ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের একটি অন্যতম শাখা। ফ্রিল্যান্সিং এক্সপার্টদের মতে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজ শিখলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আপনি নিশ্চিন্তে এই স্কিল কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারবেন৷ অর্থাৎ আপনার এই স্কিলটি একটা লম্বা সময় ধরে আপনার ক্যারিয়ারকে সাপোর্ট দিবে। আর এই সেক্টরের মার্কেট ভ্যালু অনেক বেশি। তাই এখান থেকে আয়ের নিশ্চয়তাও তুলনামূলক বেশি।
যারা ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে সত্যিই কাজ করতে আগ্রহী বা মোটামুটি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা আছে তাদের জন্য আজকের টিউনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই টিউনের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ শুরু করলে আপনি খুব সহজেই এক্সপার্ট হতে পারবেন৷ তাছাড়া আরও জানতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন শাখা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। আরেকটি প্রশ্ন অনেকের মাথায়ই ঘোরপাক খায় তা হলো ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে মাসে কতো টাকা আয় হবে? আপনাদের যাবতীয় সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন শেষ পর্যন্ত টিউনটি পড়লে।
তাহলে চলুন ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওপরে আপনার ক্যারিয়ার প্লান শুরু করা যাক।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজ শুরু করার আগে আপনাকে এই সেক্টরে সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারনা রাখতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং কিন্তু আসলে একটি বিষয় নিয়ে কাজ করে না। ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে। তো সবগুলো শাখা সম্পর্কে আপনার মোটামুটি ধারণা থাকলে আপনি সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে কোন বিষয়টি নিয়ে আপনার কাজ করা উচিত হবে। তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একদম উল্লেখযোগ্য কয়েকটি শাখা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে সবথেকে বেশি যে চাহিদা রয়েছে তা হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা সংক্ষেপে এসইও। মূলত সার্বিক দিক রিসার্চ করে কোনো ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম সারিতে নিয়ে আসার পদ্ধতি হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি সবথেকে ভালো রেসপন্স নিয়ে আসে।
সব কিছু মাথার ওপর দিয়ে গেল তাই না? আসুন আরও বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলছি। মনে করুন আপনি গুগল ক্রোম সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে কিছু একটা সার্চ করলেন। এই সার্চ ইঞ্জিন আপনার প্রশ্নের সাথে প্রাসঙ্গিক এমন কয়েকটি ওয়েবপেইজ ধারাবাহিক ভাবে আপনার সামনে তুলে ধরবে। আপনার মোবাইলে আসা ওয়েব পেইজ গুলোর মধ্যে সবার প্রথমের দিকে যে পেইজ গুলো আছে আপনি নিশ্চই ঐ ওয়েব পেইজে ঢুকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যটি সংগ্রহ করবেন।
এই যে ব্রাউজার বেছে বেছে প্রাসঙ্গিক ওয়েব পেইজ গুলোকে আগে নিয়ে এসেছে এর পেছনে নিশ্চয়ই কারণ আছে। সার্চ ইঞ্জিন কেন এবং কীভাবে ওয়েবসাইট গুলোকে একদম প্রথম সারিতে নিয়ে আসে সে বিষয় নিয়ে রিসার্চ করাটাই মূলত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর কাজ। এই রিসার্চ করার দক্ষতা থাকে বলেই একজন এসইও এক্সপার্ট খুব সহজেই কোনো ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন এর প্রথম সারিতে নিয়ে আসতে পারে।
সার্চ ইঞ্জিন এর মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটকে একদম প্রথম সারিতে নিয়ে আসাই মূলত সকল ওয়েবসাইট মালিকেের মূল উদ্যেশ্য। এজন্যই এসইও এক্সপার্ট হায়ার করে অনেক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এসইও এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে টপ লেভেলে নিয়ে আসতে সাধারণত ২ থেকে ৬ মাস সময় লাগে। এতোটা সময় নিয়ে কাজ করার মতো অবস্থানে থাকে না অনেক বড় বড় কোম্পানি। তাই তারা টাকার বিনিময়ে তাদের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের টপে নিয়ে আসে।
এই যে পেইড বিজ্ঞাপণ এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন এর প্রথম সারিতে নিয়ে আসার সিস্টেম এটাই মূলত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। নির্দিষ্ট চার্জ প্রদান করার ফলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইটকে একদম প্রথম সারিতে নিয়ে আসবে তাও আবার কোনো এসইও কোয়ালিটি ছাড়াই।
