আপনি এখন ডিজিটাল যুগে বসবাস করছেন তাই এখন আপনার হাতের মুঠোয় মোবাইল, কম্পিউটারের মতো উন্নত প্রযুক্তি এসে পৌঁছেছে। শুধু আপনার ক্ষেত্রে নয় বরং গোটা বিশ্ব এখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। আর এই সব অনলাইন নির্ভর মানুষদের নিকট কোনো ব্যবসা বা প্রোডাক্ট সেল করার জন্য অবশ্যই আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা উচিত।
ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুলোতে যখন কোনো ব্যবসা বা প্রোডাক্ট এর প্রচার করা হয় তখন তাকে বলা হবে ডিজিটাল মার্কেটিং। যেমন আপনি ফেসবুক ব্যবহার করার সময় বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপণ দেখেন। তো ফেসবুকে এই বিজ্ঞাপণ দেখানোর পদ্ধতিটাই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।
আর ফেসবুকের মতো যতগুলো অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম আছে সেগুলোতে মার্কেটিং করার প্রক্রিয়া হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ। যার মাধ্যমে আপনি খুব কম খরচে ও কম সময়ে আপনার ব্যবসার প্রচার করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, সময় যতো অতিবাহিত হবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা ঠিক ততোটাই বৃদ্ধি পাবে। কারণ আমরা মানুষরা এতোটাই অনলাইনে সময় ব্যয় করছি। যার কারণে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি গুলো এখন তাদের পন্য সেল করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংকে বেছে নিয়েছে।
একটু ভেবে দেখুন, আপনি দৈনিক ২৪ ঘন্টার মধ্যে মোট কত ঘন্টা অনলাইনে একটিভ থাকেন। নিশ্চই ২ ঘন্টা থেকে ৪ ঘন্টা তো হবেই। আবার এমন অনেকেই আছেন যারা দৈনিক ১০-১২ ঘন্টা বা তারও বেশি সময় অনলাইনে একটিভ থাকে।
এখন ধরে নিন যে, আপনার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। এখন আপনি যদি সেই ব্যবসার প্রসার করার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে প্রচার করেন তাহলে আপনি খুব দ্রুত আপনার টার্গেট করা কাস্টমার এর নিকট আপনার বিজ্ঞাপণ পৌঁছে দিতে পারবেন।
তবে শুধুমাত্র অনলাইনে একটিভ ইউজার থাকার কারণেই যে ডিজিটাল মার্কেটিং করা উচিত বিষয়টা এমন নয়। বরং আরো অনেক বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলোর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এতোটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর সেগুলো নিচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর যাবতীয় কাজ গুলো আপনি অনলাইনে করতে পারবেন। যার কারণে মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে আর ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে মার্কেটিং করলে একদিকে আপনার সময় বাঁচবে অন্যদিকে কম পরিশ্রম করতে হবে।
আপনারা যারা স্বল্প পরিসরে নিজের ব্যবসা দাড় করাতে চান তাদের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সবচেয়ে হেল্পফুল হবে। কারন যখন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন তখন আপনি আপনার চাহিদা মতো অর্থ খরচ করে মার্কেটিং করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে যদি আপনি মাত্র ০১ ডলার খরচ করে মার্কেটিং করতে চান তাহলেও আপনার কোনো অসুবিধা হবেনা।
দেখুন ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে অবশ্যই আপনাকে দক্ষ হতে হবে। কিন্তুু এই মার্কেটিং করার সব কাজ আপনাকেই করতে হবে বিষয়টা এমন নয়। কারণ, আপনি চাইলে স্বল্প কিছু অর্থের বিনিময়ে দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করতে পারবেন। যারা আপনার হয়ে মার্কেটিং করার সকল কাজ সুনিপুনভাবে করতে পারবে।
মনে করুন আপনার একটি জুতার দোকান আছে এখন আপনি আপনার জুতা বিক্রির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান। এখন যদি আপনি গুগল কিংবা ফেসবুকে এসে মার্কেটিং করেন তাহলে তারা এই বিজ্ঞাপণ শুধুমাত্র তাদের নিকট পৌঁছে দিতে পারবে যারা সত্যি সত্যিই জুতা ক্রয় করতে চাচ্ছে।
কারণ, আমরা অনলাইনে যেসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করি তারা আমাদের ডেটা গুলো নিজের কাছে সংগ্রহ করে রাখে। যার কারণে কোনো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই তার টার্গেট করা কাস্টমারদের নিকট বিজ্ঞাপণ পৌঁছে দিতে পারে। আর এই বৈশিষ্ট্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং করতে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে আমরা এখন অধিকাংশ মানুষ অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একটিভ থাকি। হয়তবা কেউ ফেসবুক ব্যবহার করি, আবার কেউ কেউ ইউটিউব কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করি। তো এই যে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউজার আছে তাদের মধ্যে থেকে আপনি খুব সহজে আপনার টার্গেট করা কাস্টমারদের খুঁজে নিতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও অতীতে মার্কেটিং এর যাবতীয় কাজ গুলো অফলাইনে করা হতো। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং করার আগে আপনাকে অফলাইন মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর পার্থক্য জেনে নেওয়া উচিত।
বৈশিষ্ট্য | অফলাইন মার্কেটিং | ডিজিটাল মার্কেটিং |
মার্কেটিং করার মাধ্যম | রেডিও, টেলিভিশন, বিলবোর্ড, ব্যানার, টিউনার ইত্যাদি। | ইন্টারনেট (ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট ইত্যাদি)। |
খরচের পরিমান | অফলাইন মার্কেটিং এর খরচ বেশি হয়। | ডিজিটাল মার্কেটিং এর খরচ তুলনামূলক কম হয়। |
ডেটা সংগ্রহ | গ্রাহকদের সকল ডেটা সংগ্রহ করা অনেক কঠিন কাজ। | খুব সহজে গ্রাহকদের ডেটা সংগ্রহ করা যায়। |
কাজের গতি | অফলাইন মার্কেটিং এর কাজ অনেক সময়সাপেক্ষ। | খুব দ্রুততার সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়। |
মার্কেটিং পরিসীমা | নির্দিষ্ট অঞ্চলে মার্কেটিং করা যায়। | গোটা বিশ্বব্যাপী মার্কেটিং করা যাবে। |
ব্যবসার পরিধী | ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মার্কেটিং করা অনেক কঠিন হয়ে যায়। | ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবে। |
আমরা সবাই জানি যে, ডিজিটাল মার্কেটিং করার অনেক সুবিধা আছে। কিন্তুু আপনি কি জানেন ডিজিটাল মার্কেটিং করার বেশ কিছু অসুবিধা আছে? হয়তবা সুবিধার কথা গুলো অনেকে জানলেও অসুবিধার কথাগুলো আমরা অনেকেই জানিনা। তো সে কারণে এবার আমি আপনার সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলো তুলে ধরার চেস্টা করবো।
যদিওবা ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধার তুলনায় অসুবিধার পরিমান খুবই কম। তবুও নতুন ব্যক্তি হিসেবে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান তাদের এই বিষয় গুলো জেনে রাখা দরকার।
বর্তমান সময়ে আপনার মতো এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান। তো তাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যাবে। আর যারা আসলে এমন প্রশ্ন করেন তাদের বলবো, আপনি বিভিন্ন উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন। যেমন,
বর্তমানে গুগলে এমন অনেক ধরনের ব্লগ ও ওয়েবসাইট আছে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন শেয়ার করেছে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি পড়তে ভালোবাসেন তাহলে সেই ব্লগের লেখা পড়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
ইউটিউবে এখন অনেক চ্যানেল আছে যারা ভিডিও টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখায়। সেক্ষেত্রে আপনি সেই চ্যানেলে থাকা টিউটোরিয়াল গুলো দেখে খুব সহজে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর দক্ষ ব্যক্তিরা বিভিন্ন ধরনের কোর্স সেল করে। তো আপনি চাইলে তাদের কোর্স গুলো কিনে নিজের ঘরে বসে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
স্কুল, কলেজ থেকে যেভাবে শিক্ষা অর্জন করা যায় ঠিক তেমনি ভাবে আইটি ইনস্টিটিউট থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যাবে। আর আপনি আপনার এলাকার আশেপাশে কিংবা শহরের আইটি ইনস্টিটিউট থেকেও এই দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে গেলে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়ের দরকার হয়। ঠিক তেমনিভাবে যখন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে যাবেন তখন আপনার যেসব বিষয়ের দরকার হবে সেগুলো হলো,
সব মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবে না। বরং এই মার্কেটিং প্রক্রিয়া শুধুমাত্র তারাই রপ্ত করতে পারবে যাদের মনে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা ও অনুশীলন করার জন্য প্রবল ইচ্ছা আছে। তাই আপনার মনে এক ধরনের জেদ তৈরি করুন, যেভাবেই হোক আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখেই ছাড়বেন।
বর্তমান সময়ে আমরা কেন ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবো তা নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও কিভাবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন সেই মার্কেটিং শেখার উপায় গুলো শেয়ার করা হয়েছে আজকের আর্টিকেলে।
তবে এরপরও যদি আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আরো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটি নিচে টিউমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আর এমন ধরনের অজানা বিষয় গুলো সহজ ভাষায় জানতে আমাদের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
আমি নিরঞ্জন রায়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 মাস 3 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।