
এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এক ধরনের পারফরম্যান্স-ভিত্তিক মার্কেটিং, যেখানে একজন এফিলিয়েট (মার্কেটার) অন্য কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে এবং সেই প্রচারের ফলে কোনো বিক্রয় বা নির্দিষ্ট অ্যাকশন সম্পন্ন হলে কমিশন পায়। সহজ ভাষায়, আপনি অন্য কোনো কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে দেওয়ার বিনিময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন উপার্জন করবেন। এটি অনেকটা তৃতীয় পক্ষের বিক্রয় প্রতিনিধির মতো কাজ করে, যেখানে আপনার প্রধান লক্ষ্য হলো পণ্যের সম্ভাব্য ক্রেতাদেরকে বিক্রেতার ওয়েবসাইটে পাঠানো।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়:
প্রথমেই আপনাকে এমন একটি পণ্য বা সেবা বেছে নিতে হবে যা আপনার আগ্রহের সাথে সম্পর্কিত এবং যা নিয়ে আপনার জ্ঞান আছে। এরপর সেই পণ্যের জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রাম খুঁজে বের করতে হবে।
আপনি যখন কোনো এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দেবেন, তখন আপনাকে একটি বিশেষ লিংক (এফিলিয়েট লিংক) দেওয়া হবে। এই লিংকের মাধ্যমে যত ক্রেতা পণ্যটি কিনবে, তত কমিশন আপনি পাবেন।
যখন কোনো ক্রেতা আপনার এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে পণ্যটি কেনে, তখন বিক্রেতা সেই বিক্রয়টি ট্র্যাক করে এবং আপনাকে পূর্বনির্ধারিত কমিশন প্রদান করে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা উপার্জনের জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো:
আপনার একটি নিজস্ব ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকতে পারে যেখানে আপনি নির্দিষ্ট কোনো পণ্য বা সেবা নিয়ে রিভিউ, টিউটোরিয়াল বা আর্টিকেল লিখতে পারেন। আর্টিকেলগুলোতে আপনার এফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিতে পারেন। যখন কোনো পাঠক আপনার আর্টিকেল পড়ে এবং লিংকে ক্লিক করে পণ্যটি কেনে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
আপনি যদি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে পছন্দ করেন, তাহলে ইউটিউব চ্যানেল একটি দুর্দান্ত মাধ্যম। এখানে আপনি পণ্য রিভিউ ভিডিও, আনবক্সিং ভিডিও, বা পণ্যের ব্যবহারবিধি নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন। ভিডিওর ডেসক্রিপশনে আপনার এফিলিয়েট লিংক দিয়ে দিতে পারেন।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্টের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনি পণ্যের প্রচার করতে পারেন। বিভিন্ন গ্রুপে বা পেজে পণ্যের উপকারিতা নিয়ে টিউন বা ছবি শেয়ার করে তার সাথে এফিলিয়েট লিংক যুক্ত করতে পারেন।
আপনার যদি একটি ইমেইল সাবস্ক্রাইবারের তালিকা থাকে, তাহলে আপনি নিয়মিত তাদের কাছে বিভিন্ন পণ্যের অফার বা নতুন পণ্যের তথ্য ইমেইল করতে পারেন। ইমেইলের মধ্যে আপনার এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করতে পারেন।
গুগল অ্যাডস, ফেসবুক অ্যাডসের মতো প্ল্যাটফর্মে টাকা খরচ করে আপনার এফিলিয়েট লিংক বা ব্লগ টিউনের প্রচার করতে পারেন। যদিও এটি একটু ঝুঁকিপূর্ণ, তবে সঠিক কৌশল অবলম্বন করলে ভালো ROI (Return on Investment) পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে। তাদের একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি তাদের হোস্টিং প্যাকেজ বিক্রি করে কমিশন উপার্জন করতে পারবেন।
হোস্টিং প্রোভাইডার এর ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রামে সাইন আপ করুন।
সাইন আপ করার পর, আপনি আপনার ড্যাশবোর্ডে একটি অনন্য এফিলিয়োট লিংক পাবেন।
এবার আপনার ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় হোস্টিং-এর সুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। যেমন- তাদের ফাস্ট সার্ভার, ভালো কাস্টমার সাপোর্ট, সাশ্রয়ী প্যাকেজ ইত্যাদি।
আপনার কন্টেন্টের সাথে আপনার এফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিন। যখন কোনো ব্যক্তি আপনার লিংকে ক্লিক করে হোস্টিং কিনবে, তখন আপনি কমিশন পাবেন।
আপনার কমিশন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমা হওয়ার পর আপনি তা নিয়ম অনুযায়ী উত্তোলন করতে পারবেন।
এইভাবে, আপনি হোস্টিং বিক্রি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ভালো একটি অতিরিক্ত আয় করতে পারেন।
আমি রিদুয়ান চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 মাস 3 সপ্তাহ যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।