আর এই সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং সেক্টরের সকল টেকনিক্যাল বিষয় হ্যান্ডেল করার জন্য একদল ডিজিটাল মার্কেটার নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এরাই মূলত সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটার। এই সেক্টরেও কাজ পাওয়া ও আয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বর্তমানে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং পলিসি। সোস্যাল মিডিয়ায় কোনো কোম্পানির বা প্রতিষ্ঠানের পেইজ বা টিউন সম্ভাব্য দর্শক বা কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেয়াই হলো সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোস্যাল মিডিয়ার কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে এই পেইড বিজ্ঞান দেয়ার সুযোগ হয়। যারা এই বিজ্ঞানপন তৈরি করে এবং তা প্রচারের যাবতীয় কাজ করে তাদের বলা হয় সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটার।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে বর্তমানে সবথেকে জনপ্রিয় হলো ফেসবুক মার্কেটিং। এছাড়াও আছে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং ইত্যাদি।
বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে আরেকটি জনপ্রিয় শাখা হলো পে পার ক্লিক। পে পার ক্লিক হলো মূলত এমন এক ধরনের বিজ্ঞাপণ যেখানে সম্ভাব্য ক্রেতা যতোবার বিজ্ঞাপণ দেখবে সেই প্রতি ক্লিকের জন্য নির্দিষ্ট হারে পেমেন্ট করতে হবে। এখন কথা হলো পেমেন্ট কাদের করতে হবে? যে ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আপনি বিজ্ঞাপণ প্রচার করবেন ঐ ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে।
যেমন সোস্যাল মিডিয়ায় আমরা বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির বা প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপণ দেখি। এসকল বিজ্ঞাপণে দর্শক যতোবার ক্লিক করবে ততো বেশি এমাউন্ট ফি দিতে হবে ঐ সোস্যাল মিডিয়ার কর্তৃপক্ষকে৷ যে কোম্পানি বিজ্ঞানপন প্রচার করবে সেই কোম্পানি থেকে এই ফি সরবরাহ করা হবে।
কিন্তু এই যে বিজ্ঞাপণ দেয়ার টেকনিক্যাল প্রসেস এটা কে করবে? এই কাজটি করার জন্যই যে কোনো কোম্পানি একজন ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে। তাদের কাজ হয় কোম্পানি কোন ধরনের বিজ্ঞানপন দিতে চাচ্ছে, তাদের টার্গেট অডিয়েন্স কারা এসকল বিষয় জেনে একটি উপযুক্ত বিজ্ঞাপণ তৈরি করা। তারপর যে প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপনটি দিতে চাচ্ছে সেখানে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে বিজ্ঞাপনটি পাবলিশ করা।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের সবথেকে সহজ একটি শাখা হলো ইমেইল মার্কেটিং। ইমেইল এর মাধ্যমে কোনো কোম্পানির তথ্য সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়ার বিষয়টিই মূলত ইমেইল মার্কেটিং। তবে সাধারণত আমরা ব্যক্তিগত কাজে যেভাবে ই-মেইল ব্যবহার করি ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার ঠিক এমন নয়। এখানে কিছু টেকনিক্যাল বিষয় ও ট্রিকস ফলো করা শিখতে হয়।
ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন কোম্পানি অনলাইনে অথবা অফলাইনে ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে। তাই এই সেক্টরেও বর্তমানে ভালোই কাজের চাহিদা রয়েছে।
এ-তো গেলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একদম বেসিক কিছু সেক্টর সম্পর্কে আলোচনা। আসলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক সেক্টর রয়েছে। সবগুলো সেক্টর সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে লেখাটি অনেক বড় হয়ে যাবে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার খুব ভালো একটা এমাউন্ট আয় করার যে সেক্টর গুলো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সেই সেক্টর সম্পর্কেই আলোচনা করা হয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজে এক্সপার্ট হতে হতে আপনি আরও অনেক গুলো শাখার সাথে পরিচিত হবেন। তবে আপাতত উপরে উল্লিখিত যে কোনো সেক্টরে কাজ শুরু করাই ভালো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে তো জানা হলো। এখন কথা হচ্ছে এই সেক্টরে কাজ করতে চাইলে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে কী করতে হবে? ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চাইলে আপনি যে পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে কাজ শুরু করতে পারবেন তা ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
প্রথমেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন সেক্টরে আপনি কাজ করবেন৷ অর্থাৎ কোন সেক্টরে কাজ করার সক্ষমতা বা আগ্রহ আপনার মধ্যে রয়েছে। কেননা সবগুলো শাখায় আপনি একসাথে কাজ করতে পারবেন না। যে কোনো একটা স্কিলের ওপর আপনাকে দক্ষ হতে হবে। তবে আমি সাজেস্ট করি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন অর্থাৎ এসইও নিয়ে কাজ শুরু করাটাই বেটার হবে।
আপনি সবগুলো সেক্টর নিয়ে একটু ভালোভাবে রিসার্চ করে দেখতে পারেন যে কোন বিষয়টা আপনার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হচ্ছে। আমি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করতে বলছি কারণ অন্যান্য শাখায় কাজের ক্ষেত্রেও আপনাকে এসইও অনেকটা সাহায্য করবে। তাছাড়া এসইও এক্সপার্ট দের বর্তমানে অনেক বেশি মার্কেট চাহিদা রয়েছে।
ধরুন আপনার সিদ্ধান্ত নেয়া শেষ যে আপনি এসইও শিখবেন বা এসইও নিয়ে কাজ করবেন। অথবা অন্য যে কোনো সেক্টরে কাজ করবেন, এটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং তো আর আপনি এমনি এমনি করতে পারবেন না৷ এই বিষয়ে আপনাকে স্পষ্ট ধারনা রাখতে হবে, বিস্তর জ্ঞান অর্জন করতে হবে৷ তো আপনি কীভাবে এই সেক্টরে এক্সপার্ট হবেন?
