Have I Been Pwned? – আপনার তথ্য কি ফাঁস হয়েছে? আপনি ডেটা লঙ্ঘনের শিকার হয়েছেন কিনা, তা খুঁজে বের করুন

Level 12
কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা

ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের ডেটা। আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেক ওয়েবসাইটে নিজের ইমেইল অ্যাড্রেস অথবা ফোন নাম্বার দিয়ে থাকি। কিন্তু, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেওয়া আমাদের Email address এবং Phone number গুলো কি নিরাপদেই থাকে? এক্ষেত্রে, আপনি অবশ্যই সেটি সম্পর্কে নিশ্চিত নন। কেননা, তারা চাইলে আপনার ইমেইল এড্রেস এবং ফোন নাম্বার ফাঁস করেও দিতে পারে। অথবা আপনার রেজিস্ট্রেশন করা সেই ওয়েবসাইটের তথ্য হ্যাক হয়েও যেতে পারে।

তাহলে আপনি কীভাবে বুঝবেন যে, আপনার ইমেইল ঠিকানা বা ফোন নাম্বারটি ফাঁস করা হয়েছে কিনা? আপনার তথ্যগুলো ফাঁস হয়েছে কিনা, সেটি কীভাবে খুঁজে বের করবেন এবং এটি সম্পর্কে কি করতে হবে; সেই বিষয়টি নিয়ে আমি এই টিউনে আলোচনা করেছি

আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে ইন্টারনেটে অনেক ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করতে হয়। আর এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটেই আমাদের ইমেইল এড্রেস অথবা ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কোন ব্যক্তির কাছে এতগুলো অনলাইন একাউন্ট থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যাইহোক, অনেকে আবার তাদের অনলাইনে তৈরি করা এতসব অ্যাকাউন্ট গুলোর কথা মনে রাখতে পারে না। এক্ষেত্রে, আমাদের অজান্তেই অনেক সময় নিজেদের ইমেইল এড্রেস অথবা ফোন নাম্বারটি অনলাইনে ফাঁস হয়ে যেতে পারে এবং আপনার তথ্য অন্য কেউ অ্যাক্সেস করতে পারে।

যদিও, আপনার রেজিস্ট্রেশন করা অনলাইনে এসব একাউন্টের ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে শুধু চিন্তা করতে হবে যে, আপনার ডেটাগুলো Breaches বা লঙ্ঘন হয়েছে কিনা। উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় যে, আমাদের ছোট্ট একটি কাজের জন্য অনেক ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। এরপর সেই ওয়েবসাইটটি একবার ব্যবহার করার পর, সেটিতে আর প্রবেশ করি না। আর সেই ওয়েবসাইটের কাজ শেষ হয়ে যাবার পর, আপনিও যুক্তিসঙ্গত-ভাবে সেই অ্যাকাউন্টটি আর মুছে দেন না। এক্ষেত্রে, আমাদের সেই তথ্যগুলো সেই ওয়েবসাইটে থেকেই যায়।

তাহলে আপনি পরবর্তীতে কীভাবে জানবেন যে, কোন ওয়েব সাইট থেকে আপনার তথ্যগুলো ইন্টারনেটে সবার মাঝে ফাঁস হয়ে গিয়েছে? সৌভাগ্যবশত, আপনার জন্য এরকম একটি উপায় রয়েছে। এমন একটি সাইট রয়েছে; যেটি আপনাকে বলবে যে, আপনি "Pwned" হয়েছেন কিনা।

Pwned মানে কি?

Pwned মানে কি

কারো অ্যাকাউন্ট ডেটা লঙ্ঘনের শিকার হলে, সেটি বোঝানোর জন্য বা এর উদাহরণ হিসেবে "Pwned" শব্দটি ব্যবহৃত হয়। মোট কথা, এই শব্দটি এমন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যেখানে কোন কিছুতে পরাজিত হতে হয়। কোন একটি সাইটের মাধ্যমে যেহেতু আপনার ইনফরমেশন গুলো ফাঁস হয়ে গিয়েছে, তাই আপনার ক্ষেত্রেও এই শব্দটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই শব্দটি জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট থেকে এসেছে। অনলাইনে আপনার ডেটা গুলো Breach হয়েছে কিনা, সেটি বের করার জন্যই মূলত এই ওয়েব সাইটটির সাহায্য নেওয়া হয়। যে ওয়েব সাইটটিতে প্রবেশ করলেই দেখা যায়, Have I Been Pwned?

যাইহোক, এই সাইটটির উদ্দেশ্যই হলো, কোন ব্যবহারকারীর ইমেইল অ্যাড্রেস বা ফোন নাম্বার Data Breach এর হয়েছে কিনা এবং কোন ওয়েবসাইটগুলি তাদের তথ্য ফাঁস করেছে; তা খুঁজে বের করে দেওয়া। নিজের তথ্য গুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধান করার জন্য কোন একজন ব্যবহারকারীর জন্য এই ওয়েবসাইটটি একটি দুর্দান্ত উপায়। এই ওয়েবসাইটটির কাজের ব্যাপারে নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

কিভাবে ডেটা লিক বা ফাঁস হয়?

কিভাবে ডেটা লিক বা ফাঁস হয়?

অনেকভাবেই আপনার ব্যক্তিগত ডেটা গুলো ফাঁস হতে পারে। যদিও আপনার কাছে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো অতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। কিন্তু, তবুও আপনার এসব তথ্য গুলো অনেক মূল্যবান। অনলাইনে কিছু প্ল্যাটফর্ম থেকে আপনার ডেটাগুলো লিক হওয়ার ব্যাপারটি ইচ্ছাকৃত হলেও, তাদের বড় একটি অংশই অনিচ্ছাকৃত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আপনার নিবন্ধন করা ওয়েবসাইট থেকে তথ্যগুলো হ্যাক করে ফাঁস করা হয়।

যেভাবে আপনার ডেটা গুলো ফাঁস বা Breach হতে পারে:

  • ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য বিক্রি করা।
  • ডেটা স্টোরেজ ডিভাইস এর চুরি বা ক্ষতি হওয়া (যেমন: হার্ডড্রাইভ, ল্যাপটপ, ইউএসবি)।
  • Administrative account-এ অননুমোদিত অ্যাক্সেস এর কারণে। যেমন: অন্যের ডিভাইসে লগ ইন করা এবং তত্ত্বাবধান না করা। অথবা অন্যের কম্পিউটারে কোন অ্যাকাউন্ট লগইন করে সেটি লগআউট করতে ভুলে যাওয়া।
  • দুর্ভাগ্যক্রমে ভুল ব্যক্তির কাছে ফাইলগুলো ট্রান্সফার।
  • হ্যাকার অথবা ক্ষতিকারক সফটওয়্যার এর মাধ্যমে।

এছাড়া আরো বিভিন্ন উপায়ে আপনার ডেটাগুলো ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তবে, প্রায় প্রত্যেক ক্ষেত্রেই এগুলো আমাদের অসচেতনতার জন্যই হয়ে থাকে।

ডেটা Breach বা লঙ্ঘন কি সত্যি গুরুত্বপূর্ণ?

ডেটা Breach বা লঙ্ঘন কি সত্যি গুরুত্বপূর্ণ

যদি আপনার ডিজিটাল জীবনে সবকিছু ঠিকঠাক বলে মনে হয়, তবে কি এটি দেখার প্রচেষ্টা মূল্যবান? অবশ্যই। অনলাইনে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, আপনার তথ্য গুলোর ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া উচিত। আর এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ ও বটে।

অনলাইনে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো কাদের কাছে রয়েছে, আপনাকে অবশ্যই সেটি জানা প্রয়োজন। কেননা, এটি আপনার নিরাপত্তার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও অনেক ভীতিকর কারণ রয়েছে, যেকারণে আপনার এসব তথ্য গুলো দেখা প্রয়োজন।

ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে আমরা অনেক জনপ্রিয় এবং কম জনপ্রিয় ওয়েবসাইটেও নিজের তথ্যগুলো দিয়ে থাকি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, এসব বড় বড় সাইটগুলো থেকেও আপনার ডেটা ফাঁস হয়ে যেতে পারে। আর এই ঘটনাটি ঘটতে পারে, প্রধান সব সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে শুরু করে পাঠ্যবই ভাড়ার দোকান পর্যন্ত। তবে সেই লঙ্ঘনটি যতই তুচ্ছ হোক না কেন, আপনাকে অবশ্যই দিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।

এমনকি আপনি যদি এক দশক আগের কোনো একটি অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পাওয়ার বিষয়ে চিন্তিত না হন; তবে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে যে, তারা এই ক্ষেত্র থেকেও সঠিক ডিটেলস পেতে পারে।

আর এজন্য আপনি আপনার সংবেদনশীল সকল তথ্য, যেমন: নিজের ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড রক্ষা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। এই পরামর্শটি আমি তাদেরকে দিব, যারা একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করে। আর আপনি যদি কোন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় একেবারে সঠিক তথ্য দিয়ে থাকেন এবং সেটির তথ্য যদি কোন সময় হ্যাক হয়ে যায়, তাহলে আপনি অন্যান্য অ্যাকাউন্টগুলো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিবেন। তাই, আপনি অবশ্যই প্রত্যেকটি একাউন্টের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ইনফরমেশন ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। যেমন: বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ একাউন্টগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ইমেইল অ্যাড্রেস এবং ফোন নাম্বার ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি সকল অ্যাকাউন্টের জন্য একই Login information ব্যবহার করেন; তাহলে আপনার ব্যাংকের তথ্য অ্যাক্সেস করার জন্য টুইটার একাউন্টে লগইন করলেই হবে। তাহলে আপনি এবার বুঝতেই পারছেন যে, ডেটা লঙ্ঘন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আপাতদৃষ্টিতে এসব ছোটখাটো জিনিস (যেমন: আপনার জন্ম তারিখ বা Answer to security question) গুলোই ভবিষ্যতে আরো অর্থপূর্ণ ডেটাগুলো অ্যাক্সেস পেতে সাহায্য করতে পারে। তাই এসব ছোটখাটো তথ্যের ব্যাপারেও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কেননা, কোন একজন হ্যাকার এসব তথ্য গুলো ব্যবহার করে পরবর্তীতে আপনার অন্যান্য একাউন্টগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেবার চেষ্টা করবে।

আমার কোন ডেটা ফাঁস হয়েছে কিনা, তা কিভাবে খুঁজে পাব?

আমার কোন ডেটা ফাঁস হয়েছে কিনা, তা কিভাবে খুঁজে পাব?

আপনার অ্যাকাউন্ট গুলির মধ্যে কোনটি ডেটা ফাঁসের সম্মুখীন হয়েছে কিনা তা খুঁজে বের করার জন্য "Have I Been Pwned" ওয়েবসাইটটি একটি দ্রুত এবং সহজ সমাধান অফার করে। এখান থেকে আপনি খুব সহজেই আপনার কোন অ্যাকাউন্ট এর ব্যাপারে তথ্য খুঁজতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার সেই অ্যাকাউন্টের তথ্য যদি লিক হয়ে থাকে, তাহলে আপনি এখানে এটি খুঁজে পাবেন।

এই ওয়েবসাইট বা টুলটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। এজন্য প্রথমে আপনাকে এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে। তারপর এখানে থাকা সার্চ বক্সে আপনার কোন নাম্বার বা ইমেইল এড্রেস টাইপ করুন।

একবার আপনি এখানে আপনার Email address অথবা Phone number টাইপ করে এন্টার করলে; এটি আপনাকে জানাবে যে, আপনার ডেটা লঙ্ঘনের সাথে জড়িত ছিল কিনা। যদি আপনার একাউন্টের ক্ষেত্রে কোন লঙ্ঘনের ঘটনা না ঘটে থাকে, তাহলে সেখানে "Good news - no pwnage found!" লেখা দেখতে পাবেন। আর আপনার মেইল অ্যাকাউন্ট অথবা মোবাইল নাম্বারের সাথে যদি কোন Compromised করা হয়, তাহলে আপনি এখানে সেটির সমস্ত বিবরণ দেখতে পাবেন। যেমন: আপনার সেই অ্যাকাউন্টটি কখন, কোথায়, কেন, এবং কিভাবে ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে, সে সম্পর্কেও একটি বিবরণ দিবে। যা আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে একেবারে চোখ খুলে দিবে।

হ্যাভআইবিনপনড ওয়েবসাইটটিতে আপনি যদি দেখেন যে, আপনার অ্যাকাউন্টটি বর্তমানে ডেটা লঙ্ঘনের সাথে জড়িত ছিল না; তাহলে আপনি ভবিষ্যতের জন্য সেই অ্যাকাউন্ট দিয়ে সেখানে সাবস্ক্রিপশন করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন সময় যদি আপনার ইমেইল এড্রেস অথবা ফোন নাম্বার ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে আপনাকে তাৎক্ষণিক মেইল করে জানানো হবে।

সর্বোপরি, কিছুদিন পর পর আপনার ইমেইল এড্রেস অথবা ফোন নাম্বার একাধিকার খোঁজা উচিত। প্রতিমাসে কয়েকবার আপনি এভাবে পরীক্ষা করলে, অনলাইনে আপনার নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে যাবে। আর এই ওয়েবসাইটে এসে আপনার তথ্য খোঁজার অভ্যাসটি আপনাকে অনেক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে।

Have I Been Pwned?

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট @ Have I Been Pwned?

আমার ইমেইল এড্রেস ফাঁস হওয়ার তথ্য দিয়ে আমি কী করব?

ইমেইল এড্রেস ফাঁস হওয়ার তথ্য দিয়ে আমি কি করব?

আপনি যদি খুঁজে পান, আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ডেটা লঙ্ঘন এর সাথে জড়িত; তাহলে এটির বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আপনাকে অবশ্যই সেই তথ্যের ব্যাপারে অলসতা করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে, আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব সেই একাউন্টের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো আপডেট করা প্রয়োজন। তো, এক্ষেত্রে আপনি কী কী করতে পারেন?

১. আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন

যদি এই ওয়েবসাইটটি আপনাকে এটি প্রদর্শন করে যে, আপনার কোন অ্যাকাউন্ট ডেটা লঙ্ঘনের অংশ ছিল; তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

যত দ্রুত আপনি আপনার ফাঁস-কৃত তথ্যের ব্যাপারে জানতে পারবেন, তত কম সময় সাইবার অপরাধীদের ক্ষেত্রে এটিতে অ্যাক্সেস থাকবে। তাই, আপনার একাউন্ট সম্পর্কে জানার পর অতি দ্রুত আপনার পাসওয়ার্ডটি পরিবর্তন করুন। আপনার সেই একাউন্টের Password পরিবর্তন করা ছাড়াও, অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের পাসওয়ার্ড গুলো ও পরিবর্তন করুন।

এখানে আপনার ডেটা ফাঁস হওয়া মানে এই নয় যে, শুধুমাত্র আপনার ই-মেইল এড্রেসটি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। বরং, আপনার ইমেইল এড্রেস এর পাসওয়ার্ড এবং সেই একাউন্টের সাথে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য একাউন্টের তথ্য ও ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই যুক্তিযুক্ত কাজ হলো, সেই ইমেইল আইডির পাসওয়ার্ড এবং সেটির সাথে লিংক করা অন্যান্য একাউন্টগুলোর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা।

আর আপনার যদি পাসওয়ার্ড মনে রাখা কঠিন হয়ে যায়, তাহলে একটি Password Manager ব্যবহার করুন। এতে করে, অনলাইনে আপনার প্রত্যেকটি একাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন এবং সেগুলো মনে রাখাও সহজ হবে।

২. আপনার লগইন পরিচয় পত্র সংশোধন করুন

যদিও অনেক লোক অ্যাকাউন্ট গুলির মধ্যেই তাদের পাসওয়ার্ড শেয়ার করে। অর্থাৎ, তাদের অ্যাকাউন্টের আইডি এবং পাসওয়ার্ড প্রায় একই হয়ে থাকে। আপনার ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই বন্ধ করা উচিত।

এছাড়া, কোন একটি Password পুনরায় ব্যবহার করবেন না। আর বিশেষ করে, আপনার অ্যাকাউন্টগুলির সাথে ব্যাংকিং নাম্বার বা এটির মত অন্য কোন সংবেদনশীল তথ্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

আর আপনি আপনার পাসওয়ার্ডটিকে আরও উন্নত করার জন্য পুরাতন পাসওয়ার্ড গুলোকে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে, সেই পুরাতন Password থেকে কিছু অংশ নিয়ে নতুন পাসওয়ার্ডের যুক্ত করুন এবং এভাবে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। এতে করে পাসওয়ার্ডটি মনে রাখাও সহজ হবে। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। এক্ষেত্রে, আপনি একটি প্রিয় বাক্যের, প্রত্যেকটি শব্দের প্রথম অক্ষর এবং সঙ্গে কিছু নাম্বার যুক্ত করে দিয়ে Password তৈরি করতে পারেন।

৩. অব্যবহৃত অ্যাকাউন্ট গুলো মুছুন

যদি আপনি দেখেন যে, কোন একটি সাইট একাধিক লঙ্ঘনের সম্মুখীন হয়েছে; তাহলে আপনি সেই প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজের একাউন্ট মুছে দিতে পারেন। কেননা, এর দ্বারা এটিই চিহ্নিত হয় যে, সেই সাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত। আর আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না এমন কোন প্লাটফর্ম গুলোতে আপনার তথ্য হস্তান্তর করা উচিত নয়। কোন সাইটে নিচের তথ্য শেয়ার করার আগে এটি চেক করে নেওয়া উচিত যে, সেই ওয়েবসাইটটি কতটা ট্রাসটেড।

প্রত্যেকটি প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজের প্রোফাইল মুছে দেওয়ার অপশন রয়েছে। মনে রাখবেন যে, কোন সাইট থেকে আপনার প্রোফাইল মুছে দিলেও, অনেক সাইট ব্যবহারকারীর কিছু তথ্য ধরে রাখে। যাইহোক, আপনার জন্য সবচাইতে ভালো হয়, যদি আপনি Sketchy সাইট গুলোতে একাউন্ট করা থেকে বিরত থাকেন।

আর অব্যবহৃত ওয়েবসাইটগুলো থেকে নিজের প্রোফাইল ডিলিট করে দেয়া উচিত। এতে করে আপনার তথ্য ঝুঁকি আরো অনেকটা কমে যায়। যাতে করে, আপনার অব্যবহৃত ওয়েবসাইটটি থেকে কোনভাবে ডেটাগুলো লিক হতে না পারে। তাই এক্ষেত্রে আগাম সর্তকতা হিসেবে, এমন প্লাটফর্ম থেকে নিজের একাউন্ট মুছে ফেলা উচিত।

আমি Pwned ছিলাম কিনা, এটি খুঁজে বের করা কি মূল্যবান?

আমি Pwned ছিলাম কিনা, এটি খুঁজে বের করা কি মূল্যবান?

আপনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি উপেক্ষা করা কোন স্মার্ট সিদ্ধান্ত নয়। আর এখানে যখন ডেটা লঙ্ঘনের সাথে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলো জড়িত, তখন অবশ্যই আপনাকে এটি সম্পর্কে জানা উচিত এটির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আপনার ডেটাগুলো কোন প্লাটফর্ম থেকে ফাঁস হয়েছে এবং সেটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা অবশ্যই কিছুদিন পরপর চেক করা প্রয়োজন।

কিভাবে ডাটা লঙ্ঘন কাজ করে এবং ডেটা ফাঁস হওয়া একাউন্ট গুলোর উপর আপনার পদক্ষেপ নেওয়া, আপনার ইন্টারনেট নিরাপত্তা অনুশীলনের জন্য আবশ্যক। এতে করে, আপনি বড় ধরনের সাইবার হামলার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারেন।

শেষ কথা

আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে অনলাইনে অনেক প্লাটফর্মে নিজেদের একাউন্ট তৈরি করতে হয়। আর সে সমস্ত Account গুলো তৈরি করার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য গুলো শেয়ার করতে হয়। তবে, সেই ব্যক্তিগত তথ্য গুলো সেখান থেকে অনেক সময় ফাঁস হয়ে যেতে পারে। আর এসব তথ্যগুলোর মাধ্যমে আমরা পরবর্তীতে বড় ধরনের সাইবার হামলা ও সম্মুখীন হতে পারি, যদি আমরা আমাদের অন্যান্য একাউন্ট গুলোতে ও একই ধরনের ইনফরমেশন ব্যবহার করি।

তাই, আমাদের ইমেইল এড্রেস এবং ফোন নাম্বার ফাঁস হয়েছে কিনা, সেটি নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে এবং যদি কোনভাবে সেটি লিক হয়ে থাকে, তবে সেটির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পার তাহলে আমরা সাইবার দুনিয়ায় অন্যান্য ক্ষেত্র গুলোতেও নিরাপদ থাকতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।

Level 12

আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 333 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 60 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস