্থিক ব্যাবসায় জড়িত প্রতিষ্ঠানে (ব্যাংক, লিজিং কোম্পানি, ইনসিওরেন্স কোম্পানি) এক ধরনের বেতন আবার সরাসরি পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানে আর এক ধরনের বেতন। সাধারণত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফ্রেশারদের বেতন অনেক বেশি থাকে অন্যান্য সেক্টরের তুলনায়। চাকরি দাতা কি চাচ্ছে সেটা বুঝার চেষ্টা করতে হবে। ভাল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখা যায় যোগ্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণকে বিবেচনা করে না আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যাকে কম বেতনে পাবে তাকেই নিয়ে নিবে। অবশ্যই আপনার অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রাখতে হবে। আপনার ভাল অভিজ্ঞতা থাকলে দর কষাকষিতে আপনি এগিয়ে থাকবেন । আবার কোন অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনার বারগেনিং পাওয়ার কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক । আপনাকে অবশ্যই ভালভাবে জানতে হবে আপনি কোন পদের জন্য আবেদন করেছেন। প্রয়োজনে নিয়োগ দাতাকে প্রশ্ন করতে পারেন।

ফাইনালি কি উত্তর দিবেন এবং কিভাবে দিবেন?

সরাসরি ইন্টারভিউ বা মোবাইলে ইন্টারভিউর ক্ষেত্রেঃ কখনই নির্দিষ্ট অংক বলবেন না ।যেমন, ১৫০০০/২০০০০/৩০০০০/৪০০০০ টাকা। বরং রেঞ্জ বলবেন। যেমনঃ ১৫০০০ থেকে ২০০০০ টাকা বা ৩০০০০-৩২০০০টাকা বা ৪৫০০০ থেকে ৫০০০০ টাকা। রেঞ্জ বলার ক্ষেত্রে নিচের অংকটি এমন পরিমাণ বলবেন না যেটাতে আপনি খুশি নন। ধরে নিবেন, নিয়োগ দাতা নিচের রেঞ্জটিই আপনাকে দিবে। আগে থেকে বলার অভ্যাস করুন এবং দৃঢ় ভাবে বলার চেষ্টা করুন। অনেকে দেখা যায় টাকার পরিমাণ বলার ক্ষেত্রে সংকোচ বোধ করেন বিশেষ করে পরিমাণটা যদি খুব কম বা বেশি হয়। অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আপনি এমনি এমনি কোন কাজ না করে টাকা নিবেন না। যা নিবেন তা পরিশ্রমের বিনিময়ে নিবেন। আপনি বর্তমানে অন্য প্রতিষ্টানে কর্মরত থাকলে নিয়োগ দাতা সেখানকার বেতন সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে। তাই নতুন চাকরিতে বেতন বলার ক্ষেত্রে আগের চাকরির বেতনের চেয়ে ১০% থেকে ১৫% বেশি বলবেন। প্রত্যাশিত চাকরিটির বিষয়ে আপনার কোন ধারণা না থাকলে নিয়োগ দাতাকে প্রশ্ন করুন, তাদের রেঞ্জ কত?

ই-মেইলে সিভি পাঠানোর ক্ষেত্রে ঃ কখনই প্রশ্নটিকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করবেন না।
লিখতে পারেন, “আমার গবেষণা ও অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যাচ্ছে এই পদের জন্য যৌক্তিক বেতন হতে পারে ৩৫০০০ থেকে ৪০০০০ টাকা। যাহোক, বেতন নির্ধারণে অনেক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যেমন সহকর্মী কে হবে, কি কাজ করতে হবে, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করতে পারব কিনা ?” । যদি মনে করেন এই মুহূর্তে বেতন বলা ঠিক হবে না তাহলে লিখে দিবেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে ।

আজ এই পর্যন্তই। আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই লিখতে ভুলবেন না।

লেখাটি পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে ব্যবসায় ও অর্থণীতি ব্লগ BConnect

Level 0

আমি Md. Mustafizur Rahman। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 91 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ধন্যবাদ……………………………:)

    @মুহাম্মাদ ইউসুফ: Nice tips but use is important. Thanks for comment

জব লাইফ নিইয়ে খুব ভালো ১ টা টিউন করছেন। ধন্যবাদ

    @রাহাতুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ

Level New

Vai apnar fb id ta dan.

Level 0

ধারুন হয়েছে ভাই । কাজে লাগবে।

    @Mosarof_BD: আপনার কাজে লাগলে লেখা সার্থক। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য

Nice.

সুন্দর লিখেছেন!!!

Level 0

Very very very… Likhlam na.

ঠিক বলেছেন…….