কোয়ালিটি লাইফ বাড়ানোর কার্যকরী উপায় – ইসলামি নজরিয়ায়

টিউন বিভাগ জীবনী
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

আসসালামু আলাইকুম ভাই-বোনেরা! কখনো কি খেয়াল করেছেন, ঘরে বসে কাজ করতে গিয়ে সময় কেমন উবাব হয়ে যায়? একটু ফোনের আওয়াজ কিংবা টিভির শব্দেই মনটা উড়ে যায়? আজকে আমরা এমন কিছু কার্যকরী উপায় নিয়ে কথা বলব, যেগুলো ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও ঠিক আছে আর আপনার কাজে মন বসাতেও দারুণ সাহায্য করবে।

১. সময়ের কদর বুঝতে হবে

ইসলামে সময়ের কতটা দাম আছে সেটা আমরা সবাই কম-বেশি জানি। রাসূল (সা.) বলেছেন, "পাঁচটা জিনিস আসার আগে আর পাঁচটা জিনিসের কদর কর." - এখানে সময়ই সবার আগে। সকাল সকাল দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সেরে ফেলার চেষ্টা করুন।

হাদিসের কথা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "পাঁচটা জিনিস আসার আগে পাঁচটা জিনিসের কদর কর: মরার আগে জীবন, অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতা, গরিব হওয়ার আগে টাকা-পয়সা, ব্যস্ত হওয়ার আগে ফুরসত আর বুড়ো হওয়ার আগে যৌবন। " (আল-বুখারী: ৬৪১২, মুসলিম: ২৭২৩)

২. কাজ শুরুর আগে পরিকল্পনা

ঘুম থেকে উঠেই প্রথম ১০ মিনিট শুধু ভাববেন কি করবেন। কি করবেন, কখন করবেন - একটা লিস্ট তৈরি করুন। লিস্টটা মোবাইলে নোট করে রাখুন কিংবা ডায়েরিতে লিখে ফেলুন। এতে করে আপনার মাথায় কাজগুলো ভালোভাবে গেঁথে থাকবে আর ঠিক সময়ে কাজগুলো করার ইচ্ছাও জাগবে।

কুরআনের কথা: "হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর আর প্রত্যেকে দেখুক সে আগামীকালের জন্য কি জমা রেখেছে। " (সূরা আল-হাশর ৫৯:১৮) এই আয়াতে নিজের কাজের পরিকল্পনা আর প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

৩. ফোন-টিভি থেকে দূরে থাকা

প্রতি ঘণ্টায় নামাজের সময়টা কাজে লাগান ফোন-টিভি থেকে দূরে থাকার জন্য। ফোন একপাশে রেখে একটু প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকুন কিংবা বাসার লোকজনের সাথে গল্প করুন। এতে করে আপনার মাথা হালকা হবে আর কাজে মন বসবে। সাতদিন চেষ্টা করে দেখুন, ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।

কুরআনের কথা: "নিশ্চয় নামাজ মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ করা হয়েছে। " (সূরা আন-নিসা ৪:১০৩) নামাজ মনকে শান্ত করে আর বাইরের জিনিস থেকে মুক্ত রাখে।

৪. বড় কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করা

কোন বড় কাজ হাতে নিলে তাকে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। যেমন: যদি বই লিখতে চান, প্রথম দিন শুধু কি কি লিখবেন তার ফিরিস্তি তৈরি করুন, পরের দিন প্রথম অধ্যায় শুরু করুন। কাজ ছোট ছোট করে ভাগ করলে আপনার মাথা কাজটাকে আর বড় করে দেখে না, ফলে কাজটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়।

ধরুন: আপনি একটা বই লিখবেন। প্রথমে কাজটা ভাগ ভাগ করে নিলেন। ভাগ করা কাজগুলো:

  • প্রথম দিন কি কি লিখবেন তার ফিরিস্তি তৈরি করলেন
  • দ্বিতীয় দিন ১-২টা ফিরিস্তি লিখলেন
  • এবার তৃতীয় দিন ভাবলেন যে আজকে সবই লিখে ফেলবো, তখন দেখবেন কাজ তাড়াতাড়ি হওয়ার বদলে আরো ধীরে হচ্ছে। কারণ: আপনার মাথা ভাবছে এতগুলো কাজ একসাথে করা সম্ভব নয়/আমি পারবো না ইত্যাদি ইত্যাদি.

কুরআনের কথা: "আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে বোঝা চাপিয়ে দেন না। " - (সূরা আল-বাকারা ২:২৮৬) এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কাজকে সহজ করা আর নিজের সামর্থ্যের মধ্যে রাখা ইসলামের শিক্ষার সাথে মেলে।

৫. নিজেকে পুরস্কার দেওয়া

প্রতিবার একটা কাজ শেষ করলে নিজেকে ছোট্ট একটা পুরস্কার দিন। এটা এক কাপ চা হতে পারে কিংবা একটু বিরতি। এতে করে উৎসাহ বজায় থাকে আর মনও ভালো থাকে।

কুরআনের কথা: "যে লোক ভালো কাজ করে, পুরুষ হোক কিংবা মেয়ে, আর সে মুমিন হয়, আমি তাকে অবশ্যই পবিত্র জীবন দেব আর তাদেরকে তাদের কাজের সবচেয়ে ভালো পুরস্কার দেব। " - (সূরা আন-নাহল ১৬:৯৭) আল্লাহ নিজেই ভালো কাজের জন্য পুরস্কারের কথা বলেছেন, যা মানুষকে উৎসাহিত করে।

কাজের গতি কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব

প্রিয় ভাই-বোনেরা, এই সহজ উপায়গুলো মেনে চললে দেখবেন আপনার কাজের গতি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে! সবচেয়ে বড় কথা হলো এই পদ্ধতিগুলো ইসলামি নিয়ম-কানুনের সাথে মেলে আর আপনাকে আল্লাহর রেজা পেতে সাহায্য করে পাশাপাশি আপনার জ্ঞানকেও বাড়িয়ে তোলে ❤️

Level 2

আমি ওমর ফারুক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ওমর ফারুক। আমি প্রোগ্রামিং ভাষা শিখতে আগ্রহী এবং ইতিমধ্যে stlight(https://bdxroot.github.io/stlight/index.html) নামে একটি প্রোজেক্ট সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে আমি Barrister Sultan Ahmed Chowdhury Degree College-এ পড়াশোনা করছি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস