ম্যালওয়্যার জিনিসটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। ম্যালওয়্যার আপনার পিসির পাশাপাশি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও আক্রমন করতে পারে। যদিও স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার অ্যাটাক পিসির মত এত বেশি দেখা যায় না, তবুও সবসময় স্মার্টফোনের ১০০ ভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রাখাই ভাল।
এছাড়া স্মার্টফোনে খুব সহজে কোন ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার অ্যাটাক করতেও পারে না। আপনি যদি ব্ল্যাকবেরি বা আইওএস স্মার্টফোন ইউজার হন, তাহলে আপনি ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার এর বিষয়ে ৯০% নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। আর যদি অ্যান্ড্রয়েড ইউজার হন, তাহলে আপনি কয়েকটি বিষয় মনে রাখলে এবং কয়েকটি কাজ করা থেকে বিরত থাকলেই ভাইরাস বা যেকোনো ধরনের ম্যালওয়্যার এর বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। আজকের টিউনে এমন কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে বলব যেগুলো সবসময় আপনার মনে রাখা উচিৎ যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ইউজ করেন।
আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কখনো না কখনো ম্যানুয়ালি অ্যাপ ইন্সটল অবশ্যই করেছেন। ম্যানুয়ালি অ্যাপ ইন্সটল করার মানে হচ্ছে ট্রাস্টেড অ্যাপ স্টোর ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে কোন অ্যাপ ইন্সটল করা। আপনি হয়ত এই কাজটি অসংখ্যবার করেছেন ইন্টারনেট বাঁচানোর জন্য বা সময় বাঁচানোর জন্য। কিন্তু এই কাজটি কখনোই করা উচিৎ নয়।
গুগল প্লে স্টোর থেকে আপনি যেসব অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইন্সটল করেন সেগুলো সবসময়ই নিরাপদ এবং সাধারনত আপনার স্মার্টফোনের কোন ক্ষতি করবেনা। কিন্তু অন্য কোন অ্যাপ যদি আপনি ম্যানুয়ালি APK ফাইলের সাহায্যে ইন্সটল করেন তাহলে সেসব অ্যাপে এই ধরনের কোন নিশ্চয়তা থাকবে না। তাই আপনার ইন্সটল করা অ্যাপটি ১০০% সেফ কিনা সেটা আপনি জানতে পারবেন না। তাই শুধুমাত্র অনুমান করে এসব অ্যাপ ইন্সটল করা উচিৎ নয়।
অনেকসময় অনেক ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যাপ আপনি প্লে স্টোরে পাবেন না। হয়ত অ্যাপটি আপনার দেশে এভেইলেবল না অথবা কোন কারনে আপনি অ্যাপটি খুঁজে পাচ্ছেন না প্লে স্টোরে। এই অবস্থায় যদি আপনাকে অ্যাপটি ইন্সটল করতেই হয় তখন আপনাকে অ্যাপটি অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে হবে এবং ম্যানুয়ালি ইন্সটল করতে হবে। এই সময় অনেকে যে কাজটি করে তা হল, গুগলে সার্চ বারে অ্যাপটির নাম লিখে সার্চ করে যেকোনো একটি সার্চ রেজাল্টে ঢুকে যেকোনো একটি ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করে।
এই কাজটি কখনোই করা উচিৎ নয়। অ্যাপ যদি ম্যানুয়ালি ইন্সটল করতেই হয় তবে শুধুমাত্র ট্রাস্টেড ওয়েবসাইটগুলো থেকেই করুন। অ্যাপ ইন্সটল করার ক্ষেত্রে আপনি Apkmirror ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারেন। ম্যানুয়ালি অ্যাপ ইন্সটল করার ক্ষেত্রে এটাই সবথেকে ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট। এখানে আপনি প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যাপ এর সব ধরনের APK ফাইলই পাবেন। তাই ম্যানুয়ালি অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইন্সটল করার দরকার হলে এই ওয়েবসাইট থেকে করবেন। এই ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করলে অ্যাপ এর নিরাপত্তা নিয়ে আপনি তুলনামুলকভাবে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
আপনি হয়ত অনেকসময় অনেক ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় ব্রাউজার থেকে ওয়েবসাইটটি ভিজিট না করার জন্য অনেক ধরনের ওয়ার্নিং পেয়েছেন যেমন, " This website contains malicious content. Go back for safety " এবং আপনিও হয়ত অন্য অনেক অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের মত ওয়ার্নিংটি স্কিপ করে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করেছেন। এই কাজটিও কখনো করা উচিৎ নয়।
আপনি যদি ফোনে গুগল ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি এই বিষয়ে আরো বেশি সতর্ক হতে পারবেন। আপনার ব্রাউজার যদি কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় এই ধরনের কোন ওয়ার্নিং দেয় তাহলে আপনি সাথে সাথে ব্রাউজার ট্যাবটি ক্লোজ করে দিবেন। কারন ওয়েবসাইটটিতে যদি কোন ম্যালিশিয়াস কনটেন্ট থাকে তাহলে তা আপনার স্মার্টফোনের ক্ষতি করতে পারে। এই ধরনের ওয়ার্নিংগুলোকে হালকা ভাবে নেওয়া একেবারেই উচিৎ নয়।
আপনিও হয়ত অন্যান্য সাধারন আন্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের মত সবসময় অ্যাপ ইন্সটল করেন এবং এরপরে সরাসরি অ্যাপটি ব্যবহার করা শুরু করেন। অ্যাপ এর ব্যাপারে আর কিছুই ভাবেন না বা ভাবার প্রয়োজন মনে করেন না। কিন্তু সবসময় এমন করা উচিৎ নয়। আপনি যেখান থেকেই অ্যাপ ইন্সটল করেন না কেন, অ্যাপ ইন্সটল করার আগে আপনি অ্যাপ এর ডিটেইলস চেক করে দেখবেন যে অ্যাপটি আপনার স্মার্টফোনের কি কি অ্যাক্সেস করার পারমিশন চাচ্ছে।
যেমন, আপনি যদি একটি ইন্টারনেট ব্রাউজার অ্যাপ ইন্সটল করার সময় দেখেন যে অ্যাপটি আপনার ফোন, কন্টাক্ট বুক এবং কল হিস্টোরি অ্যাক্সেস করার পারমিশন চাচ্ছে তাহলে সেটা অবশ্যই সাধারন কোন ব্যাপার নয়। তাহলে আপনার অ্যাপটি ইন্সটল করা উচিৎ হবে না। তাই আপনি যদি দেখেন যে কোন অ্যাপ এই ধরনের কোন সন্দেহজনক পারমিশন চাচ্ছে তাহলে অ্যাপটি ইন্সটল করবেন না।
অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা একটি কাজ অনেক বেশি পরিমানে করে থাকেন। সেটা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের থার্ড পার্টি ক্লিনার বা অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ইন্সটল করা এবং সবসময় ব্যবহার করা। যেমন DU Cleaner, 360 Security, Clean Master ইত্যাদি। অন্যান্যদের মত আপনিও যদি মনে করে থাকেন যে এইসব অ্যাপ আপনার স্মার্টফোনকে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের হাত থেকে বাঁচাবে এবং ফোনকে ১০০% সেফ রাখবে তাহলে আপনি সম্পূর্ণ ভুল ভাবছেন।
আসলে এই ধরনের অ্যান্টিভাইরাস বা ক্লিনার অ্যাপ আপনার ফোনের ১% উপকারও করেনা। অ্যান্ড্রয়েডে ফাইল স্ক্যান করা এবং ভাইরাস রিমুভ করা এগুলো শুধুমাত্র শো অফ। বরং এসব অ্যাপ আপনার র্যাম ক্লিন করার নামে আপনার স্মার্টফোন এবং ফোনের র্যামের যথেষ্ট ক্ষতি করে। এছাড়া এই ধরনের অ্যাপগুলো একেবারেই নিরাপদ নয়। এই অ্যাপগুলো বিভিন্ন ধরনের সন্দেহজনক পারমিশন চায় এবং আপনার ফোনের সব ধরনের ডাটা অ্যাক্সেস করার ক্ষমতা রাখে। তাই আপনার ফোনকে নিরাপদ রাখতে চাইলে এই ধরনের অ্যাপগুলো যত দ্রুত সম্ভব আনইন্সটল করুন।
তো এগুলোই ছিল এমন কয়েকটি বিষয় যা আপনার অবশ্যই মনে রাখা উচিৎ এবং মেনে চলা উচিৎ যদি আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনটি নিরাপদ রাখতে চান। আজকের মত টিউনটি এখানেই শেষ করছি। আশা করি টিউনটি আপনাদের ভাল লেগেছে। টিউন সম্পর্কে কোন ধরনের কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। ভাল থাকবেন।
You can contact me on : Facebook
আমি সিয়াম একান্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 40 টি টিউন ও 82 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সিয়াম রউফ একান্ত। অনেকে সিয়াম নামে চেনে আবার অনেক একান্ত নামে। যাইহোক, পড়াশুনা একেবারেই ভাল লাগেনা আমার। ভাল লাগার মধ্যে দুইটা জিনিস , ফটোগ্রাফি আর প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির প্রতি ভাললাগা থেকেই টেকটিউন্স চেনা এবং টেকটিউন্সে আইডি খোলা। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়......
“ট্রাস্টেড ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুণ”
আমার মতে সাইড লোড না করায় ভালো। কাকে ট্র্যাস্ট করবো অ্যান্ড কিভাবে? গুগল প্লে ছাড়া কার উপর ট্র্যাস্ট করবো? হ্যাঁ, এপিকেমিরর বড় সাইট, কিন্তু তাদের রক্ষনাবেক্ষন নিশ্চয় গুগলের সমান হবে না!
আর আমি প্লে স্টোর ব্যতিত অ্যাপ ডাউনলোড করার দরকারও অনুভব করি না।
~ধন্যবাদ 🙂