
বন্ধুরা, আমি আপনাদের সাথে মেটা অ্যাডসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি—আর তা হলো Meta ANDROMEDA। এটি এমন একটি সিস্টেম, যা আজকের দিনে মেটা অ্যাডস কীভাবে কাজ করছে, তার ৫০ শতাংশই নির্ধারণ করে। যদি আপনারা এটি বুঝতে পারেন, তবে ডিজিটাল মার্কেটিং-এ আপনারা অন্যদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য আমি মেটার অফিসিয়াল ডকুমেন্টগুলো ব্যবহার করেছি এবং সেগুলোর লিঙ্ক আমি ডেসক্রিপশনে দিয়ে দেব, যাতে আপনারা আরও বিস্তারিত জানতে পারেন।
আজ আপনারা নিজেদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন: আপনি যখন ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করছেন, তখন কি বিজ্ঞাপনগুলো আগের চেয়েও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক বা 'রেলেভেন্ট' মনে হচ্ছে? আমার তো তাই মনে হয়। এখন অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপণ দেখা প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, আমরা যারা মেটা অ্যাডভার্টাইজার, তারা জানি যে মেটা ড্যাশবোর্ডে অডিয়েন্স টার্গেটিং-এর বিকল্পগুলো ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হচ্ছে—যেন আমাদের হাতে টার্গেটিং-এর ক্ষমতাটাই কম।
তাহলে বিষয়টা অদ্ভুত না? টার্গেটিং-এর সুযোগ কম থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞাপনগুলো আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হচ্ছে! যদি টার্গেটিং-ই সব হতো, তবে এটা সম্ভব ছিল না। এর পেছনে যে শক্তিশালী সিস্টেমটি কাজ করছে, সেটাই হলো মেটা অ্যান্ড্রমেটা (Meta ANDROMEDA)।
অ্যান্ড্রমেটা হলো একটি উদ্ভাবনী এন্ড-টু-এন্ড হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং মেশিন লার্নিং সিস্টেম যা মেটা তৈরি করেছে। এটি মেটা ট্রেনিং অ্যান্ড ইনফারেন্স অ্যাক্সেলারেটর (MTIA) এবং NVIDIA Grace Hopper সুপার চিপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
এর মূল কাজটা কী জানেন? এই অধিক কার্যকর সিস্টেমটি অ্যাড রিট্রিভালের জন্য ব্যবহৃত মডেলগুলির জটিলতা ১০, ০০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে, প্রতিদিন লাখ লাখ বিজ্ঞাপণ থেকে অ্যান্ড্রমেটা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বিজ্ঞাপণের সেটটি খুঁজে বের করতে পারে। কোন হেডলাইন, কোন ছবি, কোন ডেসক্রিপশন—সবকিছুর সঠিক সমন্বয় একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দেখাতে হবে, সেই জটিল কাজটি এটি সম্পন্ন করে।
আগে অ্যাডস চালাতে এত চিন্তা করতে হতো না। কিন্তু এখন আমরা যখন অ্যাডভান্টেজ প্লাস ক্রিয়েটিভ ব্যবহার করি, তখন অসংখ্য পারমুটেশন কম্বিনেশন তৈরি হয়। যদি একটি ক্রিয়েটিভের সাথে তিনটে হেডলাইন দিই, তবেই অনেকগুলো কম্বিনেশন তৈরি হয়ে যায়। অ্যান্ড্রমেডা সিস্টেমটি এই বিপুল সংখ্যক কম্বিনেশনগুলো সামলাতেই তৈরি করা হয়েছে।
এই পুরো সিস্টেমের কারণে, এখন ডিজিটাল মার্কেটিং-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রিয়েটিভ ডাইভারসিফিকেশন (Creative Diversification) বা বিজ্ঞাপণের বৈচিত্র্য। আমার মনে হয়, অ্যাডভার্টাইজার হিসেবে আমাদের আর ড্যাশবোর্ডের টার্গেটিং নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই।
সিস্টেমকে যত বেশি অর্থপূর্ণ ক্রিয়েটিভ বৈচিত্র্য দেওয়া হবে, ফলাফল তত ভালো হবে। এর মানে এই নয় যে আমি এলোমেলোভাবে কিছু অ্যাড তৈরি করে দেব। বরং আমার পণ্য ও অফার অনুযায়ী ব্যবহারকারীর কথা মাথায় রেখে অ্যাড অ্যাঙ্গেলগুলোতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। অ্যান্ড্রমেডা সঠিক বার্তাটি সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছানোর কাজটা করছে।
এখান থেকেই হাইপার-পার্সোনালাইজেশনের বিষয়টি আসে। আগে কী হতো? ধরুন, আমি একটি জুতার বিজ্ঞাপণ দেখেছি, আমাকে বারবার কেবল জুতার বিজ্ঞাপনই দেখানো হতো। কিন্তু এখন, মেটার সিস্টেম যদি বুঝতে পারে যে আমি একটি স্কি রিসর্ট রুম কিনেছি, তবে এটি আর আমাকে অন্য রিসর্টের অ্যাড দেখাবে না; বরং স্কি সরঞ্জাম, লিফট টিকেট বা স্কি লাগেজের মতো আরও প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপণ দেখাবে—অর্থাৎ এটি আমার ক্রয়-পরবর্তী যাত্রার (post-purchase journey) ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপণ দেখাবে।
এই শক্তিশালী সিস্টেমের যুগে একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে আমাদের উচিত:
আমি আশাকরি, এই আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে মেটা অ্যাডসের ব্যাকএন্ডে কীভাবে কাজ হচ্ছে। আমরা যদি সিস্টেমের লজিকটা কিছুটা হলেও বুঝতে পারি, তবে আমরা সবসময় যৌক্তিক কথা বলব এবং অযথা অভিযোগ করব না যে, "ভাই, আমার অ্যাড কেন পারফর্ম করছে না?"
এই তথ্যগুলো আপনাদের কাজে লাগলে আমাকে টিউমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
আমি অন্তর আনছার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।