
আস সালামু-আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন।
এন্টারটেইনমেন্ট দুনিয়া কিংবা হলিউডের সাথে যারা বিন্দুমাত্র হলেও যোগাযোগ রাখেন, তারা ত্রিমাত্রিক বা 3D দুনিয়ার সাথে কম বেশি হলেও পরিচিত। কি নেই এই ত্রিমাত্রিক দুনিয়ায়? কি করা যায় না এখানে? এওয়ার্ড প্রাপ্ত মুভি “পাইরেটস অব দি ক্যারিবিয়ান” এর বিশাল সমুদ্র কিংবা বেস্ট ক্যারেক্টার এর এওয়ার্ড প্রাপ্ত “ডেভি জোন্স”, জেমস ক্যামেরনের অস্কার বিজয়ী “এভাটার” এর কাল্পনিক “নাভি” জাতি অথবা মারাত্মক ধ্বংস লীলায় ভরা মুভি “২০১২”, অথবা “প্রমিথিউস” এর “দ্য ইঞ্জিনিয়ারস” বা “দ্য এয়ারক্রাফট প্রমিথিউস” এসবই সম্ভব হয়েছে ত্রিমাত্রিকতার সমন্বয়ে। ত্রিমাত্রিক দুনিয়াটা এতই বিশাল যার কোন শেষ নেই। আর যে একবার এই জগতে ঢুকেছে সে জানে এটা কতটুকু মজার জগত। শুধু স্বপ্ন আর স্বপ্ন, যেখানে নিজে কাজ করে, অপরের কাজ দেখে মজা নেবার কোন শেষ নেই।
যারা হলিউডের মুভি চার্টের খবর রাখেন তারা ভাল করেই জানেন যে, হলিউডে এনিমেশন মুভি বের হওয়া মাত্রই তা ব্লকবাস্টার হবেই হবে। এ সবই কিন্তু ত্রিমাত্রিকতার অবদান। আরো অনেক কিছু বলা যায় ত্রিমাত্রিকতা নিয়ে, পরিশেষে এই সিরিজের শেষে আমি ত্রিমাত্রিক এনিমেটেড এবং কিছু লাইভ একশন ফিচারড মুভির লিস্ট দিব যা দেখে আপনারা অবাক হবেন কিভাবে ত্রিমাত্রিকতা আমাদের বিনোদনের সাথে জড়িত।
যারা ত্রিমাত্রিকতা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানেন এবং যারা জানেন না, তাদের কে কিছুটা হলেও জানানোর জন্য আজকের এই লেখা। “থ্রিডি জগতে আপনার যাত্রা শুরু হোক” শিরোনামে এই সিরিজটি শুরু করলাম। একটু মনজোগ দিয়ে পড়তে থাকুন, এরপর আপনিই বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারবেন।
তাহলে চলুন আমাদের পথ চলা শুরু হোক এই অফুরন্ত মজার জগতে। সাথে আপনাদের কে পথ দেখিয়ে, চিনিয়ে দিচ্ছি আমি।
নোটঃ প্রথমেই আমাদের কে কিছু বেসিক বিষয় জানতে হবে। চলুন শুরু করি।
ত্রিমাত্রিকতা বা 3D কি?
এর সংজ্ঞাটা বিশাল। তবে ছোট্ট করে বলতে গেলে, যে সকল বস্তু কার্তেসিয় ব্যবস্থায় তিনটি অক্ষেই বিদ্যমান থাকে (X, Y, Z) তাদেরকেই ত্রিমাত্রিক বলে। কি টেকনিকাল মনে হচ্ছে? আচ্ছা তাহলে সহজ করে বুঝিয়ে দিচ্ছি।
আমরা সবাই হাই-স্কুল জ্যামিতি বইয়ে গ্রাফ একেছি। সেখানে দেখছি দুটি মোটা দাগ থাকে যাদের কে “অক্ষ” বা “Axis” বলে। যেটি আনুভুমিকভাবে থাকে তাকে এক্স অক্ষ বলে, আর যেটি লম্বভাবে থাকে তাকে ওয়াই অক্ষ বলে। এক্স এবং ওয়াই নিয়ে গঠিত হয় দিমাত্রিকতা। এর সাথে আরেকটি এক্সিস “জেড” দিলেই হয়ে যায় ত্রিমাত্রিকতা।
এক্স কে বলা হয় = লেংথ বা দৈর্ঘ
ওয়াই কে বলা হয় = ওয়াইডথ বা প্রস্থ আর
জেড কে বলা হয় = ডেপথ্ বা গভীরতা
তাই যারা এই তিনটি অক্ষ নিয়ে গঠিত তারাই হল থ্রিডি অবজেক্ট।
কম্পিউটার গ্রাফিক্সের সাথে ত্রিমাত্রিক এর সম্পর্ক
কম্পিউটার গ্রাফিক্সের সাথে ত্রিমাত্রিকতার একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কম্পিউটার গ্রাফিক্সে বা সিজি হল সেই ভিজ্যুয়াল আর্টস যা কম্পিউটারের মাধ্যমে বানানো হয়। যেহেতু ত্রিমাত্রিক বস্তুকে কম্পিউটারের মাধ্যমে বানানো হয় তাই থ্রিডি কম্পিউটার গ্রাফিক্সের অন্তর্ভুক্ত।
কম্পিউটার গ্রাফিক্স, যার মধ্যে রয়েছে মুভি, টেলিভিশন, বিজ্ঞাপন, ভিডিও গেমস প্রভৃতি। তাহলে কম্পিউটার গ্রাফিক্স যদি কোন সৌরজগত হয় তাহলে থ্রিডি হল সেই সৌরজত এর একটা বিশাল অংশ।
ত্রিমাত্রিক কম্পিউটার গ্রাফিক্স সম্পর্কে কিছু তথ্য
০১. থ্রিডি অবজেক্ট তিনটি অক্ষেই বিদ্যমান থাকে এটা সত্য, কিন্তু এটা বাস্তবে ধরা ছোয়ার বাইরে। যাকে বলা হয় “ভার্চুয়াল”। বাস্তবিক দুনিয়ার থ্রিডি অবজেক্ট ফিজিক্যালি বিদ্যমান থাকলেও, কম্পিউটার গ্রাফিক্সের থ্রিডি শুধুমাত্র গানিতিকভাবে বিদ্যমান থাকে।
০২.ত্রিমাত্রিক মডেলসঃ ডিজিটাল ভাবে দৃশ্যমান কোন বস্তুর অবয়ব কে থ্রিডি মডেল বলে। যদি থ্রিডি মডেলগুলোর র ডাটা দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে এই থ্রিডি মডেলগূলো কতগুলো বিন্দুর সমন্বইয়ে গঠিত, যাদেরকে একবচনে “ভার্টেক্স” এবং বহুবচনে “ভার্টসিস” বলে। এরা কার্টেসিয় অক্ষে বিদ্যমান থাকে।
০৩. থ্রিডি মডেল তৈরি করার জটিল প্রসেসটি কম্পিউটারের স্পেশালাইজড সফটওয়্যার গানিতিকভাবে করে থাকে। কোন থ্রিডি সফটওয়্যার যেমন অটোডেস্ক মায়া বা থ্রিডি এস ম্যাক্স, তার গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) দিয়ে আর্টিস্টকে সর্বোচ্চ সুবিধাতে কাজ করতে দেয়।
আজকের পার্ট এই পর্যন্তই। আগামী পার্টে থ্রিডি নিয়ে আরো বিস্তারিত অনেক মজার কিছু জানতে পারব। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন। আল্লাহ হাফেয।
আমি সায়ান (Cyan 3D)। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
জ্ঞানমূলক টিউনের জন্য ধন্যবাদ
ভাড়াবিডি