কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে?

Level 2
ছাত্র, বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

কম্পিউটারের ভূমিকা

কম্পিউটার হলো এক ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা নির্দিষ্ট নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে ডাটা প্রসেস করে এবং ফলাফল প্রদান করে। এর উদ্ভাবন আধুনিক সভ্যতার অন্যতম বৃহত্তম অগ্রগতি হিসেবে গণ্য করা হয়, যা শিক্ষা, বিজ্ঞান, ব্যবসায়, মিডিয়া, স্বাস্থ্য সেবা এবং বিনোদন সহ প্রায় সব ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে।

প্রাথমিকভাবে, কম্পিউটার বিশাল আকারের এবং উচ্চ মূল্যের হতো, যা শুধুমাত্র বড় বড় সংস্থা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এখন কম্পিউটার অনেক ছোট, সস্তা এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, যা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য সহজলভ্য।

আধুনিক কম্পিউটার মূলত চারটি প্রধান অংশে বিভক্ত: প্রসেসিং ইউনিট (CPU), মেমোরি, ইনপুট ডিভাইস এবং আউটপুট ডিভাইস। এই সমস্ত অংশ একত্রে কাজ করে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে। কম্পিউটারের এই সার্বজনীন ব্যবহারযোগ্যতা এবং ক্ষমতা কম্পিউটারকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য করে তুলেছে।

সময়ের সাথে সাথে কম্পিউটারের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা অবিরাম বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এটি আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও গভীরভাবে একীভূত হচ্ছে। এই বৃদ্ধির পথে, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির গবেষণা নতুন নতুন উদ্ভাবনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যা আগামী দিনগুলিতে আমাদের জীবনে আরও বড় পরিবর্তন আনবে।

কম্পিউটার যেভাবে কাজ করে

সাধারণত কম্পিউটার আমাদের কাছ থেকে ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ইনপুট নেয়। তারপর CPU এর মাধ্যমে তা প্রসেসিং করে এবং প্রসেসিং করার পর যে ফলাফল আসে তা আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে আমাদেরকে দিয়ে থাকে। আর এই সম্পূর্ণ কাজটি একটি অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। চলুন এর আরো বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

কম্পিউটারের মৌলিক গঠন

কম্পিউটারের মৌলিক গঠন বলতে একটি কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ গঠন ও তার কার্যপ্রণালীকে বোঝায়। এটি মূলত চারটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত: কেন্দ্রীয় প্রসেসিং ইউনিট (CPU), মেমোরি, ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস।

কেন্দ্রীয় প্রসেসিং ইউনিট (CPU): CPU কম্পিউটারের মস্তিষ্ক বলে পরিচিত। এটি আমাদের দেয়া সমস্ত নির্দেশনা বা ইনপুট প্রসেস করে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের ফলাফল দেয়।

মেমোরি: মেমোরি ডাটা এবং প্রোগ্রামগুলোকে সংরক্ষণ করে রাখে যাতে CPU সহজে এবং দ্রুতগতিতে এগুলিকে প্রসেস করে আমাদের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ফলাফল তৈরি করতে পারে।

ইনপুট ডিভাইস: ইনপুট ডিভাইস হলো যে সব ডিভাইস যেগুলো ব্যবহার করে মানুষ কম্পিউটারে ডাটা ও নির্দেশনা প্রবেশ করাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কীবোর্ড এবং মাউস। সহজ কথায় যেসব ডিভাইসের সাহায্যে আমরা কম্পিউটারে তথ্য পঠাতে পারি সেগুলোই ইনপুট ডিভাইস যেমন কিবোর্ডের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারকে লেখার জন্য নির্দেশনা দিতে পারি।

আউটপুট ডিভাইস: আউটপুট ডিভাইস হলো সেই সব ডিভাইস যার মাধ্যমে কম্পিউটারে প্রক্রিয়াজাত ডাটা আমাদের কাছে প্রদর্শন করা হয়।

যেমন আমরা যখন একটি ভিডিও দেখার জন্য ভিডিওতে ক্লিক করে কম্পিউটার কে নির্দেশ দেই ভিডিওটি প্লে করার জন্য। তখন কম্পিউটার এটিকে প্রসেস করে মনিটরের মাধ্যমে আমাদেরকে দেখায়। যেহেতু মনিটরের মাধ্যমে কম্পিউটার তার প্রসেসকৃত ডাটা আমাদেরকে দেখাতে পারে তাই মনিটর একটি আউটপুট ডিভাইস, আউটপুট ডিভাইসের আরো কিছু উদাহরণ হল প্রিন্টার এবং স্পিকার।

এই চারটি মৌলিক অংশ একসঙ্গে মিলে কম্পিউটারের মৌলিক ভিত্তি গঠন করে, যা কম্পিউটারকে ডাটা প্রসেস করা, সংরক্ষণ করা, এবং প্রদর্শন করার ক্ষমতা দেয়। এর মাধ্যমে কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের জটিল কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম হয়।

অপারেটিং সিস্টেম

অপারেটিং সিস্টেম (OS) একটি সফটওয়্যার যা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। এবং ব্যবহারকারীর কাজকে সহজ করে তোলে।

অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান কার্যাবলীগুলি হলো:

  • প্রসেস ম্যানেজমেন্ট: এটি সকল প্রোগ্রাম এবং নির্দেশনা কখন এবং কোন প্রসেসরের মাধ্যমে প্রসেস করা হবে তা নির্ধারণ করে।
  • মেমোরি ম্যানেজমেন্ট: অপারেটিং সিস্টেম স্থায়ী এবং অস্থায়ী মেমোরির ব্যবস্থাপনা করে।
  • ফাইল সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট: এটি ফাইল সংরক্ষণ, এবং ব্যবস্থাপনা করে।
  • ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট: এটি ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইসের মধ্যে ডাটা ট্রান্সফার নিয়ন্ত্রণ করে।
  • সুরক্ষা ও গোপনীয়তা: অপারেটিং সিস্টেম সিস্টেমের সুরক্ষা এবং ব্যবহারকারীর ডাটার গোপনীয়তা নিশ্চিত করে।

অপারেটিং সিস্টেমের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, লিনাক্স, এবং অ্যান্ড্রয়েড। প্রতিটি অপারেটিং সিস্টেমের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বিভিন্ন প্রয়োজন এবং ব্যবহারকারীর পছন্দের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন করা হয়।

নেটওয়ার্কিং এবং ইন্টারনেট

নেটওয়ার্কিং হল কম্পিউটার সিস্টেমগুলির মধ্যে তথ্য বিনিময়ের প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ডাটা শেয়ারিং, রিসোর্স শেয়ারিং এবং যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, যার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়।

ইন্টারনেট হল বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলির একটি বিশাল নেটওয়ার্ক, যা ব্যবহারকারীদের ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা, ইমেইল পাঠানো, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা, অনলাইন শপিং করা, এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট স্ট্রিম করার মতো অসংখ্য কাজ করতে সাহায্য করে।

নেটওয়ার্কিং এবং ইন্টারনেট প্রযুক্তির উন্নতি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিপ্লবী পরিবর্তন এনেছে। এটি তথ্যের অ্যাক্সেস এবং যোগাযোগের গতি বৃদ্ধি করেছে, যা শিক্ষা, ব্যবসা, সরকার এবং ব্যক্তিগত জীবনের অনেক দিকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

Level 2

আমি মো সাগর হোসেন। ছাত্র, বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

ফুলটাইম কন্টেন্ট রাইটার


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস