কম্পিউটারের ভাষা বা প্রোগ্রামিং যিনি সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন, তিনি কার কাছ থেকে বা কোথা থেকে এটা শিখেছেন?

আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন যে প্রোগ্রামিং আবিষ্কার হয়েছিলো কম্পিউটার আবিস্কারের ও প্রায় ১০০ বছর আগে এবং তখন সময় এই অসাধ্য কাজটি করেছিলেন বিখ্যাত কবি লর্ড বায়রনের কন্যা অ্যাডা লাভলেস। তবে বিখ্যাত কবির মেয়ে হয়েও তিনি পিতার কোনো আদর যত্ন কিছুই পান নি। সাহিত্য চেতনায় উন্মাদ হয়ে বিখ্যাত কবি লর্ড বায়রন তাদের থেকে আলাদা হয়ে যান। এর পর তার মা ও তার থেকে আলাদা হয়ে যান। তখন অ্যাডা সম্পূর্ণ একা হয়ে গেলে তার নানী তার দায়িত্ব নেন। তখন অভিভাবক হীন অ্যাডার জীবন কাটে অনেক কষ্টে। মাধ্যমিক পাশ করার পর আরও সমস্যা বারে তখন ইংল্যান্ডে মেয়েদের বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার তেমন সু্যোগ ছিলো না। কিন্তু কবি লর্ড বায়রনের মেয়ে হওয়াতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন -তার যখন ১৭ বছর বয়স তখন তার জীবনের মোড় পাল্টে দেয়া ঘটনাটি ঘটে। তখন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের লুকেসিয়ান অধ্যাপক ছিলেন কম্পিউটারের জনক বলে পরিচিত চার্লস ব্যাবেজ (যে পদে একসময় আইজ্যাক নিউটন অধ্যাপনা করেছেন)। তিনি জ্ঞাত হন যে, বিখ্যাত কবি লর্ড বায়রন কন্যা অ্যাডা বায়রন গণিতে সকল শিক্ষার্থীর চেয়ে সেরা। সে সময় তিনি ‘ডিফারেন্স ইঞ্জিন’ নিয়ে কাজ করছিলেন। মেধাবী অ্যাডাকে নিজের গবেষণার সহযোগী হিসেবে পেতে তিনি অ্যাডা ও তার মাকে আমন্ত্রণ জানান ডিফারেন্স ইঞ্জিন দেখার জন্য। আর অ্যাডা? এই আমন্ত্রণ তার নিকট স্বর্গে যাবার আমন্ত্রণের সমতুল্য মনে হয়েছিল!

ব্যাবেজের এই আমন্ত্রণের সূত্রে মা-মেয়ের সম্পর্ক পূর্বের চেয়ে অনেক গাঢ় হয়ে ওঠে। ডিফারেন্স ইঞ্জিন দেখার পর উভয়ের মাথায় এর কর্মপদ্ধতি বোঝার ভূত চেপে বসে। বিভিন্ন যন্ত্রের কলাকৌশল বোঝার জন্য তারা বিভিন্ন কলকারখানায় যাতায়াত শুরু করেন। এর মধ্যে ‘জ্যাকার্ড লুম’ নামক একটি বস্ত্রবুনন যন্ত্র অ্যাডার জন্য অত্যন্ত সহায়ক হয়। এ যন্ত্রের কৌশলই তার ভবিষ্যৎ আবিষ্কারের পথ উন্মুক্ত করে দেয়। জ্যাকার্ড লুম যন্ত্রটি পরিচালিত হতো একপ্রকার পাঞ্চকার্ডের মাধ্যমে। যন্ত্রে নির্দিষ্ট রকমের পাঞ্চকার্ড প্রবেশ করালে নির্দিষ্ট ধরনের বয়ন পরিচালিত হতো। এ ব্যাপারটিকে তিনি যন্ত্রের প্রতি নির্দেশনা তথা ‘মেশিন কোড’ হিসেবে অভিহিত করেন। প্রোগ্রামিং এর ধারণা তখন থেকেই ঘুরতে থাকে পৃথিবীর প্রথম প্রোগ্রামারের মাথায়। কিন্তু কষ্টের হচ্ছে তিনি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কম্পিউটারের জনক না হলেও কিন্তু কম্পিউটার আবিষ্কারে তার অবদান অপরিসীম যা অনেকেই স্বীকার করতে চান না। এমনিতে উত্তর টি অনেক লম্বা হয়ে গিয়েছে, তাই আর কিছু লিখলাম না। ছবি টি অ্যাডা লাভলেস এর।

 

Level 0

আমি মোঃ সোলায়মান মাহমুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস