আপনি কি ভাল মত পড়ালেখা করতে চান ???? আপনার জন্য সঠিক নিয়মে পড়ালেখা করার উপায়;[ PART 2]

আসসালামুআলাইকুম। আশাকরি সবাই ভালো আছেন।এর আগে আমি এই বিষয় নিয়ে এক টি টিউন করেছিলাম,ভাব্লাম নতুন আর ও কিছু দেই...............

আমাদের অনেকেরই মনে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আর সেটা হলো, আল্লাহ আমাকে কম ব্রেন দিয়েছেন আর অন্য একজনকে বেশি ব্রেন দিয়েছেন। কিন্তু এটি আসলে সঠিক নয়। মহান আল্লাহ সবাইকেই একই ব্রেন বা শরনশক্তি দিয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন হলো: কেউ পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করে আবার অন্যজন খারাপ রেজাল্ট করে কেন? আসলে এর মূল কারণ হলো পড়ার ধরণ এবং পরিবেশ।

আমরা সবাই পরীক্ষাকে একটু অন্য চোখে দেখি। করো কাছে আবার পরীক্ষা দুই চোখের বিশ। কিন্তু পরীক্ষা নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো মেধা যাচাই করা। আমি এখন যে পোস্টটি করছি আমার বিশ্বাস আপনাদের সবার কাজে আসবে। আপনারা হয়ত শিরনাম দেখেই বুঝতে পেরেছেন। আমি আশা করি সবধরনের পরীক্ষার জন্যই আমার এই পোস্টটি উপকারী হোক সেটি স্কুল পরীক্ষা বা কলেজ পরীক্ষা বা নিয়োগ পরীক্ষা।
যা হোক অনেক্ষন ধরেই বকবক করলাম। এবার আসুন আসল কথায় আসি। পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের জন্য যদি আপনি নিম্নের টিপসগুলো নিয়মিত অনুসরণ করেন তাহলে ইনসাআল্রাহ আপনার পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হবে।

    আপনার পাঠের পরিবেশ:

১. যেখানে আপনি পড়তে কমফোর্ট ফিল করবেন, সেখানেই পড়বেন। সবসময় একই জায়গায় বা পরিবেশে পড়ার চেষ্টা করবেন।

২. এমন জায়গায় পড়তে বসুন যেখানে আপনি সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারবেন।

৩. পড়ার সময় টিভি, রেডিও, কম্পিউটার, মিউজিক প্লেয়ার অফ রাখুন অথবা এগুলো থেকে দূরে নিরব স্থানে পড়তে বসুন।

    আপনার পস্তুতি এবং আমার পরামর্শ:

১. আপনাকে আপনার পরীক্ষা সম্পর্কে স্পষ্ট ধরণা রাখতে হবে।

২. পরীক্ষার আগেই আপনাকে পরীক্ষার সিলেবাস ভিত্তিক বিষয়, প্রশ্ন কাঠামো এবং নম্বর বন্টন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। তখনই আপনি আপনার প্রস্তুতি কতটুকু যথার্থ হয়েছে তা উপলব্ধি করতে পারবেন।

৩. পড়াশোনার জন্য সর্বোত্তম এবং সর্বোচ্চ সময়টুকু আলাদা করে বাকি সময়ে অন্যকাজ কর্ম খাওয়া-দাওয়া, ঘুম সহ প্রাত্যহিক কাজ সেরে ফেলবেন।

৪. অতিরিক্ত পড়া উচিত নয়। এতে মস্তিষ্কের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। মস্তিক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মস্তিক পড়া মেমোরাইজ করতে পারে না।

৫. পড়ার সময় একটি টার্ম শেষ না করে হুট করে অন্যটায় চলে যাবেন না।

৬. কখনোই শুয়ে শুয়ে পড়বেন না

৭. পড়ার সময় ভারি খাবার গ্রহন করবেন না।

৮. একটানা এক ঘন্টা পড়ার ভেতর ৫-১০ মিনিট বিরতি নিয়ে আবার পড়া শুরু করুন। এতে মস্তিষ্কের ওপর চাপ সৃষ্টি হয় না।

৯. পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন: পেন্সিল, কলম, ক্যালকুলেটর, অ্যাডমিট কার্ড, টাকা ইত্যাদি) আগে থেকে প্রস্তুত করে রেখে দিন।

১০. পড়ার সময়টাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে পরিকল্পনা মতো পড়ুন।

১১. পরীক্ষা শুরুর আগে দিনগুলোতে খুব বেশি করে পড়তে যাবেন না, যদি যখার্খ প্রস্তুতি থাকে।

১২. যেকোন প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, ভারসিটিতে পড়ুয়া বড় ভাই বা আপুর সাহায্য ও পরামর্শ নিন।

১৩. ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঐ দিনের পড়াগুলোর উপর একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

১৪. পরীক্ষার আগের দিন রাত জেগে পড়বেন না।

১৫. আপনার চারপাশের সামান্য বিষয় বা ঘটনা আপনার মনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। তাই পড়ার সময় মোবাইল ফোন, গল্পগুজব, সংবাদ পত্র, ম্যাগাজিন ইত্যাদি থেকে দুরে থাকুন।

১৬. পড়ার টাইমটেবিল এমন ভাবে প্রস্তুত করুন, যেন পরীক্ষার আগে রিভিশনের যথেষ্ট্য সময় থাকে।

    আপনার খাবার:

১. আপনাকে পরীক্ষার প্রস্তুতীর সময় খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। কেননা জীবণুযুক্ত খাবার আপনার অসুখের কারণ হতে পারে এবং পরীক্ষাকে বাধা গ্রস্ত করতে পারে।

২. পুষ্টি যুক্ত খাবার গ্রহন করুন। সতেজ ফলমুল খাবাব খাবেন এবং পর্যাপ্ত পরিমান পানি পানকরুন।

৩. খাবার গ্রহন করার সময় পড়বেন না।

৪. ফুটপাতের ধুলাবালি ও জীবাণুযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।

৫. পরীক্ষার আগে কখনই বেশী করে চা বা চা-কফি বা ফিজি জাতীয় খাবার (যেমন: কোকাকোলা বা টাইগার) খাবেন না।

৬. বিভিন্ন কুসংস্কার যেমনঃ পরিক্ষা দেওয়ার আগে ডিম খাওয়া উচিত নয়, এগুলো কুসংস্কার থেকে দুরে থাকুন। ডিম খেলে আপনি যেমন শারিরীক দিক থেকে শক্তি পাবেন তেমনি মানসিক দিক থেকেও শক্তি পাবেন। অতএব ডিম খাবেন। এতে কোন সমস্যা নেই।

৭. দুধ পান করুন। এতে মানসিক ও শারিরীক বল পাওয়া যায়।

আপনার বিশ্রাম ও ঘুম:

১. পরীক্ষার আগে ও চলাকালে নিয়ম করে ৬ ঘন্টা ঘুমাবেন। মনে রাখবেন পর্যাপ্ত ঘুম আপনার পড়াকে মেমোরাইজড করতে সাহায্য করে।

২. উদ্বেগের কারণে ঘুম না হলে কখনোই ঔষধ (ঘুমের ঔষধ) খাবেন না।

৩. ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিজেকে টেনশন মুক্ত করে প্রশান্ত মনে ঘুমাতে যাবেন।

৪. দু-এক দিন ঘুম কম হলেও এত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

অভিভাবকের যেসব দায়িত্বঃ

    ১. পরীক্ষার সময় আপনার সন্তানকে যত্নের ভিতর রাখুন।

    ২. আপনার সন্তানকে বেশী রাত জাগতে দেবেন না।

    ৩. তাকে পড়াশোনা ব্যাতিত অন্যকাজ করতে দেবেন না। বিশেষ করে পরীক্ষা চলাকালীন।

    ৪. পরীক্ষার দিন তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন: পেন্সিল, কলম, ক্যালকুলেটর, অ্যাডমিট কার্ড, টাকা ইত্যাদি) গুছিয়ে রাখুন।

    ৫. পরীক্ষা খারাপ হলে তাকে বকাঝকা করবেন না। বরং তাকে আশ্বাস দিন এবং পরবর্তী পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার জন্য তাকে উৎসাহ দিন।

    ৬. আপনার সন্তান যেন পরীক্ষা নিয়ে অতিরিক্ত মানসিক চাপ না নেয় সে বিষয়ে সচেতন থাকবেন।

    ৭. আপনার সন্তান যেন সুন্দর পরিবেশে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারে এ বিষয়ে আপনি সচেতন থাকুন।

    পরীক্ষার দিনে যা করবেনঃ

১. পরীক্ষার দিন নিজেকে রিল্যাক্স মুডে রাখতে চেষ্টা করুন। অস্থির হবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন।

২. বাসা থেকে বের হওয়ার আগে দেখে নিন আপনার অ্যাডমিট কার্ড সহ আপনার প্রয়োজনীয় সকল জিনিষ পত্র সঙ্গে নিয়েছেন কী না।

৩. পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষার হলে একটু আগে ভাগে রওনা দিন। কারণ পরীক্ষার জন্য রোল নম্বর খুজতে সময় পাওয়া যাবে।

৪. পরীক্ষা শুরুর আগে কীভাবে কতসময়ের ভেতর পরীক্ষা দেবেন তার একটা পরিকল্পনা করে নিন।
পরীক্ষার সময় বা হলে যা করবেনঃ

১. একটি প্রশ্নের উত্তর করার সময় কোন ক্রমেই অন্য প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না।

২. যেহেতু পরিক্ষার হলে সময় খুব অল্প, তাই প্রথম দিকে জানা প্রশ্নের উত্তর দিন।

৩. লুজশিট নেওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল করবেন লুজশিটে ক্লাস শিক্ষকের সাক্ষার দেওয়া আছে কী না।

৪. লেখার সময় বানান শুদ্ধ করে লেখার চেষ্টা করবেন।

৫. লেখা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে লিখবেন, এতে করে নম্বর বেশি পাওয়ার সম্ভনা থাকে।

৬. প্রশ্নে ভুমিকা, বর্ণনা এবং উপসংহার সহকারে লেখা উচিত, এর ফলে সম্পূর্ণ নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৭. পরিক্ষার খাতায় বিভিন্ন শব্দ যেমনঃ PTO লেখা উচিত নয়। এতে করে শিক্ষক কম নম্বর দিতে পারে।

৮. লেখার লেআউট সঠিক রাখার চেষ্টা করবেন।

৯. ভদ্রতা বজায় রাখুন।

১০. নকল করা বা অন্যের দেখা, কারো সাথে কথা বলা ইত্যাদি বদ অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন। কারণ এর ফলে পরিক্ষা থেকে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

১১. একজাম পেপার জমা দেওয়ার আগে দুতিনবার দেখে নিন কোথাও কোন ভুল-ত্রুটি আছে কি-না।

১২. খাতায় অবশ্যই মারজিন ব্যবহার করবেন এবং মারজিনের বাহিরে কোন কিছু লিখবেন না।

১৩. প্রশ্ন লেখার পূর্বে নম্বর লিখুন যেমনঃ ১ নং প্রশ্নের ক নং উত্তর। এটি অধিকাংশ শিক্ষকরাই পছন্দ করে।

    পরিক্ষার আগে ও পরে যে সকল কাজ করা উচিত নয়ঃ

১. অভ্রতা পরিহার করুন।

২. অশ্লিল কাজ থেকে বিরত থাকুন। অশ্লিল কাজ কর্ম শারীরিক ক্ষতি করে এবং পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটায়।

৩. নকল করা, দেখা-দেখি করে লেখা বা পরীক্ষার সময় কারো সাথে কথা বলা উচিত নয়। এতে পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় এবং পরীক্ষা থেকে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪. প্রশ্ন পত্র আউট হলে সেই প্রশ্ন পত্র পড়ে পরীক্ষা দেওয়া উচিত নয়। এতে আপনি কিছু শিখতে পারলেন না। ফলে আপনি শুধু নামে শিক্ষিত হবেন কিন্তু বাস্তবে আপনি কোন শিক্ষা অর্জন করতেই পারেন নি। এতে করে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীত হতে পারেন।

৫. শিক্ষকদেরকে ঘুষ বা হুমকি দিয়ে পরিক্ষায় ভাল রেজাল্ট করা উচিত নয়। এতে করে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীত হতে পারেন।

৬. ধুমপান বা যে কোন ধরণের মাদক পরিহার করুন। এতে করে সমাজিক পরিবেশ নষ্ট হয় এবং পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটায়।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কীভাবে পড়ালেখা করলে বা কী ধরনের নিয়ম অনুসরন করে পড়ালেখা করলে পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হবে। যদি এই টিউনটি কারো উপকারে আসে তাহলে আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। আর যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে বা কোন কিছু না থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টস করে আমাকে জানাবেন। ভাল লাগলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না যেন। সবাই ভাল থাকবেন।
ধন্যবাদ,

Level New

আমি MASHUK RAHMAN। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 57 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

কি বলব আর...।। আমি কিছহুই জানি না,শিক্তেসি


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

Nice and helpful tunes

Hm, nice post…. carry on..

Level 0

tnkx kaje vlaganor chesta korbo

priyote nilam
nice and kajer post amar lagbe

ধন্যবাদ খুব কাজের টিপস
কিন্তু ডিম খামুনা :p

থ্যাংকু থ্যাংকু 😀
অনেক ঘেটেঘুটে এখানে পেলাম। আরেকটা পেয়েছি মুক্তমঞ্চ নামের একটা সাইটে।
http://muktomoncho.com/archives/1504

অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপনের জন্য। সঠিক নিয়মে পড়ালেখা করলে খুব সহজেই যেকোনো বিষয় আয়ত্মে আনা যায়, কষ্ট করে দিনরাত নিয়ম ছাড়া পড়ে যেটা সম্ভব হয়ে উঠে না।