সোনার হরিন অ্যাডসেন্স – অ্যাডসেন্স কাজ করে এক জন ব্লগারের স্বাবলম্বী হওার গল্প

অনেকের কাছে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করাটা আজো একটা রহস্যর মতই। তবে কিছু জিনিস জানলে এটি রহস্য থাকার কথা না। খোদ বাংলাদেশে বসে এখন অনেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে বিভিন্ন ভাবে। অ্যাডসেন্স থেকে টাকা পাওয়া তাদের ভেতর একটি। আজ আমি একটি পুরানো টিউন শেয়ার করতে যাচ্ছি যা অনুপ্রেরণা যোগাবে নতুনদের। টিউনটি যদি পড়তে শুরু করেন তাহলে আমার অনুরধ থাকলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত পড়া থামাবেন না।

 

আমি রাশেদ হাসান আকাশ। কাজ করছি দীর্ঘ দের বছর যাবত গুগল এডসেন্স নিয়ে। আজকে যেই লিখাটা লিখছি অনেকের কাছে হয়তো গল্প মনে হয়ে পারে কিন্তু একটুও মিথ্যে নয়। মাত্র বছর খানেক কাজ করেই আজ আমি প্রতি মাসে ১০০০ ডলারের মত আয় করছি। আর এই ছোট্ট সফলতাটুকু কিভাবে এল তা নিয়ে বিস্তারিত জানাতেই আজকের এই টিউন। তো, চলুন পিছনে ফিরে যাই।

যেভাবে আমার ইন্টারনেট জগতে আগমন?

২০০৯ এর শেষের দিকে আমি যখন U@C কোচিং সেন্টারে একজন কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করি, তখনই প্রথম ইন্টারনেট এর সাথে আমার পরিচয়। আর তখন থেকেই আমি ইন্টারনেট সম্পর্কে জানি। এর কিছুদিন পর আমি একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলি। এটাই ছিল আমার প্রথম কাজ ইন্টারনেটে। তবে এটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিলাম অনেকদিন। একদিনের ঘটনাঃ AIUB এর এক বড় ভাই আমার কম্পিউটারে একটা ভাইরাস ঢুকিয়ে দিল। আমি যখন এ কম্পিউটার অন করি, ১০/১৫ সেকেন্ড পড়ে আবার বন্ধ হয়ে যায়। মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না। কেন এমন হচ্ছে? কি ধরতে পেরেছেন? হ্যাঁ, তিনি আমার কম্পিউটারে একটা অটরান ভাইরাস স্টার্টআপে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। পড়ে অবশ্য উনিই সেটা ঠিক করে দেন। তো, আমি উনাকে বললাম, এইটা কিভাবে করলেন? তিনি আমাকে বললেন, টেকটিউনস নামে একটা ব্লগ আছে সেখান থেকে শিখেছি। আমি উনার কাছে লিঙ্ক চাইলাম। উনি আমাকে লিঙ্ক দিলেন। বুঝতেই পারিনি মুরসালিন ভাই (AIUB এর ওই ভাইয়ের নাম ছিল মুরসালিন) আমাকে আসলে ব্লগের লিঙ্ক নয়, আমার লাইফের মোড় ঘুরানোর লিঙ্ক দিয়েছেন। তো সারাদিন টেকটিউনসে পড়ে থাকতাম। রাত জেগে জেগে লেখা পড়তাম। হঠাত একদিন চোখে পড়ল ডেভসটিম লিমিটেড এর কো ফাউন্ডার “তাহের চৌধুরী সুমন”ভাইয়ের ব্লগিং শুরু করা নিয়ে একটি লেখা। লেখাটা পড়ে আমার এতটাই ভালো লাগলো যে আমি সেদিনই উনার সমস্ত লেখাগুলো খুঁজা শুরু করলাম। পেয়েও গেলাম অ্যাডসেন্স নিয়ে উনার লেখাগুলো। ব্যস, আর যায় কোথায়?? সারাদিন এগুলো পড়ি আর স্বপ্ন দেখি আমিও একদিন অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করব। কিন্তু কিভাবে শুরু করব এটাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কথায় আছে, “ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ঘাটতে ঘাটতে সুমন ভাইয়ের ফেসবুক আইডি পেয়ে গেলাম। দিলাম ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট!!! এরপর?????

Blogging

বিষয় নির্বাচন নিয়ে মহা বিপদঃ

সুমন ভাই আমার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করলেন। তার কাছে জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়া আমি তো ব্লগিং সিখতে চাই। আমি কিভাবে শুরু করবো?? সুমন ভাই আমাকে বললেন যে তুমি কি কি জান? আমার সোজাসাপ্টা উত্তরঃ আমি কিছুই জানি না। সুমন ভাই তখন বললো যে ব্লগিং কাজ করতে গেলে আমাকে জানতে হবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কিংবা যে কোন সিএমএস  সাইট ডিজাইনের জন্য, জানতে হবে লেখা লেখি এর সাইটটাকে প্রোমট করার বিষয় গুলোও জানতে হবে। উনি আমাকে বেশ কয়েকটা সাইটের লিঙ্কও দিয়ে দিলেন। এরপর শুরু করলাম ওয়েব ডেভেলপিং শিখা। যখন মুটামুটি শিখলাম, তখন সুমন ভাইকে নক করলাম উনি সাজেস্ট করলেন আমার জানাশুনা আছে এমন বিষয় নিয়ে লিখা লিখি করতে।  এবার আরেকটা টেনশন এ পরলাম। একাউন্ট তো খুললাম, কিন্তু কি বিষয়ে আমি ব্লগিং করবো কারন আমার জানাশুনার বিষয় গুলো খুব কম? এবার বিষয় খুঁজে পাচ্ছিনা। মহা টেনশন! অবশেষে আবার আরেক ত্রাণকর্তার খোঁজ পেলাম? এবার কে জানেন? জিন্নাতুল হাসান ভাইয়ের বাংলা ব্লগটি। সেখানে নাম মনে নেই এক লেখকের টিউনে জানতে পারলাম যে, আপনি যেই বিষয়টি খুব ভালো জানেন, সেই বিষয় টি নিয়ে ব্লগিং শুরু করেন, ঠিক সেই সুমন ভাইয়ার মতই উত্তর। এবার আবার চিন্তা শুরু হলঃ আমি কোন বিষয়টা ভালো জানি? (আমার কাছে মনে হয় কিছুই জানিনা আবার মনে হয় আমি দুনিয়ার সব ই জানি। হা…হা…হা…) আমি তখন প্রচুর বই পরতাম। আচমকা মাথায় আইডিয়া এল যে, আমি যদি ই-বুক নিয়ে সাইট করে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু করলাম ই-বুক নিয়ে কাজ। অবশেষে একটা সাইট দাড়করালাম ই-বুক নিয়ে। কিন্তু সাইটে তো বই আছে ঠিকই, ভিজিটর কই? আবার সমস্যা?

সাইটে ভিজিটর নেই, এখন উপায়?

rashed

কদিন বাদেই সুমন ভাইকে আবারো মেসেজ দিলাম। ভাইয়া, আমি তো সাইট করছি কিন্তু ইনকাম কই??? সুমন ভাই এবার আমাকে বুঝিয়ে বললেন যে, সাইটে ইনকাম করতে হলে আমার প্রথমেই দরকার প্রচুর পরিমানে ভিজিটর। আমার সাইটে জত বেশি ভিজিটর আসবে ততদ্রুত আমার ইঙ্কামের রাস্তা খুলবে। আর যায় কোথায়, শুরু করলাম ফেসবুকে যেখানে সেখানে টিউমেন্ট করা। যার তার সাইটে স্প্যামিং করা। কিন্তু ভিজিটর আসতেছেই না। যদিও আসে, কিন্তু তারা থাকে না। এখন উপায়? ইতিমধ্যে আমি অ্যাডসেন্স এ অ্যাপ্লাইও করে ফেলেছি। ফলাফলঃ পাইনি।

নতুন সমস্যায় পড়লামঃ

হ্যাঁ, একেতো সাইটে ভিজিটর নেই এই চিন্তায় আমি অস্থির। কিন্তু, হঠাত করেই সুমন ভাই বললো তুমি এইভাবে করলে হবে না। যদি ব্লগিং কে পেশা হিসেবে নিতে চাও, তবে Domain Hosting কিনে শুরু কর। এদিকে আমার বিশ্বাসে আস্তে আস্তে চির ধরতে শুরু করছে যে হয়তো আমার পক্ষে এইসব সম্ভব না। কিন্তু সুমন ভাইয়ের কথা গুলো বিশ্বাস করতাম। আর আজও করি। তো তার কথা মত ডোমেইন হোস্টিং কিনেই শুরু করলাম। আমি ততদিনে জুমলা শিখে গেছি। প্রথম সাইটটা বানালাম জুমলা দিয়ে। কিন্তু সমস্যাটা রয়েই গেল। সাইটে ভিজিটর নেই। আগেই জেনে গেছি যে, সাইটে ট্র্যাফিক না থাকলে টাকাও নেই!! সুতরাং, সাইটের ভিজিটর বাড়ানো আমার জন্যে অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ালো। (যদি ইনকাম করতে চাই)

শুরু হল এসইও শিখাঃ

সাইটে ভিজিটর নেই কেন? কি করে সাইটে ভিজিটর বাড়াবো এই সব নিয়ে যখন খুব চিন্তায় আছি। তখনই পাশে এসে দাঁড়ালেন সুমন ভাই। জানালেন এসইও কথা।  কিওয়ার্ড রিসার্স, অনপেজ অপটিমাইজেশন এবং অফপেজ অপটিমাইজেশন আরও কত্ত কি। তাঁর লিখা গুলো এবং নেটেও এসইও নিয়ে পড়াশুনা করতে বললেন তার কথা মত শুরু করলাম এসইও শেখা। পাশিপাশি সাইটের এসইও’র কাজও। মাত্র ১০/১৫ দিনের মধ্যেই আমি দেখলাম আমার সাইটে উল্লেখ পরিমাণ ভিজিটর আসা শুরু করেছে। মুখের হাসিটাও আস্তে আস্তে ফুটতে শুরু করছে। কিন্তু ইনকাম কই????

দেখতে দেখতে প্রায় ৭/৮ মাস পার হয়ে গেছে। আমার সাইটে এখন অনেক ভিজিটর (দৈনিক ১০০০ পেজভিউ!!!) আসে। সুমন ভাই বললো এবার অ্যাডসেন্স এ এপ্লাই কর। আমি করলাম। কিন্তু পেলাম না। সুমন ভাইকে জানালাম। তিনি সাইট দেখে বললো, সাইটের ডিজাইন চেঞ্জ কর আর বাংলা লেখা গুলো রিমুভ কর। উনার কথামত সব ঠিকঠাক করে আবার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট করার নিয়ম অনুযায়ী গুগল এ রিকুয়েস্ট করলাম। ৪ দিন পর রিপ্লে এল, আমার অ্যাকাউন্ট এক্টিভ হয়নি। কারণ, Unacceptable content. আবার সুমন ভাইয়ের সরানাপন্ন হলাম। তিনি বললেন, আমি অ্যাডসেন্স এর নীতিমালা পড়েছি কিনা?? আমি বললাম না। তখন সুমন ভাই আমাকে বললেন যে আপনি আমার আগের টিউন গুলা আবার পরেন। সেখানে সুমন ভাইয়ের কিছু লেখা দেখে বুঝতে পারলাম আমার সাইটে আরও ভালো মানের কন্টেন্ট লাগবে, ভিসিটর আরও বেশি লাগবে, আরও বেশি পেজভিউ লাগবে। ঠিক আছে। আশা ছারলাম না। আবারও শুরু করলাম। (ঘুরে ফিরে আবার SEO তে যাওয়া লাগলো)।

অ্যাডসেন্স নামক সোনার হরিণটা পেয়েই গেলামঃ

দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেলো। আমার ভিসিটর ও বাড়া শুরু হল। আমিও টিটি থেকে ওয়েব ডিজাইনিং শিখে নিয়েছি। জুমলার উপর মোটামুটি হাফেজ হয়ে গেলাম। এইবার নিজের মানসিকতার ও পরিবর্তন করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, টাকা ইনকাম করতে পারি আর না পারি, প্রতিদিনই আমি আমার সাইটে নিত্য-নতুন বই আপলোড করবো। (তাই বলে ভাববেন না যে, আমি অ্যাডসেন্সের জন্যে আবেদন করা বন্ধ রেখেছি!!) ঠিক মত টিউন করি, ঠিক মত SEO করি, নিয়মিত ভিসিটরদের চাহিদার প্রতি খেয়াল রাখি। আমার তখন দৈনিক সাইট ভিসিট হয় ১২০০ বারের উপর। অ্যাডসেন্স পাই আর না পাই, নিজেকে সার্থক মনে হতে লাগলো। কে জানতে এরই মধ্যে আমি আরও এক জায়গায় সফল হয়ে যাচ্ছি!!!!!!!!!!!!!!

হ্যাঁ, আমি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পেয়ে গেছি। এবার আমাকে কে ঠ্যাকায়?

এক্যাউন্ট তো পেয়েছি, কোড বসাবো কোথায়?

হ্যাঁ, আমি এখন মোটামুটি সফল একাউন্ট পেয়ে গেছি। কিন্তু, সমস্যা হচ্ছে কোথায় কোথায় অ্যাডের কোড বসাবো? এবার আবার ত্রাণকর্তা তাহের চৌধুরী সুমন ভাই উনি আমাকে মাসুদুর রশিদ ভাইয়ের লেখার লিংক দিলেন। তার একটা টিউন থেকে জানতে পারলাম কোথায় অ্যাড কোড বসাতে হবে? কিভাবে বসাতে হবে? একটা পেজ এ সর্বোচ্চ কয়টা লিঙ্ক অ্যাড বসাতে পারব, কয়টা টেক্সট/ইমেজ/ব্যানার অ্যাড বসাতে পারব? এইসব। তার টিউন মত সব বসালাম। এবার অপেক্ষা টাকা আর টাকা ইনকামের। হায়রে, টাকা আর টাকা। টাকা আর টাকা। টাকা আর টাকা। টাকা আর টাকা। (আমি কি তখন যানতাম, রাস্তা আরও অনেক দূর?!) এরই মধ্যে তাহের ভাইয়ের সেই বিখ্যাত টিউনের লিঙ্ক আমাকে পাঠিয়ে দিলেন “গুগল এডসেন্স ধারীরা সাবধান হোন : এডসেন্স ব্যান এড়াতে টিউনটিতে বিশেষ দৃষ্টি দিন”বলেন তো দেখি, অ্যাডসেন্স পাওয়ার সাথে সাথে যদি কেউ এমন হুমকি দেয় মেজাজ টা কেমন লাগে????? (ভাগ্য ভালো, সেদিন উনি লিঙ্কটা দিয়েছিলেন। নয়তো কবেই আমার একাউন্ট পটল তুলত)

মাস শেষ হয়ে গেলো, ইনকাম মাত্র ১৬ সেন্ট????

একমাস হয়ে গেলো। আমার ইনকাম হল মাত্র ১৬ সেন্ট? ক্লিক ও পড়ে কম। অথচ ভিসিট হয় ১২০০+. বিশ্বাস করা যায়? (পরের মাসের ইনকাম শুনলে লাফ দিবেন) এতদিনে আমি মাসুদুর রশিদ ভাইকে চিনে ফেলেছি। তাই, তার সরনাপন্ন হলাম। তিনি আমাকে বললেন যে,  আপনি যে SEO করার সময় যেই সব Keyword ব্যবহার করছেন, সেগুলোর ক্লিকের দাম কম, তাই আপনার ইনকাম ও কম। এবার আবার শুরু হল কি-ওয়ারড রিসার্চ। অবশেষে ১ মাস পর আমার এক্যাউন্ট এ দেখি ১১৩ ডলার ৮০ সেন্ট! হয়তো, অনেক কম টাকা কিন্তু একাউন্ট পাওয়ার ২ মাস পর ১১৩ ডলার আমার মত ছেলের জন্যে অনেক ছিল। অবশেষে গুগল আমার চেক ইস্যু করল। পাঠিয়ে দিল আমার আড়াই বছরের কষ্টার্জিত ১১৩ ডলার ৮০ সেন্ট!!!!

সময় এবার অপেক্ষার! কখন আসবে সেই চেক???

চেক আর আসেনা। সময় ও যেন কাটেনা। (কেন জানিনা এই সময়টায় আমি “সময় যেন কাটেনা” গানটা একটু বেশি শুনেছি) তাহের ভাইকে ফোন দেই আর বলি ভাই আমার চেক তো এলো না, তাহের ভাই বলে অপেক্ষা করেন, চলে আসেবে। শাকিল আরেফীন ভাইকেও ফোন দেই আর বলি ভাই আমার চেক তো এলো না, তাহের ভাই বলে অপেক্ষা করেন, চলে আসেবে। একই ভাবে ফোন দেই, Sowrdfish মাহবুব ভাইকেও। সবাই বলে অপেক্ষা করেন, চলে আসবে। আমিও তখন মনকে বুঝাই, অপেক্ষা কর, চলে আসবে!!!!!!!!!

অবশেষে এল স্বপ্নের সেই অ্যাডসেন্স চেক !!!!!!!!!!!!!!!!

২৭ দিন পর অফিসে এসে ডাকপিয়ন আমাকে গুগল এর চেক দিয়ে যায়। মনটা যে কি খুসি লাগছিল বুঝাতে পারবনা। ঠিক এখন আপনাদের কাছে যেমন লাগছে, আমার কাছে তার চেয়ে বেশি লেগেছি। আড়াই বছর চাষ করার পর আজ প্রথম আমি ফসল পেলাম। সাথে সাথে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম। টিটিকে জানাল, তাহের ভাইকে জানালাম, মাহবুব ভাইকে জানালাম, শাকিল আরেফিন ভাইকে জানালাম, সাব্বির আলাম (আসিফ পাগলা সাব্বির) ভাইকেও জানালাম। টেক্টিউন্স এর সবাইকে জানালাম। অন্য রকম একটা দিন উদযাপন করলাম। আর স্বপ্ন দেখতে লাগলাম প্রতি মাসে একটা করে গুগলের চেকের। (কে জানতে কয়দিন পর আমার উপর দিয়ে একটা ঝড় যাবে???)

আমার রিসেন্ট একটা এডসেন্স চেক

চেক ভাঙ্গাতে গিয়ে মহা বিপদঃ কোন ব্যাংকে ভাঙ্গাবোঃ

চেক ভাঙ্গাতে গিয়ে কি বিপদে পরেছি তা জানতে এখানে যান। অবশেষে যদি ও আমি ইসলামী ব্যাংক থেকেই চেক ভাঙ্গিয়েছি। সময় লেগেছে ২০ দিনের মত, টাকা কেটেছে প্রথম বার ১৬০২ টাকা। তবে পরের বার থেকে নাকি এত কাটবে না। সর্বোচ্চ ৬০০ কাটবে। প্রথম বার দেখে ওদের সিস্টেম এ কিছু ভুল ছিল। (এরপরের চেক ভাঙ্গাতে আমার ৩৬০০/= টাকা কেটে রেখেছিল। যেখানে কাটার কথা ছিল ৬০০ সেখানে কাটছে ৩৬০০ টাকা। পড়ে ব্যাঙ্কের হেডঅফিসে গিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ দেয়ার পর বর্তমানে মাত্র ১১৫/= টাকা কাটে)

“অতি লোভে তাঁতি নস্ট” মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছিঃ

তখন আমার দৈনিক ২ ডলারের কাছাকাছি ইনকাম হত। হটাত একদিন মাথায় দুষ্টু বুদ্দি চেপে বসলো। কি জানেন? IP Hide করে নিজের অ্যাড এ নিজে ক্লিক দেয়ার সিধান্ত। যেই ভাবা সেই কাজ। দিলাম আমার আই পি হাইড করে America র আইপি বানিয়ে। আর সাইটে গিয়ে দিলাম ৪ টা ক্লিক! ৩/৪ ঘন্টা পর দেখি আমার একাউন্ট এ জমা পরছে ২২ ডলার। মাথা নস্ট। এখন থেকে দৈনিক আইপি হাইড করে ক্লিক দেবো। হতাত, সন্দেহ হল যে আমার আইপি কি গুগল ধরতে পারবে? দিলাম গুগলে সার্চ “What is my real IP?”. ওমা! আমার তো দেখি আসল আই পি শো করছে!!!!! সাথে সাথে তাহের ভাইকে ফোন, ভাই এখন কি করবো? উনি প্রথমে ছোট ভাইয়ের মত ইচ্ছামত শাসালেন। আর বললেন পেজভিউ কত? বললাম যে ৩০০০ এর বেশি। উনি বললেন, যা করছে তা তো আর ফিরে পাওয়া জাবেনা, তবে জীবনে ও আর এই কাজ করেন না। আমি বললাম আচ্ছা। বিশ্বাস করুন, আমি আর জীবনে ও এই কাজ করিনি আর করবো ও না। শেষে দেখা যাবে, আম যাবে, ছালাও যাবে। তাই, এই সব বাদ ঠিক পথে ইনকাম শুরু করলাম। আর সবাইকে জানাতে লাগলাম যে, আমার সাইটে প্রচুর পরিমাণে বই পাওয়া যায়। এইসব করে ভিসিটর বশড়াতে লাগলাম। (কে জানত যে আমি ঠিক পথে থাকলেও, কিছু মানুষ ইতিমধ্যেই আমার ক্ষতি করা শুরু করছে??????)

লিঙ্ক শেয়ার করে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম!!

সামু তে একদিন গিয়ে দেখি এক জন হুমায়ুন আহমেদ এর বই খুঁজছে। বেচারার প্রতি সদয় হয়ে আমি আমার ওয়েব সাইটের লিঙ্কটা সামুতে শেয়ার করলাম। (নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম) তো, আমি ঘন্টাখানেক পড়ে আমার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট এ গিয়ে দেখি ক্লিক পরেছে ১৩০ টা!!!!!!!!!! ইনকাম হয়েছে ৪৫ ডলার!!!!!! কি? খুব খুসি লাগছে শুনে? না? আমার কপাল ভালো যে, আমি সেইদিন এত ইনকাম দেখে খুসি হতে পারিনি। যদি খুসি হতাম। তাহলে আমার একাউন্ট আর থাকতো না! কিচ্ছু বুঝতে পারছি কি করব? উপায় না সাইটই অফলাইনে নিয়ে গেলাম। এখন আবার চিন্তা সাইট যদি ভিসিট না হয়, তাহলে পেজভিউ বারবে না। পেজ CTR 15 এর উপরে। যেখান ১০ হলেই বিনা নোটিসে একাউন্ট ব্যান হয়, সেখানে ১৫!!!!!!!!!!!! ভাবা ঝায়???? আবার ফোন দিলাম তাহের ভাইকে (যেখানেই বিপদ, সেখানেই তাহের ভাই। আমার বিশ্বাস হয়না এই লোকটা এত হেল্পফুল কিভাবে হতে পারে তাও আবার নিস্বার্থভাবে) তিনি আমাকে বললেন, আপনার অ্যাডের কোডগুলো আপাতত ব্লক করে দেন। তাহলে পেজভিউ বারবে, কিন্তু কোন ক্লিক পরলে গুগল কাউন্ট করবে না। উনার কথামত অ্যাড কোড ব্লক করে দিলাম। কিছুক্ষন পর দেখি আমার পেজ CTR কমা শুরু হইছে। আর সেই ৪৫ ডলার মাইনাস হয়ে Real Income ৩ ডলার দেখাচ্ছে। (শালা কত্ত খারাপ! ৪৫ ডলার যখন দিছিলি, তখন মাইনাস করলি কেন?) অল্পের উপর দিয়ে বেঁচে গেলাম। তবে বিশ্বাস করুন, আমি এখন ভয়ে আছি সেই দিনের ঘটনার জন্যেই না আমার অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যায়! আমার জন্যে একটু দোয়া কইরেন।

এখন আমার কি অবস্থা????

উপরের লেখাটা লিখেছিলাম আজ থেকে প্রায় কয়েক মাস আগে। আর আমার বর্তমান অবস্থা জানতে বেশি কিছু লাগবে না শুধু আমার আজকের ইনকামের স্ক্রীনশটটা দেখুনঃ

earning

সবশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই তাহের চৌধুরী সুমন ভাই, মাসুদুর রশিদ ভাই ও ডেভসটিমের কাছে। যাদের সহযোগিতা না পেলে আজ আমি এতদুর আসতে পারতাম না। তাইতো আমি সব সময় আমার ফেসবুক প্রফাইলে এই মানুষটার (তাহের চৌধুরী সুমন) ছবিটা ঝুলিয়ে রেখেছি। আমি সব জায়গায় সুমন ভাইয়ের কথা স্মরণ করি। সুমন ভাই, আপনি শুধু আমাকে পথই দেখাননি, আমার জীবনের মোড়টাই ঘুরিয়ে দিয়েছেন। আই স্যালুট ইউ, ম্যান!!

কিছু বলার নাই। অনেক অনেকের কাছেই আকাশ ভাইয়ের এই টিউনটি আজও অনুপ্রেরণা। adsense sells point এর পক্ষ থেকে তাকে স্মরণ করছি।
অনেক দিন তার কোন দেখা পাই না। জানি না তিনি কেমন আছেন।

 

THE ADSESNE SELLS POINT (chip and quality band)

Level 0

আমি স্বল্পমূল্যে অ্যাডসেন্স বিক্রেতা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমার নতুন পোস্ট পেতে ভিসিট করুনঃ http://tech71blog.blogspot.com/ কম মুল্লে non-hosted অ্যাডসেন্স কিনতে যোগাযোগ করুন - https://www.facebook.com/The-Adsense-point-908104575949150/


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Adsense Account Kine Na Kono Lav Hoi Na. Kokhono Adsnese Account Kinben Na, Karon Adsense Approve Hoi Domain and site er other content er upor.

আমার সাইট এ Adsense কোড বসায় কিন্তু কোন এড ডিসপ্লে করেনা …। কারন টা কেও কি বলবেন প্লীজ … আমার সাইট http://www.shopingmol.com

ভাই আপনার স্কাইপ আইডি দেওয়া যাবে আপনার সাথে একটু কথা বলতাম। পারলে আমার ইমেইল আইডিতে সেন্ড করে একটু কস্ট করে। [email protected]

এত ডলার ইনকাম করে কি লাভ হইল ভাই, এখনও তো দেখতে গরিবই আছেন! 😛 কিছু মনে কইরেন না, ফাজলামি করলাম। যাই হোক অভিনন্দন।