প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি ফ্রি সার্ভিস গুলো কাজে লাগাতে পারেন। অর্থাৎ ইউটিউবে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের বিভিন্ন শাখার ওপরে অনেক টিউটোরিয়াল ভিডিও রয়েছে। এসকল ভিডিও দেখলে আপনি আপনার কাজের সেক্টর সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে ধারণা পাবেন৷ এভাবে মোটামুটি ধারণা নিয়ে আপনাকে আগাতে হবে পেইড কোর্স এর দিকে। আপনি যেহেতু আপনার কাজের সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই ধারণা ইতোমধ্যে পেয়ে গেছেন, তাই কোন কোর্স আপনার জন্য উপযুক্ত হবে তা বুঝতে সমস্যা হবে না।
এরপর অনলাইনে বা অফলাইনে একটি উপযুক্ত পেইড কোর্স করতে পারেন। এই কোর্স করার মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওপরে মোটামুটি ভালোই এক্সপার্ট হতে পারবেন। আসলে ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি সেক্টর যেখানে আয়ের সম্ভাবনা প্রচুর। তাই এসকল কোর্স ফ্রীতে পাবেন না বললেই চলে। তাই একটি পেইড কোর্স করে এর মাধ্যমে কাজের সকল প্রসেস সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে দক্ষ হতে পারবেন।
শেখার পাশাপাশি এই সেক্টরে টুকটাক কাজ শুরু করে দিতে হবে। সেই সাথে প্রচুর প্রাকটিস করতে হবে। তবে পেইড কোর্স করার আগে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে একটু যাচাই বাছাই করে নেবেন কিংবা এই বিষয়ে ধারণা রাখে এমন কারো সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে নেবেন। কেননা সকল পেইড ক্লাস কিন্তু সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয় না।
কাজ শেখা তো শেষ করলেন। এখন আপনি মোটামুটি ভালোই এক্সপার্ট। এই পর্যায়ে আপনাকে কাজের সন্ধানে নেমে পড়তে হবে। তবে শিখন কালীন সময়েই আপনার টুকটাক কাজ খুঁজে বের করে তা করা উচিত। অনেক সময় কোর্স শেষ হলে যাদের সাথে কাজ শিখেছেন তারাই আপনাকে কাজ ধরিয়ে দেবে বা কোনো পারমানেন্ট চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু এমন সুবিধা আপনার কোর্সের অন্তর্ভুক্ত না থাকলে তো অবশ্যই নিজে থেকে কাজ খুঁজে নিতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়েও কেউ কাজ পায় না এমনটা কখনও হতে দেখা যায় না। আপনি যেহেতু ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের কোর্স করে মোটামুটি এক্সপার্ট হয়েছেন তাই কাজ নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। শুধু একটু টেকনিক্যাল ভাবে কাজ খুঁজে বের করতে হবে। যে সকল মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ পাবেন তার একটি তালিকা দেয়া হলো।
ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং এর-ই একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। তাই আপনার সবথেকে বেস্ট অপশন হবে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে ঢুকে পড়া। এখানে আপনি নিজেকে ভালো ভাবে তুলে ধরতে পারলে অসংখ্য কাজের অফার পাবেন। সেই সাথে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে আয়ও তুলনামূলক অনেক বেশি।
ফাইবার, আপওয়ার্ক, পিপল পার আওয়ার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসে আপনি খুব সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন কাজ পাবেন। ভালো ক্লায়েন্ট ধরতে পারলে এবং তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারলে আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না।
বাংলাদেশের অনেক স্বনামধন্য কোম্পানি তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করছে। এসকল প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারলে আপনাকে আর ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে ঢুকতেই হবে না। আর একজন বাঙালি হিসেবে বাংলাদেশের কোম্পানি গুলোর মার্কেটিং করাটা আপনার কাছে তুলনামূলক সহজ লাগবে।
লোকাল মার্কেটে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ার ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত গ্রুপ গুলোতে নজড় রাখতে হবে। তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে এসকল কোম্পানির ওয়েবসাইটে নিয়মিত এনগেজড থাকতে হবে। একটু চেষ্টা করলে আপনি অবশ্যই লোকাল মার্কেটে বেশ ভালো এমাউন্ট এর কাজ পেয়ে যাবেন।
এতোক্ষণ তো গেল চুক্তিভিত্তিক কাজের কথা। এখন আসি চাকরির বিষয়ে। দেশি বিদেশি অনেক কোম্পানি তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য পারমানেন্ট ভাবে ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দেয়। সেক্ষেত্রে তারা মাসিক স্যালারির ভিত্তিতে ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে। বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে এমন চাকরির বিজ্ঞপ্তি আমরা প্রায়ই দেখতে পাই।
তাছাড়া বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজগুলো করিয়ে নেয়ার জন্যও মার্কেটার হায়ার করে। এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই আপনি যদি মনে করেন আপনার পারমানেন্ট আয়ের একটা নিশ্চয়তা প্রয়োজন তাহলে এই ধরনের কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিয়ে সরাসরি জবে জয়েন হতে পারেন। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের একটি নিরাপদ ভীত তৈরি হবে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং সেবার জন্য একজন পেশাগত ব্যক্তির থেকে বেশি ভরসা করে কোনো একটা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে। এক্ষেত্রে আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়ে উঠলে নিজেই একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আপনার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট তাদের কোম্পানির বা ব্যবসার মার্কেটিং করিয়ে নেবে। এক্ষেত্রে আপনার আয়ের পরিমান সব থেকে বেশি৷ হবে। তবে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবসা শুরু না করাই ভালো। কাজ করতে করতে যখন আপনি খুবই এক্সপার্ট হয়ে যাবেন, অর্থাৎ সব ধরনের পরিস্থিতি খুব সহজেই হ্যান্ডেল করার ক্যাপাসিটি হবে তখন একটি বিজনেস প্লান করা বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আপনি অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটার দের জন্যও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন। একবার বিজনেস রানিং হয়ে গেলে আপনাকে আর কাজ করতে হবে না। কাজ সংগ্রহ করে অন্য মার্কেটার এর মাধ্যমে শুধু কাজ করিয়ে নেবেন। আর বসে বসে প্রফিট গুনবেন।
আসলে ডিজিটাল মার্কেটিং যেহেতু একটি মুক্ত পেশা তাই এই কাজে কতো টাকা আয় হবে সেটা নির্ভর করবে পুরোপুরি আপনার দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা ও কাজ করার সময়ের ওপরে। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর আয় সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারনা দেয়া যেতে পারে। তবে এটি আসলে একটি গড় হিসাব।
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে যারা কাজে নামে তারা মোটামুটি সময় দিলে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো আয় করতে পারবে। তবে কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা থাকতে হবে। পাশাপাশি সঠিকভাবে কাজ খোঁজার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। আসলে কাজ শেখার পর ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আপনি একটু চেষ্টা করলে অনায়াসে আয় করতে পারবেন।
যারা প্রাথমিক লেভেল শেষ করে মোটামুটি দক্ষ হয়ে ওঠে কিন্তু একদম সুপার এক্সপার্ট হতে পারেনা তখন তাদের মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা হতে পারে। আর যারা একদম এক্সপার্ট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে মাস্টার হয়ে উঠতে পারে তাদের মাসিক আয় সর্বনিম্ন এক লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা বা তার বেশিও হয়।
ইতোমধ্যে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারে। তাই আপনি যদি সত্যিই একটি সফল ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করতে চান তাহলে এই সেক্টরে সময় দিয়ে কাজ শিখতে পারেন। আশাকরি আজকের টিউনটি আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তার অবসান ঘটালো। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 মাস 2 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।