হ্যালো টেকটিউনস জনগণ, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন। এখন থেকে নিয়মিত আবার নতুন টিউন নিয়ে আমরা হাজির হলাম আপনাদের কাছে। আর টেকটিউনসের নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিস নিয়ে ভালো না থেকে আর উপায় আছে? আর এই নিত্যনতুন টপিক আর সার্ভিসের ধারা বজায় রাখার নিমিত্তে, আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আর আপনারা এই টিউনের মাধ্যমে জানতে পারবেন অনেক নতুন নতুন সব তথ্য।
কম্পিউটারের জন্য ভাইরাস হচ্ছে ইন্টারনেটের যুগের ভয়ানক একটি ব্যাপার, আর ভাইরাসের মধ্যে থাকি কিছু ম্যালেসিয়াস প্রোগ্রামিং কোড যা ওয়েব এর জন্য বিপজ্জনক ও বটে। তাছাড়া যারা টেকনোলজি নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন তারা এই ভাইরাস সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনে থাকবেন তবে কম্পিউটারের প্রকৃত ভাইরাসটি তুলনামূলক ভাবে খুবই ছোট ডেফিনিশনের (সংজ্ঞার) কোড দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে।
সাধারণত, একটি কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এমন একটি প্রোগ্রাম যা অন্যান্য প্রোগ্রামগুলোর কোড মডিফাই করে নিজের মত করে একটি মডিফাই কোড ভার্সন তৈরি করে। আর যখন ভাইরাসটি এই কাজ করতে সফল হয় ঠিক তখনই ঐ কম্পিউটারকে "ভাইরাস আক্রমণ" করেছে বলা হয়। তাছাড়া একটি ভাইরাস তার টার্গেট করা কম্পিউটারের সমস্ত ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে বা কখনও কখনও কোন সমস্যাই সাধারণত বুঝা যায় না। তবে আপনারা জানেন যে বর্তমান বিশ্বে অনেক ধরনের ভাইরাস রয়েছে তার মধ্যে ধরন ভেদে একেকটি ভাইরাসের প্রভাব একেক রকম হয়ে থাকে।
আপনি জানেন যেকোনো ভাইরাসই আপনার কম্পিউটারের অনেক ক্ষতিসাধন করতে পারে, যদিও আপনি লেটেস্ট অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করে থাকেন না কেন। তাছাড়াও ভাইরাসগুলো আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটা যেমন: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ক্রেডিট কার্ড এর তথ্য চুরি করতে, আপনার হার্ড ড্রাইভের স্পেস ব্যবহার করতে এবং আপনার কীবোর্ড থেকে আপনি যা লিখছেন তা চুরি করে নিয়ে যেতে পারে। আর এই সমস্ত ভাইরাস যদি সনাক্ত না করা যায় এবং অনেক সময় ধরে আপনার কম্পিউটারে থাকতে পারে তাহলে চিন্তা করে দেখেন যে কতটা পরিমাণ ডেটা আপনার কাছ থেকে চুরি করতে পারবে, আপনার ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ডও চুরি করে নিতে পারবে নিমিষেই।
প্রধান সমস্যাটি হল সবচেয়ে বিপজ্জনক ভাইরাসগুলো সনাক্ত করাও অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কেননা ভাইরাসের মধ্যে থাকা ক্ষুদ্র প্রোগ্রামিং কোড গুলো সনাক্ত করা যায় না আর অনেক সময়ই ভাইরাসগুলো আপনার ডেটা চুরি করে ফলে অপারেটিং সিস্টেমের কোন সমস্যা হয় না। এমনকি ভাইরাস সনাক্ত এবং রিমুভ করার পরেও আপনি নিশ্চিত নন যে, আপনার কম্পিউটার থেকে কতটা পরিমাণ তথ্য হ্যাকারের কাছে ট্রান্সফার হয়েছে।
আর এ জন্যই সাইবার সিকিউরিটির জগতে ভাইরাস তৈরিকারী এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ডেভেলপ-কারীদের সাথে একটি চলমান যুদ্ধ চলছে। নতুন ভাইরাসের অ্যান্টিভাইরাস ডেফিনিশন তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত আরও অনেক জটিল ভাইরাস তৈরি হতে পারে এবং অ্যান্টিভাইরাস ডেফিনিশন তৈরি হলে সেই ভাইরাস আর ক্ষতি করতে পারে না এবং পরে আবার নতুন নতুন ভাইরাসের আগমন ঘটে।
আর এই কারণেই আপনাকে কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে আর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত ভাইরাস সম্পর্কে আপনার জানা থাকতে হবে, যাতে করে আপনার কম্পিউটার সেই সমস্ত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে সহজেই তা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলো এমন অনেক ভাইরাস রয়েছে যা সনাক্তকরণ এবং রিমুভ করতে পারে না যার ফলে বিভিন্ন সময়ে সাইবার নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছে। এখনো আগের শত শত ভাইরাস রয়েছে যা আমাদের পারসোনাল ডেটা এবং কম্পিউটারের প্রচুর ক্ষতি সাধন করেছিল। নিম্ন উল্লেখিত ভাইরাসগুলো হচ্ছে ভবিষ্যতে আপনি এদের মুখোমুখি হতে পারেন।
GoBrut হচ্ছে এক প্রকার সাধারণ কম্পিউটার ভাইরাস যা আপনার কম্পিউটারকে botnet এর সাথে কানেক্ট করে, আর এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ডিভাইসগুলো একত্রে একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করে থাকে। আর করে তা হল পাসওয়ার্ড ক্র্যাকিং এই ভাইরাসটি সবচেয়ে প্রধান কাজ। তাছাড়া botnet ব্রুট ফোর্স পাসওয়ার্ড ক্র্যাকার এর মত কাজ করে এবং আপনার ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড গুলো এই ভাইরাসটি গেস (অনুমান) করে বের করতে পারে।
আপনার অপারেটিং সিস্টেমে GoBrut চলার সময়, আপনার ইন্টারনেট এর গতি তুলনামূলক ভাবে হ্রাস পাবে এবং আপনি আপনার সিস্টেমের পারফর্মেন্স কমে যাওয়া লক্ষ করতে পারবেন। যদিও ভাইরাসটি অনেক আগেই সনাক্ত করা হলেও এর নতুন নতুন ভার্সনে হ্যাকার'রা অতিরিক্ত কোড ব্যবহার করে থাকে ফলে ভাইরাসটি সনাক্ত করা আরও কঠিন হয়ে যায়।
আর নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করার পাশাপাশি আপনি অত্যন্ত কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এমনকি আপনার সিস্টেম যদি GoBrut ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে, তবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এই ভাইরাসটি গেস করতে পারবেনা ফলে আপনি কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকতে পারলেন।
বর্তমান বিশ্বে ransomware ভাইরাস হচ্ছে সবচেয়ে আলোচিত একটি ভাইরাস, আর Jokeroo ঠিক এই ধরনের একটি ভাইরাস। এই ভাইরাসের নামটি কার্ড খেলার একটি কার্ডের নামের অনুকরণে রাখা হয়েছে যা ভাইরাসের লোগো হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এই ভাইরাসটি আপনার কম্পিউটারে আক্রমণ করলে আপনি যদি কোন ফাইল বা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার কাছে তার বিনিময়ে টাকা চাইবে, অন্যথায় আপনি তা ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে অর্থ প্রদানের আগ পর্যন্ত আপনার সিস্টেম লক অবস্থায় থাকবে।
এই ভাইরাস যাদের কম্পিউটারে আক্রমণ করে তারা “Affiliates” বা customer হিসেবে পরিচিত, আর তারা তাদের সিস্টেমকে ভাইরাস মুক্ত করতে দেওয়া মুক্তিপণ এর অর্থ ভাইরাস তৈরিকারক সংস্থা ভাইরাস বিতরণকারীদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়। আর এই ক্ষেত্রে তারা বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্থ আদানপ্রদান করে থাকে যাতে করে তাদের পরিচয় গোপন থাকে।
এই ধরনের কম্পিউটার ভাইরাস থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য সর্বোত্তম উপায় হল আপনি যেকোনো লিংক থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করার আগে তার উৎস সম্পর্কে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। তাছাড়া, Ransomware ভাইরাস সচারচর ইমেইল এর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়ে থাকে। রুল অব থাম্ব এর মতানুসারে, আপনার ইমেইলে যে ফাইল সেন্ড করেছে তারপরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ইমেইল থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করবেন না।
Cyborg ভাইরাসটি অনেক দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যমান ছিল এবং ফ্লপি ডিস্কের সময় থেকেই এই ভাইরাসের সূত্রপাত। অতি সম্প্রতি, এই ভাইরাসটি নকল উইন্ডোজ ১০ আপডেট এর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই পদ্ধতিতে পার্সোনাল কম্পিউটারে ভাইরাসটি আক্রমণ করে থাকে। অতঃপর, এই ভাইরাসটি যখন আপনার সিস্টেমে ইন্সটল হয়ে যায় তখন তা সিস্টেমকে লক করে দেয় এবং ইউজার থেকে অর্থ প্রদানের দাবি করে।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, Cyborg ভাইরাসটি বিশেষভাবে কার্যকর একটি ভাইরাস। আর এই ভাইরাসটি রিমুভ করার উপায় রয়েছে, তবে তা করার জন্য ইউজারের টেকনিকাল বিষয়ে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। তাছাড়া এই ভাইরাস থেকে নিজের কম্পিউটারকে বাঁচাতে সর্বোত্তম উপায় হল এর সংস্পর্শে না আসা।
যদি আপনি উইন্ডোজ ১০ আপডেটের লিংক সহ কোন ইমেইল পান তবে সেই লিংকে ক্লিক করবেন না, কারণ তাতে ভাইরাস থাকবে আর মাইক্রোসফট কোন আপডেট লিংক ইমেইল এর মাধ্যমে পাঠায় না তা মনে রাখবেন। যেকোনো আপডেট আসলেই কেবল তা অফিসিয়াল মাইক্রোসফট এর ওয়েব সাইট থেকে উইন্ডোজ আপডেট ডাউনলোড করবেন। অন্যান্য ভাইরাসগুলোর মতো, কোন ফাইল ডাউনলোড করার পূর্বে তার সোর্স সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তা ডাউনলোড এবং সিস্টেমে অ্যাক্সেস এর অনুমতি দিবেন না।
আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা খুবই জরুরী। একটি নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর খোঁজ করুন এবং আপনার সিস্টেমকে কমপক্ষে সপ্তাহে একবার করে ভাইরাস স্ক্যান করুন। আর কিভাবে ভাইরাস সনাক্ত করবেন এবং সন্দেহজনক ওয়েব সাইট থেকে ফাইল ডাউনলোড এড়িয়ে যাবেন তার চর্চা করুন। আর ইন্টারনেটে নিরাপদে থাকা খুব বেশি কঠিন নয়, একটু সচেতন থাকলেই অনেকটা নিরাপদে থাকা যায়।
আমি এরকম নিত্যনতুন কাজের সফটওয়্যার নিয়ে টেকটিউনসে হাজির হবো নিয়মিত। তবে সে জন্য আপনার যা করতে হবে তা হলো আমার টেকটিউনস প্রোফাইলে আমাকে ফলো করার জন্য 'Follow' বাটনে ক্লিক করুন। আর তা না হলে আমার নতুন নতুন টিউন গুলো আপনার টিউন স্ক্রিনে পৌঁছাবে না।
আমার টিউন গুলো জোসস করুন, তাহলে আমি টিউন করার আরও অনুপ্রেরণা পাবো এবং ফলে ভবিষ্যতে আরও মান সম্মত টিউন উপহার দিতে পারবো।
আমার টিউন গুলো শেয়ার বাটনে ক্লিক করে সকল সৌশল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। নিজে প্রযুক্তি শিখুন ও অন্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানান টেকটিউনসের মাধ্যমে।
আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 181 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
জানলাম