
বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও অটোমেশনের উত্থান এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সূচনা করেছে। আগে যেসব কাজ সম্পন্ন করতে মানুষের দীর্ঘ সময় ও শ্রমের প্রয়োজন হতো, এখন তা মুহূর্তেই সম্পন্ন হচ্ছে মেশিন ও স্মার্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে। শিল্পকারখানার উৎপাদন লাইন থেকে শুরু করে গ্রাহকসেবা, চিকিৎসা কিংবা ডেটা বিশ্লেষণ—প্রায় সব ক্ষেত্রেই AI তার শক্তিশালী উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। এ কারণেই প্রযুক্তির এই বিকাশ মানুষের কাজের ধরন এবং কর্মক্ষেত্রের কাঠামোয় বড় পরিবর্তন এনে দিচ্ছে।

তবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়েছে এক দ্বৈত বাস্তবতা। একদিকে রয়েছে চাকরি হারানোর ভয়। পুনরাবৃত্তিমূলক ও ম্যানুয়াল কাজগুলো যেমন ডেটা এন্ট্রি বা কল সেন্টার কার্যক্রম এখন সহজেই মেশিন দ্বারা করা সম্ভব, ফলে এসব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে আসতে পারে। কিন্তু অন্যদিকে, AI আবার নতুন নতুন সুযোগও তৈরি করছে। ডেটা সায়েন্স, AI প্রোগ্রামিং, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি কিংবা সৃজনশীল কনটেন্ট তৈরির মতো অনেক নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, যেখানে দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা বাড়ছে প্রতিদিন। তাই বলা যায়, AI ও অটোমেশনের উত্থান যেমন চাকরি হারানোর শঙ্কা তৈরি করছে, তেমনি তা নতুন সম্ভাবনারও দুয়ার খুলে দিচ্ছে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং অটোমেশনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে পুনরাবৃত্তিমূলক ও রুটিন কাজের ওপর। যেসব কাজ প্রতিদিন একই ধাপে, একই নিয়মে করতে হয়—যেমন ডেটা এন্ট্রি, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট কিংবা সাধারণ হিসাবনিকাশ—সেগুলো এখন সহজেই স্বয়ংক্রিয় করা সম্ভব। মেশিন ও সফটওয়্যার এসব কাজ অনেক দ্রুত, কম খরচে এবং নির্ভুলভাবে করতে পারে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো মানবশক্তির পরিবর্তে প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে শুরু করছে, যার কারণে এ ধরনের প্রচলিত চাকরির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একইভাবে গ্রাহকসেবা ও ডেলিভারি খাতেও AI-এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। আগে যেখানে কাস্টমার সার্ভিসের জন্য বড় টিম প্রয়োজন হতো, এখন সেখানে চ্যাটবট বা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট দ্রুত উত্তর দিয়ে গ্রাহকের সমস্যা সমাধান করতে পারছে। অনলাইন শপিং বা ব্যাংকিং খাতে এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া ডেলিভারি সেক্টরে রোবট ও ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। ফলে যেসব কাজ আগে শুধুমাত্র মানুষই করত, এখন তার বড় অংশ AI-চালিত সিস্টেমের হাতে চলে যাচ্ছে। এ কারণেই অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ভবিষ্যতে এসব ক্ষেত্রে মানুষের চাকরি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
AI যেমন অনেক প্রচলিত চাকরি প্রতিস্থাপন করছে, তেমনি এটি নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করছে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসছে নতুন ধরনের চাকরির মাধ্যমে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার, AI ট্রেইনার, রোবট মেইন্টেন্যান্স বিশেষজ্ঞ, সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট ইত্যাদি। এইসব চাকরিগুলো আগে ছিল না, কিন্তু এখন AI প্রযুক্তির প্রসারের কারণে এগুলোর চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। অর্থাৎ, যারা নতুন দক্ষতা অর্জন করবে, তাদের জন্য AI হবে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার একটি বড় সুযোগ।
শুধু নতুন চাকরি নয়, AI মানুষের সৃজনশীলতা, গবেষণা ও উদ্ভাবনের গুরুত্বও বাড়িয়ে তুলছে। কারণ মেশিন নিয়ম মেনে কাজ করতে পারে, কিন্তু মানুষের কল্পনা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। তাই কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজাইন, গবেষণা, শিক্ষা কিংবা কৌশল নির্ধারণের মতো কাজে মানুষ সবসময় এগিয়ে থাকবে। বরং AI এসব কাজে সহায়তা করবে, যাতে মানুষ আরও দ্রুত ও কার্যকরভাবে নতুন ধারণা বাস্তবায়ন করতে পারে।
এছাড়া AI-এর কারণে জন্ম নিচ্ছে একের পর এক নতুন ইন্ডাস্ট্রি। হেলথটেক (স্বাস্থ্য প্রযুক্তি), এডটেক (শিক্ষা প্রযুক্তি), ফিনটেক (আর্থিক প্রযুক্তি), এগ্রিটেক (কৃষি প্রযুক্তি) ইত্যাদি ক্ষেত্রে AI-এর ব্যবহার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। হেলথটেকে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায়, এডটেকে অনলাইন শিক্ষার উন্নত প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে, ফিনটেকে নিরাপদ লেনদেন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় AI গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব ইন্ডাস্ট্রি ভবিষ্যতে অসংখ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে, যেখানে মানুষের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা অপরিহার্য হবে।

AI ও অটোমেশনের দ্রুত প্রসারের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা চাকরিগুলো হলো পুনরাবৃত্তিমূলক ও রুটিন কাজ। এই ধরনের কাজ নিয়মমাফিক, কম সৃজনশীলতা প্রয়োজন হয় এবং যেগুলো সহজে মেশিন বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। যেমন—ডেটা এন্ট্রি, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ, সাধারণ হিসাবনিকাশ ইত্যাদি। এই কাজগুলোতে মানুষের প্রয়োজন ধীরে ধীরে কমে আসছে, কারণ AI তা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে করতে সক্ষম।
এছাড়া, কল সেন্টার ও কাস্টমার সার্ভিস ক্ষেত্রেও মানুষের চাহিদা কমতে শুরু করেছে। চ্যাটবট ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট গ্রাহকের সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে, অভিযোগ গ্রহণ করতে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে সক্ষম। ফলে এই সেক্টরে মানবশক্তির প্রয়োজন কমে যাচ্ছে।
তদ্রূপ, ডেলিভারি ও ট্রান্সপোর্টেশনের কিছু কাজ যেমন ড্রাইভিং বা রুটিন পিক-আপ ও ডেলিভারি সেবা এখন স্বয়ংক্রিয় ড্রোন, রোবট বা স্বচালিত যানবাহনের মাধ্যমে করা সম্ভব। আর বেসিক অ্যাকাউন্টিং ও হিসাবরক্ষণও মেশিন লার্নিং সফটওয়্যার দ্বারা অটোমেট করা যায়। ফলে এই ধরনের চাকরিগুলো AI দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

যেখানে সৃজনশীলতা, আবেগ, জটিল সমস্যা সমাধান এবং মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন, সেই ধরনের চাকরিই AI-এর প্রভাব থেকে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকবে। কারণ মেশিন বা সফটওয়্যার নিয়ম মেনে কাজ করতে পারে, কিন্তু মানুষের অনুভূতি, চিন্তাশক্তি ও সৃজনশীল কল্পনাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।
উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষকতা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে শিক্ষার্থীর মানসিকতা বোঝা, শিক্ষণ পদ্ধতি মানিয়ে নেওয়া এবং ব্যক্তিগত মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। AI শুধুমাত্র তথ্য প্রদান করতে পারে, কিন্তু শিক্ষকের মানবিক দিক এবং শিক্ষার্থীর প্রয়োজন অনুযায়ী সমাধান দিতে পারে না। তদ্রূপ, ডাক্তার রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার সমন্বয় করে সঠিক চিকিৎসা নির্ধারণ করেন, যা AI সীমিতভাবে সহায়তা করতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারবে না।
আইনজীবী ক্ষেত্রেও বিচার-বিশ্লেষণ, কেসের জটিলতা বুঝে কৌশল নির্ধারণ এবং মানসিক প্রভাব বোঝার ক্ষমতা প্রয়োজন, যা AI করতে পারে না। সেই সঙ্গে শিল্পী, লেখক, ডিজাইনার মতো সৃজনশীল পেশার ক্ষেত্রে মানুষের কল্পনা ও আবেগই মূল সম্পদ, যা মেশিন প্রতিলিপি করতে পারে না। এছাড়া উদ্যোক্তা বা বিজনেস লিডার যেসব সিদ্ধান্ত বাজার, অর্থনীতি এবং মানবসম্পদের উপর নির্ভর করে নেন, সেটিও AI সীমিতভাবে সহায়তা করতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
ফলে বলা যায়, যেসব চাকরিতে মানবিক জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও জটিল সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব বেশি, সেইসব পেশাই AI-এর যুগে সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে।
AI ও অটোমেশনের যুগে শুধু চাকরির ধরনই পরিবর্তিত হচ্ছে না, একই সঙ্গে শিক্ষা ও দক্ষতার চাহিদাও ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। যেখানে আগে মূলত সাধারণ জ্ঞান বা সীমিত প্রযুক্তিগত দক্ষতাই প্রয়োজন হত, এখন সেখানে দক্ষতা ও অভিযোজনশীলতার গুরুত্ব অনেক বেশি বেড়েছে। বিশেষ করে যেসব চাকরিতে মানুষের প্রতিযোগিতা AI-এর সঙ্গে রয়েছে, সেখানে রিস্কিলিং (পুনঃপ্রশিক্ষণ) ও আপস্কিলিং (দক্ষতা উন্নয়ন) অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
ভবিষ্যতের চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে হলে মানুষকে নতুন ধরনের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, প্রোগ্রামিং, ডেটা অ্যানালাইসিস, AI ও মেশিন লার্নিং-এর মৌলিক ধারণা, ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট কাজ জানলেই আর কাজ চলবে না; বরং বিভিন্ন দক্ষতা সংযুক্ত করে সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি মূল্যবান হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে আজীবন শেখার সংস্কৃতিও গুরুত্ব পাচ্ছে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থী বা পেশাজীবী যেকোনো বয়সে নতুন দক্ষতা অর্জন, প্রযুক্তি বোঝা এবং নিজেদেরকে আপডেট রাখার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখতে পারবে। তাই AI-এর যুগে কেবল শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, বরং নিরন্তর শেখার মানসিকতা ও অভিযোজন ক্ষমতাই মানুষকে চাকরির বাজারে সুরক্ষিত রাখবে।
AI-এর উত্থান মানে কেবল মানুষের কাজের স্থান কমে যাচ্ছে, এমন নয়; বরং মানুষ ও AI যদি একসাথে কাজ করে, তাহলে উৎপাদনশীলতা ও কর্মক্ষমতা অনেক বেশি বাড়ানো সম্ভব। AI-এর শক্তি হলো ডেটা বিশ্লেষণ, দ্রুত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ সম্পন্ন করা। মানুষ, অন্যদিকে, সৃজনশীলতা, আবেগ, সমন্বয় এবং জটিল সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষজ্ঞ। এই দুইয়ের সমন্বয়ই ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, চিকিৎসা ক্ষেত্রে AI–চালিত ডায়াগনস্টিক টুল ডাক্তারকে রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করছে। AI মেশিন রেডিওলজি স্ক্যান বা অন্যান্য পরীক্ষার বিশাল ডেটা বিশ্লেষণ করে রোগের সম্ভাব্যতা দ্রুত চিহ্নিত করতে পারে। এর ফলে ডাক্তাররা শুধুমাত্র রোগ নির্ণয় নয়, বরং রোগীর জন্য সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন। এই সমন্বিত পদ্ধতি রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার মান উন্নত করছে, সময় বাঁচাচ্ছে এবং ভুলের সম্ভাবনা কমাচ্ছে।
ফলে, AI ও মানুষের সহযোগিতায় কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা, দক্ষতা ও ফলাফলের মান একসাথে বৃদ্ধি পায়। এটি শুধু চিকিৎসা নয়, শিক্ষা, শিল্প, প্রযুক্তি ও অন্যান্য খাতেও প্রযোজ্য, যেখানে মানুষের বিচক্ষণতা ও AI-এর ক্ষমতা মিলিত হলে সমন্বিত ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে।

AI ও অটোমেশনের উত্থান শুধু সুযোগই তৈরি করছে না, বরং কিছু চ্যালেঞ্জও সামনে নিয়ে এসেছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—চাকরি হারানো মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। যেসব কাজ রোবট বা সফটওয়্যার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে, সেখানে কর্মহীনতা বা আয়ের ক্ষতি এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এমন নীতি ও প্রোগ্রাম গ্রহণ করতে হবে যা মানুষের ক্ষতি কমিয়ে আনে এবং পুনঃপ্রশিক্ষণ বা পুনর্বাসনের সুযোগ নিশ্চিত করে।
এছাড়া, AI ব্যবহার ও অটোমেশনের প্রসারে নীতি ও আইনগত দিকও গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি যত দ্রুত এগোচ্ছে, ততই প্রয়োজন হচ্ছে স্পষ্ট ও কার্যকর আইন, যা নৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিকগুলোকে সুরক্ষিত রাখবে। উদাহরণস্বরূপ, AI-এর মাধ্যমে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—সেটি ন্যায্য ও বৈষম্যবিহীন হওয়া জরুরি।
অতঃপর, AI-ভিত্তিক চাকরির ভবিষ্যতে ন্যায্য সুযোগ তৈরি করাও অপরিহার্য। অর্থাৎ, নতুন দক্ষতা অর্জন ও আপস্কিলিং-এর সুযোগ সকল মানুষের জন্য সমানভাবে থাকা উচিত, যাতে প্রযুক্তির সুবিধা সীমিত সংখ্যক মানুষ না পায়। সরকারি নীতি, শিক্ষাগত প্রোগ্রাম এবং সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমতা বজায় রাখা সম্ভব।
ফলে, AI ও অটোমেশনের যুগে শুধু চাকরির ভবিষ্যৎ নয়, বরং সামাজিক ন্যায়, আইনগত কাঠামো এবং সমতা নিয়েও ভাবতে হবে, যাতে প্রযুক্তি মানুষের জন্য একটি নিরাপদ ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

AI ও অটোমেশনের উত্থান ভবিষ্যতের চাকরির ধরনে বিশাল পরিবর্তন আনছে, কিন্তু এটি মানুষের কাজকে একেবারে শেষ করবে না। অনেক প্রচলিত কাজ অটোমেশন দ্বারা স্বয়ংক্রিয় হলেও, একই সঙ্গে নতুন ধরনের চাকরি, দক্ষতা ও সম্ভাবনার দরজা খুলে যাচ্ছে। তাই ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে সাফল্য নির্ভর করবে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতার ওপর।
যিনি নতুন দক্ষতা অর্জন করবেন, ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাবেন, এবং AI-কে সহায়ক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন, তার জন্য এই প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নতুন সুযোগের উৎস হিসেবে কাজ করবে। অন্যদিকে যারা পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ না খাইয়ে শুধুমাত্র আগের রুটিনে আটকে থাকবেন, তারা ঝুঁকিতে থাকবেন। সুতরাং AI-এর যুগে মানবিক দক্ষতা, অভিযোজন ক্ষমতা এবং আজীবন শেখার মানসিকতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা নিশ্চিত করবে মানুষ ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে একটি সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ।
আমি আরিফা ইয়াসমীন। , Gaibandha। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন দক্ষ আর্টিকেল রাইটার, যিনি তথ্যসমৃদ্ধ এবং পাঠক-বান্ধব কনটেন্ট তৈরি করতে পছন্দ করেন। বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লেখা এবং SEO ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট ডিজাইন করার ক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমার লক্ষ্য হলো পাঠকদের জন্য সহজ, বোধগম্য এবং কার্যকর তথ্য পৌঁছে দেওয়া।