
কেমন আছেন বন্ধুরা ?
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকের টিউনে আমি আলোচনা করবো IMEI নাম্বার কি ? কিভাবে চুরি বা হারিয়ে যাওয়া ফোন ট্র্যাক করা যায়। যদি হারিয়ে বা চুরি হয়ে যাওয়া ফোনের IMEI নাম্বার না থাকলেও কিভাবে ট্র্যাক করবেন সে ফোনটি।

IMEI এর ফুল ফর্ম হচ্ছে International Mobile Equipment Identity
অনেকেই একটা ভুল ধারনা রাখেন যে IMEI নাম্বার শুধুমাত্র ফোনের জন্যেই হয়ে থাকে, তবে সেটা মোটেও ঠিক নয়।
IMEI নাম্বার হচ্ছে ১৫ নাম্বারের এমন একটি নাম্বার যেটা নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয় এমন সব ডিভাইসের মধ্যেই থাকে।
আপনি যে নোটবুক ব্যবহার করছেন,বা যে মডেমটি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হচ্ছেন সবকিছুরই একটি আলাদা আলাদা ১৫টি সংখ্যা সংবলিত IMEI নাম্বার রয়েছে। IMEI হচ্ছে প্রত্যেকটি ডিভাইসের একটি পরিচয় নির্ধারন করার জন্যে ব্যবহারিত একটি নাম্বার। কোনো ডিভাইস যখন একটি সেলুলার নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হয় তখন সে ডিভাইসটি নেটওয়ার্কের কাছে তার IMEI এর মাধ্যমেই পরিচিত হয়ে থাকে।
ফোনের বিলে, ফোনের বক্সে, ফোনের ব্যাকপার্টে আপনার এই IMEI নাম্বার দেখতে পাবেন অথবা ফোনের ডায়ালপ্যাডে গিয়ে *#06# নাম্বার দিয়ে কল করলে IMEI নাম্বার দেখতে পাবেন।

আপনার ফোনটি যদি স্মার্ট ফোন না হয়ে থাকে শুধুমাত্র একটি নরমাল ফিচ্যার সমৃদ্ধ ফোন হয়ে থাকে তাহলে আসলে ট্র্যাক নিজ থেকে করতে পারা সম্ভব না। আপনার এই ধরনের ফোন যদি চুরি হয়ে থাকে তাহলে আপনি থানায় গিয়ে ডায়েরি করে সেই ডায়েরির কপিটি সিম কোম্পানির কাছে সাবমিট করে আপনার সিমটি তুলে আনতে পারেন, এছাড়াও আপনি তাদের বলতে পারেন যে এই ফোনটি যাতে আবার ওপেন করা হলে সাথে সাথে লক করে দেওয়া হয়। এছাড়া এই ফোনের লোকেশন ট্র্যাকিং ও তারা করতে পারবে যদি আপনি তাদের আপনার ফোনের IMEI নাম্বার দিয়ে দিন, আপনার ফোনটি যখনি আবার নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হবে সাথে সাথে তারা একটি নোটিফিকেশন পেয়ে যাবে।
কিন্তু আপনার ফোনটি পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করছে সম্পুর্ন পুলিশের উপর। পুলিশ যদি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে, তাহলে তারা সহজেই ফোনটি অন করলে গিয়ে আপনার ফোনটি উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পারবে চুরি করা ব্যক্তির কাছ থেকে, তবে সেটা আশা করাই ভুল হবে কারণ আমাদের দেশের পুলিশদের যে অবস্থা তা তো আশা করি সবাই জানেন :p, আর দৈনিক কত হাজার হাজার ফোন চুরি হচ্ছে তা আসলেই ট্র্যাক করে সেই চোর কে এরেস্ট করার মতো লোক পুলিশের আছে নাকি সন্দেহ।
তবে আপনার ফোনটি যদি হয় স্মার্ট ফোন তাহলে আর চিন্তা নেই চলুন জেনে নি যদি আপনার স্মার্ট ফোনটি চুরি হয়ে যায় বা হারিয়ে যায় তাহলে আপনারা কিভাবে সেটা ট্র্যাক করবেন বা অন্যান্য পদক্ষেপ নিবেন যাতে আপনার ফোনটির কারণে আপনার কোনো ক্ষতি না হয়। আপনার ফোনটি যদি হয় এন্ড্রয়ড এবং আপনার ফোনটি যদি হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায় প্রথমেই আপনাদের লগিন করতে হবে ডিভাইস ম্যানেজারে যাওয়ার পরে ড্যাশবোর্ডে যেতে হবে আপনাদের।
আমি ধরে নিচ্ছি এন্ড্রয়ডই সবাই ব্যবহার করেন সুতারাং আমি এন্ড্রয়ড ফোন হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলে কিভাবে ট্র্যাক করবেন, বা অন্যান্য পদক্ষেপ নিবেন যা আপনার প্রাইভেসি রক্ষা করবে সে সম্পর্কে বলছি। প্রথমেই এখান থেকে ডিভাইস ম্যানেজারে লগিন করবেন। নিচের স্ক্রিনশটে দেখতে পাচ্ছেন ড্যাশবোর্ডে যাওয়ার পরে আমার এন্ড্রয়ড ডিভাইস যেটাতে আমি এই নির্দিষ্ট ইমেইলের মাধ্যমে প্লে-স্টোরে সাইনআপ করেছি সেটা দেখা যাচ্ছে।

এবার যেতে হবে ম্যানেজ এক্টিভ ডিভাইসের এই লেখাটিতে ক্লিক করে ডিভাইস ম্যানেজারে। যাওয়ার পরে আপনার ফোনটি যদি অনলাইন থাকে অর্থাৎ অন থাকে এবং জিপিএস অন করা থাএ তাহলে আপনি আপনার ফোনটি ট্র্যাক করতে পারবেন, যদি আপনার ফোনটি হারিয়ে যায় তাহলে আপনি খুঁজে বের করে আনতে পারবেন। আর যদি আপনার ফোন যদি ট্র্যাক করা না যায় তাহলে আপনার ফোনটি লক করে দিতে পারেন, তাহলে আপনার ফোনটির অন্যান্য তথ্য আর কেউ দেখতে না পারে এই পদক্ষেপ নিতে পারেন আপনারা।
এছাড়া আপনার যদি এই সমস্যা হয় তাহলে আপনার ফোনের ডাটাগুলো মুছে দিতে পারেন, তাহলে আপনার ফোনের সব তথ্য মুছে যাবে এবং আপনার কন্টেন্ট গুলো সংরক্ষিত থাকবে। আর আপনার ফোনটি যদি হারিয়ে যায় আপনি যদি সাইলেন্ট করে রাখেন আপনার ফোন তাহলে আপনার ডিভাইস ম্যানেজারে লগিন করে সেখান থেকে আপনার ফোনটির রিংটোন বাজার কমান্ড দিতে পারবেন, এই কমান্ডটি দিলে আপনার ফোনটি সর্বোচ্চ আওয়াজে রিংটোন বাজানো শুরু করবে যাতে আপনি সহজেই ফোনটি খুঁজে বের করতে পারবেন।
এছাড়া আপনার যাওয়া সম্ভব নয় এমন জায়গায় হয় তাহলে আপনি আপনার ফোনটি লক করে দিয়ে লকস্ক্রিনে একটি মেসেজ সংযুক্ত করে দিতে পারেন যে আপনার ফোনটি হারিয়ে গিয়েছে এবং ফিরিয়ে দিতে চাইলে এই নাম্বার যোগাযোগ করুন এই ধরনের একটি মেসেজ।


এখন আপনি যদি ডিভাইস ম্যানেজারের মাধ্যমে এইসব করেন তাহলে হয়তো আপনার ফোনটি আপনার উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে। এখন আপনার যেতে হবে পুলিশের কাছে এবং রিপোর্ট করতে হবে পুলিশের কাছে, এখন যদি আপনি IMEI নাম্বার না থাকে তাহলে আপনি সেই রিপোর্ট করতে পারবেন না।
আপনার IMEI নাম্বারটি আপনার কাছে না থাকলেও সেটা ডিভাইস ম্যানেজার থেকে সহজেই বের করা যাবে।
আপনি আপনার গুগল ড্যাশবোর্ডে যান এবং ওখানে আপনি ডিভাইসেস ট্যাবে দেখতে পাবেন আপনি এতদিন পর্যন্ত যতগুলো ডিভাইস ব্যবহার করেছেন সবগুলোর IMEI নাম্বার দেখতে পাবেন।
এখন আপনার প্রশ্ন হতে পারে IMEI নাম্বার দিয়ে তো ফোন ঠিকমতো ট্র্যাক করতে পারবে না এটার দরকার কি ?
তাদের জন্যে উত্তর হচ্ছে IMEI নাম্বারটি আপনার ফোনের পরিচয়ের জন্যে ব্যবহার হবে এবং এছাড়াও আপনার ফোন অপারেটর চাইলে আপনার ফোনটি ব্লক করে দিতে পারবে, এবং আর ফোনটি ব্যবহার যোগ্য থাকবে না।
এছাড়া ফোনের IMEI নাম্বারটি চেইঞ্জ করা যায়, তবে সেটা এক দেশের আইন অনুযায়ী এক রকম অনেক দেশে এই জিনিসটি অনৈতিক।
এছাড়া IMEI নাম্বার চেইঞ্জ করার জন্যে আপনার ফোনটি হতে হবে রুটেড ফোন, একেক ফোনের জন্যে একেক সিস্টেমে এই নাম্বার চেইঞ্জ করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সফল বা অনেক ক্ষেত্রে সফল না হওয়ারও সম্ভবনা থাকে।
তবে বন্ধুরা আপনাদের ফোন যদি চুরি হয়ে যায় তাহলে ডিভাইস ম্যানেজারের মাধ্যমে যে যে পদক্ষেপ আপনারা নিতে পারবেন তা আমি বলে দিয়েছ উপরেই যা আপনাদের আশা করি অনেক কাজে লাগবে, এই পদক্ষেপ গুলো নেওয়ার পরে আপনার দরকার হবে পুলিশের কাছে যাওয়া।
এরপর পুলিশের উপরেই নির্ভর করছে আপনার ফোনটি উদ্ধার করা যাবে নাকি না সেটা।
তো বন্ধুরা সবাইকে ধন্যবাদ সময় নিয়ে টিউনটি পড়ার জন্যে। কেমন লাগলো আপনার জানান টিউনমেন্টের মাধ্যমে। আগামী টিউনের আগ পর্যন্ত বিদায় চেয়ে নিচ্ছি সবার কাছে। ভালো থাকুন সবাই এই কামনা জানিয়ে শেষ করছি আজকের টিউন আল্লাহ হাফেয।
আমি ফারহান সাদিক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অনেক সুন্দর পোষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